নড়াইলের মধুমতি নদীতে নৌকাবাইচ দেখতে দুই পাড়ে দুই জেলার মানুষের উপচেপড়া ভিড়
নড়াইলের মধুমতি নদীতে নৌকাবাইচ দেখতে দুই পাড়ে দুই জেলার মানুষের উপচেপড়া ভিড়। আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ দেখতে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনায় মধুমতি নদীর দুই পাড়ে দুই জেলার মানুষের উপচেপড়া ভিড় জমেছিলো।
উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ও গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার চরভাটপাড়াসহ নদীর দুপাড়ের কয়েকটি গ্রামের মানুষের যেন মিলন মেলায় রূপ নিয়েছিলো নৌকাবাইচের এই অনুষ্ঠান।
গতকাল বিকেল জুড়ে নির্মল আনন্দ উপভোগ করেছেন দুই পাড়ের মানুষ। নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে, আবার নদীতে নৌকা ও ট্রলারে ঘুরে ঘুরে নৌকাবাইচ উপভোগ করেছেন শত শত মানুষ।
প্রতিযোগিতায় নড়াইল, মাগুরা ও মাদারীপুর জেলার ৫টি নৌকা অংশগ্রহণ করে। ইতনার আতোষপাড়া থেকে শুরু হয়ে জয়বাংলার খেয়াঘাট পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার কালু ফকিরের নৌকা, দ্বিতীয় হয়েছে মাগুরার কালিশংকরপুরের কবির হোসেনের নৌকা এবং তৃতীয় হয়েছে মাদারীপুরের বাহের আলী নৌকা।
প্রথম বিজয়ী নৌকাকে একটি ফ্রিজ, দ্বিতয়ি বিজয়ী নৌকাকে ৩২ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন এবং তৃতীয় বিজয়ী নৌকার মালিককে ২৪ ইঞ্চি একটি এলইডি টেলিভিশন পুরষ্কার দেওয়া হয়। পুরষ্কার বিতরণ করেন নৌকা বাইচ উদযাপন কমিটির আহবায়ক ব্যবসায়ী মোঃ ইকবাল হোসেন, ইতনা ইউনিয়ন বিট পুলিশের কর্মকর্তা এস, আই মিজানুর রহমান, নৌকা বাইচ উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব মোঃ বকুল মুন্সী সহ অনেকে।
এদিকে নদীর দুপাড়ে নড়াইল গোপালগঞ্জ জেলার হাজার হাজার দর্শক প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন। দীর্ঘদিন পর এমন আয়োজনে খুশি দুইপাড়ের নানা বয়সী মানুষ। নৌকা বাইচের পাশাপাশি গ্রামীণ সকল খেলাধুলা আয়োজনের দাবি করেছেন আগত দর্শনার্থীদের অনেকেই।
নৌকা বাইচকে ঘিরে নানা রকম মিষ্টির সমাহার নিয়ে বেশ কিছু মিষ্টির দোকানে ব্যাপক ভীড় জমে। এছাড়াও বিভিন্ন পন্যের শতাধিক দোকানে জমজমাট বিক্রি হয়েছে বলে দর্শনার্থীরা জানান।
নৌকা বাইচ উদযাপন কমিটির আহবায়ক মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন,‘ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা ইতনা গ্রামে দীর্ঘদিন পর এবছর থেকে শুরু করা হলো। ১৯৭৪ সালের দিকে পর পর চার বছর নৌকা বাইচ হয়েছিলো। পরবর্তীতে আর নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়নি।
তাছাড়া ফেসবুক, ইউটিউব, মোবাইল গেম, আকাশ সংস্কৃতি সহ নানা কারনে বর্তমান সময়ে ঐতিহ্যবাহী এসব খেলাধুলা বিলুপ্তির পথে। তরুন সমাজ সহ মানুষের মাঝে কিছুটা হলেও সুস্থ্য বিনোদন দিতে আমাদের এই আয়োজন। আশা করি আগামী বছর থেকে বৃহৎ পরিসরে নৌকা বাইচের আয়োজন করা হবে। এসজন্য সরকারী পৃষ্ঠপোকতা পেলে ভালো হয়।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)