তীব্র দাবদাহ অব্যাহত, রেকর্ড ভাঙল ৭৬ বছরের
এখন দেশের বেশিরভাগ জেলায় তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস জনজীবন। এ অবস্থায় দেশের গত ৭৬ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে তাপপ্রবাহ। যা এপ্রিল মাসের দীর্ঘব্যপ্তিকাল বলছে আবহাওয়া অফিস। সারাদেশেই বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। এপ্রিলের শুরু থেকে শুরু হওয়া তীব্র গরম অনুভূত হওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক গণমাধ্যমকে বলেন, গতকাল পর্যন্ত হিসাবে চলতি মাসে ২৩ দিন তাপপ্রবাহ অব্যাহত ছিল এবং ১৯৪৮ সাল থেকে এক বছরে তাপপ্রবাহের দিনের রেকর্ড শুক্রবার ভাঙতে চলেছে।
টানা অন্তত দুদিন তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকলে তা তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করে আবহাওয়া অধিদফতর। ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করে আবহাওয়া অধিদফতর।
এদিকে শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ১১ শতাংশ।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুর ১২টায় এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশকিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ১৬ শতাংশ। বেলা ৩টায় তাপমাত্রা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৪ শতাংশ।
চলতি এপ্রিলে ২৪ দিন তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহী বিভাগে ১ এপ্রিল থেকে তাপপ্রবাহ শুরু হয়। ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বিভাগটির তাপমাত্রা ৩৬-৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়। এরপর ঢাকা, খুলনা ও রংপুর বিভাগে তাপমাত্রা বাড়ে এবং দুদিন তা অব্যাহত থাকে।
৮ এপ্রিল কক্সবাজার ও সীতাকুণ্ডে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। ৯ ও ১০ এপ্রিল সারাদেশে তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে ছিল। ১১ এপ্রিল থেকে উষ্ণতা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের গত ৪ এপ্রিলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ুবিদ ও আবহাওয়া ইতিহাসবিদ ম্যাক্সিমিলিয়ানো হেরেরার মতে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে একটি ‘ঐতিহাসিক তাপপ্রবাহ’ অনুভব করা হচ্ছে।
গত মাসে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা বলেছিল, ফেব্রুয়ারিতেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ‘প্রচণ্ড তাপ লক্ষ্য করা হয়’। কারণ সেই সময় তাপমাত্রা প্রায়ই ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠেছিল, যা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি।
রাজশাহী, পাবনা, চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে তাপপ্রবাহ তুলনামূলক বেশি। সম্প্রতি আবহাওয়া অধিদফতরের প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন’ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা-দুটোই বাড়লেও এর মধ্যে দ্রুত বাড়ছে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)