রবিবার, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরা, দেশ ও বিশ্বের সকল সংবাদ, সবার আগে

দালালের মাধ্যমে মালয়েশিয়া গিয়ে ক্যাম্পে বন্দি ৩শ যুবক

মেহেরপুর গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের যুবক তুহিন আলী। বিধবা মায়ের একমাত্র সন্তান তিনি। দেশে একটি কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। তুহিনের আয়ের ওপরই চলতো তার পরিবার।

সংসারের আর্থিক সচ্ছলতা আনতে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে স্থানীয় দালাল রাজুকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে ২ মাস আগে মালয়েশিয়া যান তুহিন। সাহেবনগর গ্রামের জাহিদের ছেলে আদম পাচারকারির দালাল রাজু তুহিনকে ভালো বেতনে কোম্পানিতে কাজ দেয়ার কথা বলে নিয়ে যান মালেশিয়ায়।

তুহিন আলী মোবাইল ফোনে বলেন, মালয়েশিয়া আসার পর কয়েকজন লোক তাকে নিয়ে যায় রাজধানীর কুয়ালালামপুরের সালাক সালাতান নামের একটি ক্যাম্পে। সেখানে আমার মতো তিন শতাধিক যুবক বন্দি রয়েছে। আমাকে ওই ক্যাম্পে থাকা অন্যান্য যুবকরা জানান, তারা ৫/৬ মাস আগে এখানে এসেছি। আমাদেরও এই ক্যাম্পে আটক রাখা হয়েছে।

তাদের মধ্যে অনেকেই এসব দালালের মাধ্যমে সহায় সম্বল বিক্রি করে চার মাস আগে মালয়েশিয়া গিয়েও আটকা পড়ে আছেন ওই ক্যাম্পে। তাদের বন্দি থাকা কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে।

তারা ভিডিও বার্তায় বলেন, আমরা বেশ কয়েক মাস যাবৎ এই ক্যাম্পে আটকা আছি। শুধু তুহিন নয়, এই ক্যাম্পে আটকা আছে। গাংনী উপজেলার কল্যাণপুর গ্রামের আজমত আলীর ছেলে লাঁলচাদ ইসলাম। তিনি সাহেবনগর গ্রামের আদম পাচারকারি সুরজ আলীর মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা দিয়ে ৩ মাস আগে গেছেন মালয়েশিয়াতে।
কাজিপুর গ্রামের গোলাম বাজার এলাকার বজলুর ছেলে মাজেদ মাস্টারের হাতে ৫ লাখ টাকা দিয়ে মালয়েশিয়া যান কাজিপুর গ্রামের কাদের হেলালের ছেলে আনারুল ইসলাম। তিনি জানান, মাজেদ মাস্টারের হাত ধরে এলাকার ৩ শতাধিক যুবক মালয়েশিয়া এসেছেন। সবার ভাগ্যে জুটেছে একই অবস্থা।

মোহাম্মদ পুর গ্রামের ইয়ারুল ইসলামের ছেলে জমিরুল ইসলাম মালয়েশিয়া গেছেন সাহেবনগর গ্রামের দালাল আব্দুল্লাহর মাধ্যমে। তার কাছ থেকে নিয়েছে ৫ লাখ টাকা। জমিরুল ইসলাম বলেন, প্রায় ৫ মাস আগে মালয়েশিয়াতে এলেও এখন পর্যন্ত কোনো কাজ দেয়নি। সাপ্লাই ভিসা দিয়ে এখন আটক রেখেছে এই ক্যাম্পে। আমরা এখানে মানবেতর জীবনযাপন করছি। এখানে খাওয়া নেই, পানি নেই। ছোট্ট রুমে গাঁদাগাদি করে রেখেছে। কিছু বললে হত্যার হুমকি দিচ্ছে।

মুজিবনগর উপজেলার পুরন্দরপুর গ্রামের বাহাদুর আলী বলেন, আমি গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের আদম পাচারের দালাল নাড়া মেম্বরের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা দিয়ে মালয়েশিয়া এসেছি। প্রায় ৪ মাস এই মানব ক্যাম্পে আটকা পড়ে আছি। আমরা খাওয়ার না খেয়ে মারা যাব। আবার বাড়িতেও ঋণের কিস্তি। কথা বললে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। শুধু তুহিন, বাহাদুর, আনারুল, জমিরুল বা লালচাদ ইসলাম নয়, ওই ক্যাম্পে আটকা পড়ে আছে প্রায় ৩ শতাধিক যুবক।

পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে জমিজমা বিক্রি করে, ঋণ-ধারদেনা করে দালালদের মাধ্যমে এসেছেন মালয়েশিয়ায়। একমাত্র সম্বল ভিটে মাটির বিক্রি করে তারা জনপ্রতি ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা তুলে দিয়েছেন। মালয়েশিয়া গেলেও আকামা (কাজের অনুমতিপত্র) না পাওয়ায় কর্মহীনভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

মালয়েশিয়ায় থাকা ভুক্তভোগীদের কয়েকজন জানান, স্থানীয় গাংনী উপজেলার সাহেবনগর গ্রামের কেএনএসএইচ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান শিক্ষক মাজেদ মাস্টার, কাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলাম ওরফে ন্যাড়া, বালিয়াঘাট গ্রামের আনিসুল হক মাস্টারের ছেলে শোভন, সাহেবনগর গ্রামের সুরজ ও তার ভাই আওয়াল এবং ইঞ্জিনিয়ার মুসা কলিমের মাধ্যমে ঢাকায় নাভিরা ও মুসাকলি এন্টারপ্রাইজ এজেন্সির মাধ্যমে টাকা দিয়ে ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়। গেল ৩-৬ মাসেও দালাল চক্রের সদস্যরা কোন কাজ দিতে পারেনি। দালাল চক্রের পক্ষ থেকে প্রথমে খাবার ও পানি দেওয়া হলেও এখন তা বন্ধ করে দিয়ে টাকা দাবি করা হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি।

মালয়েশিয়াতে আটকে থাকা একাধিক ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে কেউ দিয়েছেন জমি বন্ধক রেখে, কেউ সুদের উপরে টাকা নিয়ে, কেউ বা তুলেছেন ঋণের কিস্তি। এখন যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি তারা বাড়ির উপর এসে টাকা নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে।

কাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফারুক আহমেদ জানান, আমার এলাকার অনেক যুবক দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন। তিন মাস যাবত কাজ না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আমরা তাদের পরিবারের পাশে আছি সব সময়।

দালাল চক্রের সদস্য সাহেবনগর গ্রামের বাবলু জানান, আমি চার জনের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা করে নিয়ে মুছা এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে মালয়েশিয়া পাঠিয়েছি। ৩/৪ মাস পাঠানো হলেও আমার লোকজনকে কোনো কাজ দেইনি এজেন্সি মুসা এন্টারপ্রাইজ। আজকে আমি তাদের খাবারের জন্য পাঁচ হাজার করে টাকা পাঠিয়েছি।

মানব পাচারকারী আলোচিত দালাল গাংনী উপজেলার সাহেব নগর গ্রামের সুরুজ আলীর মোবাইলে কল করা হলে মোবাইল বন্ধ পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। মানব পাচারকারী এজেন্সি মুছা এন্টারপ্রাইজের মালিক আবু মুছার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রীতম সাহা বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা থানায় অথবা আমার নিকট অভিযোগ করলে দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মেহেরপুর পুলিশ সুপার এস এম নাজমুল হক বলেন, আমরা প্রাইমারি ইনভেস্টিগেশন শুরু করেছি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মেহেরপুর জেলা প্রশাসক শামীম হাসান বলেন, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। ভুক্তভোগী সবাইকে থানায় মামলা করতে বলা হয়েছে। এ বিয়ে কোনো মানব পাচারকারীকে ছাড় দেওয়া হবে না।
সূত্র: ঢাকা পোস্ট

একই রকম সংবাদ সমূহ

জাকসুর ২৫টি পদের ২০টিই শিবিরের দখলে, অন্য দলের বিজয়ী হলেন যারা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা শেষ হয়েছে। এরবিস্তারিত পড়ুন

জাকসুর ভিপি জিতু, জিএস মাজহারুল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (জাকসু) দশম ভিপি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্রবিস্তারিত পড়ুন

জাকসু কেন্দ্রীয় সংসদে বিজয়ী হলেন যারা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতেবিস্তারিত পড়ুন

  • জাকসুর হল সংসদে ভিপি-জিএস হলেন যারা
  • রাজনৈতিক মতভেদ থাকলেও ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য ধরে রাখতে হবে : সালাহউদ্দিন আহমদ
  • দুর্গাপূজায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১২ দিন, সরকারি চাকরিজীবীরা পাচ্ছেন টানা ৪ দিনের ছুটি
  • দেশে অন্তত ৩টি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে, কিন্তু পরাজিতরা মেনে নেয়নি: আলী রীয়াজ
  • ‘সরকার-উপদেষ্টারা মাহফুজদের ব্যবহার করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে’ : নাহিদ ইসলাম
  • পাঁচ বছরেই দেশকে সোনার খনিতে রূপান্তর করা সম্ভব: উপদেষ্টা বশিরউদ্দীন
  • আ.লীগ নিষিদ্ধ হলেও তাদের ভোটের অধিকার নিষিদ্ধ নয়: উপদেষ্টা ফাওজুল
  • সপ্তাহে ২ দিন হাসপাতালে যেতে পারবেন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা
  • নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কিকে ড. ইউনূসের অভিনন্দন
  • পুলিশের সাবেক ডিআইজি নাহিদুল ইসলাম গ্রেপ্তার
  • ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন: প্রেস সচিব
  • সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো বাড়লো