গোলাগুলি আর মর্টার শেল বিস্ফোরণে কাঁপলো টেকনাফ সীমান্ত
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতের উত্তেজনা বান্দরবানের ঘুমধুম তুমব্রু থেকে সরে এবার টেকনাফের দিকে।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৫টা পর্যন্ত সীমান্তের কাছাকাছি এলাকা গোলাগুলি আর মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছে।
টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্ষ্যং উনছিপ্রাং এলাকার সঙ্গে মিয়ানমারের দূরত্ব মাত্র ২ কিলোমিটার। কাছাকাছি হওয়ায় মিয়ানমারে কী হচ্ছে তা অনেকটা খালি চোখেই দেখা যায়।
উনছিপ্রাং সীমান্তের স্থানীয়দের দাবি, ওপারে ঢেঁকিবুনিয়া এলাকায় মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ঘাঁটিগুলো দখল করে দক্ষিণ দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আরাকান আর্মি ও অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো। এই কারণে টেকনাফ অংশে মিয়ানমারের শহর শীলখালী, বলিবাজার ও কুইরখালী থেকে এসব বিস্ফোরণের শব্দ আসছে।
উনছিপ্রাং স্থানীয় বাসিন্দা কামরুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে আজ ভোর ৫টা পর্যন্ত সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় ভারী অস্ত্রের বিকট শব্দ শুনতে পেয়েছি। এই শব্দে এলাকা কেঁপে উঠছে। মনে হচ্ছে বজ্রপাত হচ্ছে। এরকম শব্দ জন্মের পরও শুনিনি।
আরেক বাসিন্দা বসত করিম বলেন, আমি চিংড়ি চাষি। মিয়ানমারের সীমান্তের কাছাকাছি বাংলাদেশ অংশে মাস্টারের প্যারা এলাকায় আমার চিংড়ি ঘের। মিয়ানমারে কী হচ্ছে হচ্ছে না সেটি খালি চোখে দেখা যায়। বিকেলের দিকে কালো পোষাক পরা মানুষের সঙ্গে মিয়ানমারের নাসাকা (বিজিপি) সঙ্গে গুলি বিনিময় হচ্ছে। কিছু মানুষ আমাদের সীমান্তে বিলার দ্বীপের দিকে আশ্রয় নিয়েছে। লাগাতার বোমা হামলা হচ্ছে। বোমার বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠছে এপার।
হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ আনুয়ারী বলেন, উনছিপ্রাং, কানজড়পাড়া, খারাংখালী ঝিমনখালী এলাকায় ভারী অস্ত্রের বিকট শব্দ শোনা যায়। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে সীমান্তের কাছাকাছি থাকা চিংড়ি চাষিরা। কয়েক দিন আগেও বসতঘরে গুলি এসে পড়ে। অল্পের জন্য জীবন রক্ষা পায়। শোনা যাচ্ছে শীলখালী, বলিবাজার ও কুইরখালী ঘাঁটি দখল নিতে বিদ্রোহীরা হামলা করছে।
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের উনঝিপ্রাং ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রশিদ আহমদ বলেন, সন্ধ্যা থেকে আজ ভোর পর্যন্ত সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের কয়েকটি এলাকায় ভারী অস্ত্রের বিকট শব্দ পাওয়া গেছে। এতে আমাদের এলাকা কেঁপে উঠছে।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে এখন পর্যন্ত দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি), মিয়ানমার সেনাবাহিনী, পুলিশ, ইমিগ্রেশন সদস্য ও অন্যান্য সংস্থার ৩ শতাধিক সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদের সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছে এবং আহতদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)