২৫ বছর ধরে বিনা বেতনে আজান দিচ্ছেন হাকিম মৃধা
চেহারায় বয়সের ছাপ স্পষ্ট। হাকিম মৃধার দাবি, তার বয়স ১০৫ বছর। এই বয়সে সাধারণত শরীরে রোগ-শোক বাসা বাঁধে। অনেকেরই এই বয়সে বিছানায় শুয়ে-বসে সময় কাটে। কিন্তু হাকিম মৃধা এখনও দৈনিক পাঁচবার মসজিদে আজান দেন। আর বিনা বেতনে এই কাজটি তিনি করছেন গত ২৫ বছর ধরে।
ঝালকাঠি জেলার নলছিটি পৌর এলাকার সারদল গ্রামের বাসিন্দা হাকিম মৃধার এই বয়সেও মসজিদে যেতে কারও সহায়তার প্রয়োজন হয় না। নিজেই হেঁটে হেঁটে যান, আজান দেন, এরপর জামাতে নামাজ আদায় করেন। এলাকার লোকজন তাকে ডাকেন বড়মিয়া মুয়াজ্জিন বলে।
এলাকাবাসী জানান, হাকিম মৃধা দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে সারদল তালুকদার বাড়ির সামনে আল আকসা জামে মসজিদে বিনা বেতনে মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বয়সের ভারে ঝুঁকে পড়লেও একাই হাঁটাচলা করেন তিনি। এখনও রোজা রাখেন। চশমা ছাড়াই তার দৃষ্টি এখনও স্পষ্ট। তিনি বর্তমানে ওই এলাকার সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তি বলেও এলাকাবাসী জানায়।
গ্রামে গিয়ে জানা গেছে, হাকিম মৃধার তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলের নাম ইউনুস মৃধা। তিনি পেশায় একজন জেলে। মেঝো ছেলে ইউসুফ কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। ছোট ছেলে খলিল পেশায় একজন দিনমজুর। ফলে পরিবারটিতে দরিদ্রতার তীব্র ছাপ রয়েছে। ছেলের ঘরের নাতি বাপ্পিকে হাকিম মিয়া বানিয়েছেন কুরআনের হাফেজ। মুয়াজ্জিন হাকিম মৃধার ইচ্ছা তার মৃত্যুর পর নাতি যেন ধর্মীয় কাজ চালিয়ে যায়।
মুয়াজ্জিন হাকিম মৃধা বলেন, ‘আগে কৃষি কাজ করতাম। তা দিয়ে কোনো রকমে চলতাম। এখন বয়সের ভারে তা পারছি না। এখন আল্লাহর ঘরে বেশির ভাগ সময় কাটে। অভাব অনটন থাকলেও আলহামদুলিল্লাহ সুখে আছি।’
মসজিদের ইমাম মাহাদী হাসান বলেন, ‘এ মসজিদের শুরু থেকেই আজান দেন হাকিম কাকা। সব সময় জামাতে নামাজ আদায় করার চেষ্টা করেন। বেশিরভাগ সময় মসজিদেই সময় কাটান। তিনি আমাদের এলাকার দৃষ্টান্ত।’
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)