এতকিছুর পরেও সরছেন না বার্সা সভাপতি, কোপ অন্যদের ঘাড়ে


ফুটবলে দলগুলোর মধ্যে বড় বড় পরিবর্তন কখন আসে?
আসে তখনই, যখন দলের পারফরম্যান্স একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকে। যখন উন্নতির আর কোনো আশা দেখা যায় না। উন্নতির আশায় দরকার হয় পরিবর্তনের। জার্মানির কথাই ধরুন। ২০০৪ সালের ইউরোতে প্রথম রাউন্ডে বাদ পড়ে যাওয়ার পর জোয়াকিম লো’র অধীনে পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিল তাঁদের ফেডারেশন। ফলাফল? পরের দুই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলে জার্মানি, জেতে ২০১৪ বিশ্বকাপ।
রিয়াল মাদ্রিদ বা জুভেন্টাসের উদাহরণটাও কম চমকপ্রদ নয়। রাফায়েল বেনিতেজের অধীনে হতোদ্যম হয়ে পড়া রিয়াল মাদ্রিদ পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিল নিজেদের সাবেক খেলোয়াড় জিনেদিন জিদানকে সামনে রেখে। ফল? টানা তিন চ্যাম্পিয়নস লিগ। ম্যাচ পাতানো ও ফর্মহীনতায় তলানিতে ঠেকা জুভেন্টাস ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠেছিল আন্তোনিও কন্তের ছোঁয়ায়।
বার্সেলোনাও এখন অমনই এক তলানিতে। গত রাতে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে ৮-২ গোলে হেরে অবনতির নিম্নসীমায় পৌঁছেছে যেন ক্লাবটা। খুঁজছে পরিত্রাণের উপায়। কিন্তু সেই উপায়টা কী?
এক শ জন বার্সা সমর্থককে জিজ্ঞেস করলে অন্তত নব্বই জন চোখ বন্ধ করে বলবেন ক্লাব সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউর নাম। প্রশ্নবিদ্ধ দলবদল, দলবদলের পেছনে প্রয়োজনের চেয়েও বেশি খরচ করা, পারফর্ম না করা খেলোয়াড়কে মাসের পর মাস ধরে বাড়তি বেতন দিয়ে পুষে রাখা, বিক্রি না করা, দলের সবচেয়ে বড় তারকাকে অসন্তুষ্ট করে মিডিয়ায় এসে বারবার দোষারোপের খেলা খেলতে থাকা, নিজের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য মেসিসহ ক্লাবের সাবেক ও বর্তমান অনেকের নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুৎসা রটানো—বার্তোমেউর আমলে ‘কলঙ্কের’ শেষ নেই। বার্তোমেউর অপসারণ চান অধিকাংশ বার্সা সমর্থক। কিন্তু গত রাতে এমন অসহায়ের মতো ম্যাচ হারের পরেও বার্তোমেউর কথা শুনে মনে হয়েছে, নিজে ইস্তফা দেওয়ার চেয়ে অন্যদের বলির পাঁঠা বানাতেই বেশি আগ্রহী তিনি!
বার্তোমেউ ইঙ্গিতে জানিয়ে দিয়েছেন, এমনভাবে ম্যাচ হারার কারণে কয়েকজনকে নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, ‘অনেক বড় একটা পরাজয় এটা। আমি বায়ার্নকে শুভেচ্ছা জানাতে চাই, যারা অসাধারণ খেলেছে। ওরা সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা রাখে। আমরা আমাদের সেরাটা খেলতে পারিনি, এমনকি সেরার ধারের কাছ দিয়েও যেতে পারিনি। আজ একটা বিপর্যয় ছিল, আর এই বিপর্যয় থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমি এর মধ্যেই বেশ কিছু সিদ্ধান্তের কথা ভেবে রেখেছি। আমি সকল ভক্ত, সমর্থক, বোর্ড সদস্যের কাছে ক্ষমা চাইছি।’
তবে কাদের নিয়ে এমন ‘সিদ্ধান্ত’ নেওয়া হবে, সেটা উল্লেখ করেননি বার্তোমেউ, ‘আমি এখনই বলব না সিদ্ধান্তগুলো কী বা কাকে নিয়ে। কারণ এর মধ্যেই কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেছে, সামনে আরও কিছু নেওয়া হবে। আমরা কোন অবস্থায় আছি, সেটা বোঝার জন্য নিজেদের দিকে তাকাতে হবে। সামনের সপ্তাহ থেকে পরিবর্তনের জন্য সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করা শুরু হবে।’
বার্তোমেউ কারওর নাম না বললেও, কোচ কিকে সেতিয়েন যে এই পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় বলি হবেন, সেটা মোটামুটি নিশ্চিত। শুধু তা–ই নয়, বিখ্যাত ইতালিয়ান সাংবাদিক জিয়ানলুকা ডি মারজিও জানিয়েছেন, চাকরি হারাতে পারেন বার্সেলোনার দুই পরিচালক এরিক আবিদাল ও অস্কার গ্রাউ-ও। তবে বার্তোমেউ নিজে ইস্তফা দেবেন কি না, সে নিয়ে কোনো ইঙ্গিত এখনো পাওয়া যায়নি।
অথচ তাঁর অপসারণই সবার আগে চান বার্সা সমর্থকেরা!
সুত্র প্রথম আলো

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
