নড়াইলে শিশু নুসরাত হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন! আসামি গ্রেফতার
উজ্জ্বল রায়, নড়াইল: নড়াইলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিশু নুসরাত হত্যার রহস্য উদঘাটন আসামি গ্রেফতার।
গত (২৭ ফেব্রুয়ারী নড়াইলের লোহাগড়া থানাধীন গিলাতলা গ্রামের তিন বছরের শিশু নুসরাত জাহান রোজাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার সংবাদের ভিত্তিতে লোহাগড়া থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
পুলিশ শিশু নুসরাত জাহান রোজা (৩) এর লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করেন। নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার মোহাঃ মেহেদী হাসান হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন এবং আসামি গ্রেফতার করার জন্য তারেক আল মেহেদী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) এবং মোঃ দোলন মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল)’দের নির্দেশ প্রদান করেন।
যার প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ কাঞ্চন কুমার রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহ করেন। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভিকটিম নুসরাত জাহান রোজার সৎ মা জোবাইদা বেগমকে লোহাগড়া থানায় নেওয়া হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ভিকটিম নুসরাতের সৎ মা জোবাইদা বেগম নিজের দোষ স্বীকার করেন।
এই ঘটনায় ভিকটিম শিশু নুসরাত জাহান রোজা (৩) এর দাদা আবুল খায়ের কাজী (৫০) বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় ভিকটিমের সৎ মা জোবাইদা বেগম (১৯) কে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামি জোবাইদা বেগম জানায়, ২০২১ সালে তার ফুফাতো ভাই সজীব কাজীর সাথে তার বিবাহ হয়। সজীব কাজীর আগের ঘরে এক ছেলে ইয়াসিন কাজী ও এক মেয়ে নুসরাত জাহান রোজা আছে জেনেও তিনি বিবাহ করেন। বিবাহের প্রথম থেকেই ছেলে ইয়াসিনের প্রতি যতটা মমত্ববোধ ছিল মেয়ে নুসরাতের প্রতি ততটা ছিল না।
দুই ভাই-বোন প্রতিদিন ঝগড়া করতো। ইয়াসিন বয়সে বড় হলেও তিনি নুসরাতকে বেশি শাসন করতেন। সকাল ১১.৩০ ঘটিকার সময় ইয়াসিন ও নুসরাতের মাঝে ঝগড়া লাগে। ইয়াসিন নুসরাতকে হাত দিয়ে আঘাত করলে নুসরাত কান্না করতে থাকে। তখন পাষন্ড মা জোবাইদা বেগম তার কান্না থামাতে নুসরাতের মুখ চেপে ধরে।
নুসরাতের নাক-মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে পারে না। এক পর্যায়ে নুসরাত চোখ বড় বড় করে উপর দিকে তাকায় এবং হাত-পা ঝাকাতে থাকে। তবু পাষন্ড মা তার নাক-মুখ চেপে ধরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। তারপর জোবাইদা বেগম শিশু নুসরাতকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে কাঁথা দিয়ে ঢেকে নিজের দোষ আড়াল করতে ঘর থেকে বের হয়ে আসে।
পরবর্তীতে ভিকটিমের দাদা আবুল খায়ের কাজী বাড়িতে এসে নুসরাতকে গোসল করার জন্য ডাকতে থাকে। নুসরাত কোন সারা শব্দ না করায় তার দাদী ঘরে যেয়ে তাকে ডাকে এবং কোলে নিয়ে দেখে নুসরাত নিস্তেজ হয়ে আছে এবং মারা গেছে।
গ্রেফতারকৃত আসামি জোবাইদা বেগম (১৯) নড়াইল জেলার লোহাগড়া থানার গিলাতলা গ্রামের সজীব কাজীর ২য় স্ত্রী ও ভিকটিম শিশু নুসরাত জাহান রোজা (৩) এর সৎ মা। আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি বিজ্ঞ আদালতে ঘটনার সত্যতা (শ্বাসরোধে হত্যা করেছে) স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)