এবার স্ত্রী-মেয়েসহ সাবেক আইজিপি বেনজীরের বিও হিসাব অবরুদ্ধ
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী, বড় মেয়ে ও ছোট মেয়ের নামে থাকা সব বিও হিসাব (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করা হয়েছে।
তাদের বিও হিসাব অবরুদ্ধ করতে সোমবার (২৭ মে) সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডকে (সিডিবিএল) নির্দেশ দিয়েছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
আদালত থেকে বেনজীর আহমেদ এবং তার স্ত্রী জিশান মির্জা, বড় মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর এবং ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে বিভিন্ন সম্পত্তির দলিল, ঢাকায় ফ্ল্যাট ও কোম্পানির শেয়ার জব্দের (ক্রোক) নির্দেশ দেওয়ার পর পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা এ পদক্ষেপ নিলো।
গত ২৩ ও ২৬ মে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত বেনজীর আহমেদ এবং তার স্ত্রী জিশান মির্জা, বড় মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে বিভিন্ন সম্পত্তির দলিল, ঢাকায় ফ্ল্যাট ও কোম্পানির শেয়ার জব্দের নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, আইএফআইসি সিকিউরিটিজ লিমিটেড ও ড্রাগন সিকিউরিটিজ লিমিটেডে বেনজীর আহমেদের বিও হিসাব রয়েছে। এছাড়া সাউথইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল সার্ভিসেস লিমিটেড ও ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডে তার স্ত্রী জিশান মির্জা, ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডে তার বড় মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর এবং ডাইনেস্টি সিকিউরিটিজ লিমিটেডে ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে বিও হিসাব রয়েছে।
বিও হিসাব অবরুদ্ধকরণ প্রসঙ্গে বিএসইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কোর্টের সংশ্লিষ্ট আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ৫টি ব্রোকারেজ হাউজে ৬টি বিও হিসাব পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হলো। বিজ্ঞ আদালতের আদেশ মোতাবেক ওই হিসাবগুলোর ওপর অবরুদ্ধকরণ আদেশ কার্যকর থাকা অবস্থায় অবরুদ্ধ হিসাবসমূহ থেকে কোনো অবস্থাতেই অর্থ উত্তোলন করা যাবে না।
গত ২৬ মে সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদে, তার স্ত্রী, ও মেয়েদের নামে থাকা আরও ১১৯টি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেয় আদালত।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে— রাজধানীর গুলশানে ৪টি ফ্ল্যাট বাড়ি, সাভারের একটি জমি, বাকি ১১৪টি সম্পত্তি রয়েছে মাদারীপুর জেলায়। এর আগে গত ২৩ মে ৮৩টি দলিলের ক্রয়কৃত সম্পত্তি ক্রোক করা হয়। একই সঙ্গে ৩৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও তার সিকিউরিটিজের (শেয়ার) টাকা অবরুদ্ধ করা হয়।
এর আগে গত ৩১ মার্চ দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জিশান মির্জা এবং দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার পাশে বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচতারা হোটেল লা মেরিডিয়ানের রয়েছে দুই লাখ শেয়ার। পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠার সুবিশাল জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি। অথচ গত ৩৪ বছর ৭ মাসের দীর্ঘ চাকরি জীবনে বেনজীর আহমেদের বেতন-ভাতা বাবদ মোট আয় ১ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকার মতো হওয়ার কথা।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ এপ্রিল পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)