এস আলমের পোড়া চিনি পড়ছে কর্ণফুলীতে, মরছে মাছ
চট্টগ্রামে এস আলম এস আলম সুগার রিফাইন্ড মিলের গুদামের পোড়া চিনি ও কেমিক্যাল ড্রেন দিয়ে কর্ণফুলী নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে নদীটিতে মাছ মরে ভেসে উঠছে।
বুধবার বিকেলে কর্ণফুলী নদীর পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, পোড়া চিনি ও কেমিক্যাল নদীতে পড়ায় মাছ মরে ভেসে উঠছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জাল ও অন্যান্য জিনিস দিয়ে সে মাছ ধরছেন। টেংরা, পোয়া ও চিংড়িসহ নানা জাতের মরা মাছ ধরছেন তারা। নদীর প্রায় ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এভাবে মাছ ধরতে দেখা গেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিনির দাহ্য পদার্থ যখন ৩৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে থাকে তখন বিষাক্ত কেমিক্যালে রূপ নেয়। আর সেখানে পানি ছাড়া হলে অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন কার্বন তৈরি হয়। যার কারণে কারখানায় আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। সেই আগুনে অপরিশোধিত চিনি গলে এর লাভা নদীতে এসে পড়েছে। এতেই পানি দূষিত হয়ে মাছ মরছে।
এ বিষয়ে পরিবেশবিদ ড. ইদ্রিস আলী বলেন, ‘শিল্পকারখানা গড়ে তোলার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখা উচিত ছিল। তারা ডাম্পিংয়ের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রাখেনি। এ কারণে কারখানা থেকে পোড়া বর্জ্য পড়ছে কর্ণফুলী নদীতে। এতে নদীর পানি দূষিত হবে। ক্ষতি হবে মৎস্য সম্পদ এবং জীব-বৈচিত্র্য। পুড়ে যাওয়া সম্পদের ক্ষতি একসময় পোষাতে পারবে। পরিবেশের যে ক্ষতি হচ্ছে তা আর পূরণ হবে না। এ জন্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সজাগ হতে হবে।’
ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ হারুন পাশা এ আগুনের ব্যাপারে বলেছিলেন, সুগার মিলটিতে সব অপরিশোধিত চিনি ছিল। অপরিশোধিত চিনি মূলত কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের একটি যৌগ। কার্বন ও অক্সিজেন দুটোই আগুন জ্বলতে সহায়তা করে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে আগুন লাগা গুদাম পরিদর্শনে আসেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. সাইফুল আলম। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছেন যারা চিনির কারখানার আগুনকে পুঁজি করতে চান। তবে আমাদের কাছে ইতোমধ্যেই সরবরাহ করার জন্য চিনির পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে এগুলো ঠিক হয়ে যাবে।’
উল্লেখ্য, গত সোমবার বিকেল ৪টার দিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর ইছাপুর এলাকার একটি মিলে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রথমদিকে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি স্টেশনের ১৪টি ইউনিট। পরে তাদের সঙ্গে আগুন নেভাতে যোগ দেয় বিমান, নৌ ও সেনাবাহিনীর দলও।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)