অন্তর্বর্তী সরকারকে পূর্ণ সমর্থন যুক্তরাজ্যের
অন্তর্বর্তী সরকারকে নিজেদের পূর্ণ সমর্থনের কথা জানালেন যুক্তরাজ্যের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্য সরকার কয়েক বিলিয়ন ডলার পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টাসহ অন্যান্য বিষয়ে বাংলাদেশকে পূর্ণ সহায়তা দেবে। এটি আপনাকে জানানো গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা আপনাকে সমর্থন করছি।’
রোববার (১৭ নভেম্বর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানায়।
সাক্ষাৎকালে ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেন, ‘শেখ হাসিনার প্রায় ১৬ বছরের শাসনামলে বিদেশে পাচার হওয়া কয়েক বিলিয়ন ডলার ফেরত আনার জন্য ঢাকার প্রচেষ্টায় যুক্তরাজ্যও তার সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবে।’
এসময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, অলিগার্ক এবং আমলাদের দ্বারা পাচার করা অর্থ ফেরত আনা অন্তর্বর্তী সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’
সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের বরাতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বছরে ১২ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিদেশে পাচার হয়েছে।’
বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও নির্বাচন কমিশন ঠিক করতে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগের বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, ‘দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা এবং পূর্ববর্তী শাসনামলের ব্যাপক ভোট কারচুপির যে চর্চা সেটি দূর করাই এ সংস্কারের লক্ষ্য।’
পশ্চিমা দেশগুলো এসব সংস্কার সমর্থন করে জানিয়ে ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেন, ‘নির্বাচনী প্রক্রিয়া, বিচার বিভাগ এবং সাংবিধানিক সংস্কারের মূল দিকগুলোর ওপর প্রাণবন্ত আলোচনা দেখতে চায় ব্রিটেন। এ ক্ষেত্রে বিতর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী, সেসব অঞ্চলের বাংলাদেশি কমিউনিটি এবং বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সেবা ও সহায়তা প্রদানের জন্য যুক্তরাজ্যের অনুদান সহায়তা হিসেবে ১০ দশমিক ৩ মিলিয়ন পাউন্ড অনুদান দেওয়ার কথাও জানান তিনি।
এসময় অধ্যাপক ইউনূস মিয়ানমারে সহিংসতার শিকার রাখাইন সম্প্রদায়ের জন্য একটি ‘জাতিসংঘ-তত্ত্বাবধানে নিরাপদ অঞ্চল’ করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। যাতে তাদের সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে না হয় এবং দাতব্য সংস্থা এবং সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো তাদেরকে প্রয়োজনীয় খাদ্য ও সহায়তা আরও সহজে পৌঁছে দিতে পারে।
বৈঠকে ভূ-রাজনৈতিক সমস্যা, সংখ্যালঘুদের অধিকার, দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক এবং নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ৪০ মেগাওয়াট জ্বালানি চুক্তি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘জলবিদ্যুৎ সমৃদ্ধ নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আনার জন্য দক্ষিণ এশিয়ার বিদ্যুৎ গ্রিড তৈরিতে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘হিমালয়ের দুই দেশ থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি আমদানি করতে পারলে বাংলাদেশ জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে পারে। এ লক্ষ্যে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সহযোগিতা প্রয়োজন।’
বৈঠকে ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে গুরুতর আহত ছাত্র ও অন্যান্য বিক্ষোভকারীদের চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের একটি মেডিকেল টিম চলতি মাসে দেশে এসেছে। তারা দিনে তিনটি অস্ত্রোপচার করছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)