দেশ-বিদেশের সব স্বৈরাচারের নিষ্ঠুরতাকে হার মানিয়েছে সরকার: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারি চাকরিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর সরকারদলীয় সন্ত্রাসী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে হামলা চালিয়ে ইতিহাসে হতাহতের যে বর্বরোচিত নজীর স্থাপন করেছে, তা দেশ-বিদেশের সকল স্বৈরাচারের নির্মম নিষ্ঠুরতাকেও হার মানিয়েছে।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, একটি স্বাধীন দেশে সরকারের দায়িত্ব হলো- রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। গত কিছুদিন ধরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা যখন যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলনরত, সেই মুহূর্তে সরকারপ্রধানসহ সরকারি দলের নেতা-মন্ত্রীরা তাদেরকে তাচ্ছিল্য করে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নির্দেশ দেয় তাদেরকে নির্মূল করার। সরকারি দলের সন্ত্রাসী এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যৌথভাবে জনগণের টাকার কেনা গুলি, টিয়ারসেল, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদেরকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপের মাধ্যমে শত শত নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীকে গণহারে হত্যা এবং হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীকে আহত করেছে। এটি দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী অবলক্ষণ করেছে।
তিনি বলেন, এই নির্মম অত্যাচারে দেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ হতবাক ও ক্ষুদ্ধ হয়েছে এবং কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিএনপিও একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে নৈতিক সমর্থন দিয়েছে এবং সারাদেশে কর্মসূচিও পালন করেছে। কিন্তু অবৈধ সরকার মরিয়া হয়ে রাষ্ট্রের সকল বাহিনীসহ দলীয় সন্ত্রাসীদেরকে সাধারণ মানুষ, বিএনপি নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে ব্লক রেড দিয়ে গ্রেপ্তার করছে। এখন পর্যন্ত তাদের হিসাবে প্রায় ৩ হাজার গ্রেপ্তার করছে, যা জাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জার।
ছাত্র-জনতার ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে দমন করার জন্য সেনাবাহিনীকে ব্যবহার কখনোই গ্রহণযোগ্য নয় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, অবিলম্বে সান্ধ্য আইন প্রত্যাহার এবং সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। বরাবরই আওয়ামী লীগ লাশের উপর দিয়ে ক্ষমতায় গিয়েছে এবং ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য গত কয়কদিন যে পরিমাণ নিরীহ ছাত্র-মানুষকে গুলি চালিয়ে পাখির মতো হত্যা করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে- তা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কথাই মনে করিয়ে দেয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত কয়েকদিনে কতজন নিরীহ মানুষকে হত্যা ও পঙ্গু করা হয়েছে, জনগণ তার সঠিক পরিসংখ্যান জানতে চায়। এছাড়া জনগণের টাকায় কেনা কি পরিমাণ গোলাবারুদ, টিয়ার সেল, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যবহার করা হয়েছে, তার হিসাবও জনগণ জানতে চায়। রাষ্ট্রের টাকায় কেনা হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ হত্যার জবাব জনগণ একদিন কড়ায়-গন্ডায় আদায় করে নিবে।
তিনি আরও বলেন, যে সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য নির্মমভাবে নিরীহ মানুষকে হত্যা করতে পারে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও স্থাপনার নিরাপত্তা দিতে পারে না, সেই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। তাই এই অবৈধ সরকারকে বলবো- অবিলম্বে পদত্যাগ করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করার লক্ষ্যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা নিন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)