নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাস পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে ভারতের কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপির বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার।
রাজ্য সরকারের বক্তব্য- বিজেপির সাসপেন্ডেড নেত্রীর বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে।
সোমবার রাজ্য বিধানসভায় নূপুরের বিরুদ্ধে এ নিন্দা প্রস্তাব পাস হয়। এ প্রস্তাব পাস করেন রাজ্যটির শিল্পমন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি।
পার্থ চ্যাটার্জি বলেন, প্রস্তাবে বলা হয়- ‘মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে এ রাজ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখার চেষ্টা চলছে। তবে সারা দেশে যেভাবে সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা হয়েছে, এর মূল লক্ষ্য হলো কর্মসংস্থান ও উন্নয়ন থেকে নজর ঘোরানো।
ধর্মের নামে বিজেপির এক নেত্রীর মন্তব্যের জেরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা চলছে। এর বিরুদ্ধে অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।’
এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সব বিধায়ককে আবেদন জানান তাঁরা যেন সবাই মিলে এ প্রস্তাব সমর্থন করেন। এর পরই এ নিন্দাসূচক প্রস্তাবটি বিধানসভায় পাস হয়। যদিও এ সময় বিরোধী দল বিজেপির বিধায়করা হট্টগোল শুরু করে দেন। একসময় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে অধিবেশন ওয়াকআউট করে বিজেপি।
এদিন অধিবেশন চলাকালে আলোচনায় উঠে আসে নূপুর শর্মা প্রসঙ্গ। এ ইস্যুতে বিজেপির বিরুদ্ধে উসকানি ও ঘৃণার রাজনীতি করার অভিযোগ তোলেন মমতা। সেই সঙ্গে তিনি বলেন ‘এ ইস্যুতে রাজ্যে যেখানে যেখানে সহিংসতার চেহারা নিয়েছে রাজ্য সরকার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু ওই নারী (নূপুর) এখনো গ্রেফতার হলেন না কেন? আমি জানি যে তিনি কখনই গ্রেফতার হবেন না। আজকেই তার কলকাতা পুলিশের সামনে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু কলকাতা পুলিশের কাছ থেকে তিনি চার সপ্তাহ সময় চেয়েছেন।’
প্রসঙ্গত, মহানবী বিতর্ক ইস্যুতে কলকাতার নারকেলডাঙা থানায় এফআইআর করেছিলেন এক ব্যক্তি। তারই ভিত্তিতে ১৩ জুন নূপুরের বিরুদ্ধে সমন জারি করে নারকেলডাঙা থানা এবং গতকাল থানায় হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল নূপুর শর্মাকে। যদিও নিরাপত্তার বিষয় তুলে ইমেল মাধ্যমে অতিরিক্ত চার সপ্তাহ সময় চেয়েছেন নূপুর শর্মা।
উল্লেখ্য, কয়েকদন আগে ভারতের এক টেলিভিশন শোতে মহানবী ও তাঁর স্ত্রী আয়েশাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছিল নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে। এরপর তাকে সমর্থন করে টুইট করে বিতর্ক ছড়িয়েছিলেন দলের আরেক মুখপাত্র নবীন জিন্দাল। ওই ইস্যুতে ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়ে নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়। এর পরই তড়িঘড়ি নূপুর শর্মা ও নবীন জিন্দালকে ছয় বছরের জন্য দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়।
এ ইস্যুতে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর প্রদেশ, গুজরাত, রাজস্থান, দিল্লিসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে লাগাতার প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, আন্দোলনে অংশ নেয় মুসলিম সংগঠনগুলো। কোথাও কোথাও তা সহিংসতার রূপ নেয়। নূপুর শর্মা ও নবীন জিন্দালের গ্রেফতার দাবি জানান মমতা ব্যানার্জিও। আবার উল্টো ছবিও দেখা যায়, নূপুরের সমর্থনে রাস্তায় নামেন একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ও দলের সংসদ সদস্যরা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)