রবিবার, মে ৪, ২০২৫

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরা, দেশ ও বিশ্বের সকল সংবাদ, সবার আগে

সড়ক নিরাপত্তার বেশির ভাগ নির্দেশনা শুধুই কাগজে-কলমে

সরকারের নির্দেশনা ছিল, দূরপাল্লার পথে প্রতিটি যানবাহনে দুজন করে চালক থাকতে হবে। বিশ্রামের জন্য মহাসড়কের পাশে নির্মাণ করতে হবে বিশ্রামাগার। এরপর দুই বছরের বেশি পেরিয়ে গেছে। এর কোনোটাই বাস্তবায়িত হয়নি।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে ২০১৮ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামার আগেই সড়ক প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে। একের পর এক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বাড়ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই বছরের ২৫ জুন মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় পাঁচটি নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

শুধু তা–ই নয়, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামলে সারা দেশ অচল হয়ে পড়ে। তখন সড়কে শৃঙ্খলা আনতে এবং দুর্ঘটনা হ্রাসে প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন মুখ্য সচিবের নজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট দপ্তরপ্রধানদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হয়। এসব বৈঠক থেকে ৩৩টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। যার বেশির ভাগই সড়ক পরিবহন ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন এবং পুলিশের বাস্তবায়ন করার কথা। দুই বছর পর এসব নির্দেশনারও বেশির ভাগ কাগজে-কলমেই রয়ে গেছে।

শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের কারণে অনেক শিক্ষার্থী এখনো মামলার হয়রানি পোহাচ্ছে। ওই আন্দোলনে মার খেয়েছে শিক্ষার্থী, সাংবাদিকসহ অনেকেই। এরপর সরকার তড়িগড়ি করে দুর্ঘটনার শাস্তি বাড়িয়ে সড়ক আইন পাস করে। কিন্তু পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে দুই বছরেও সেটি পুরোপুরি কার্যকর করতে পারেনি সরকার। এখন সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের প্রাণহানির মামলাও হচ্ছে না।

করোনা পরিস্থিতির কারণে সড়কে যান ও মানুষের চলাচল দুটোই কমে গেছে। কিন্তু দুর্ঘটনায় প্রাণহানি চলছেই। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে ২৬ জুলাই থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত ঈদযাত্রায় ২০১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৪২ জন প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে ৩৩১ জন। বেসরকারি হিসাবে প্রতিবছর গড়ে আট হাজার মানুষ সড়কে মারা যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা
২০১৮ সালের ২৫ জুন মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেসব নির্দেশনা দিয়েছিলেন, এগুলো হচ্ছে—

এক. দূরপাল্লার পথে বিকল্প চালক রাখতে হবে, যাতে একজন চালককে টানা পাঁচ ঘণ্টার বেশি যানবাহন না চালাতে হয়।

দুই. নির্দিষ্ট দূরত্বে সার্ভিস সেন্টার বা চালকদের জন্য বিশ্রামাগার নির্মাণ করতে হবে।

তিন. যানবাহনের চালক ও তাঁর সহকারীকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

চার. সংকেত মেনে পথচারী পারাপারে জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার করা বা অবৈধভাবে রাস্তা পারাপার বন্ধ করা।

পাঁচ. চলন্ত যানে চালক ও যাত্রীদের সিটবেল্ট বাঁধা নিশ্চিত করা।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার প্রায় সবগুলোই সড়ক পরিবহন আইনে আছে। আইনে বলা আছে, কোনো চালক একটানা পাঁচ ঘণ্টার বেশি যানবাহন চালাতে পারবেন না। এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে দিনে সর্বোচ্চ আট ঘণ্টা গাড়ি চালাতে পারবেন তিনি। কিন্তু রাজধানী ঢাকার চালকেরা ফজরের আজানের পর শুরু করে রাত ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত গাড়ি চালিয়ে থাকেন। আন্তজেলায় চলাচলকারী ট্রাকগুলো অনেক সময় দুই-তিন দিন টানা রাস্তায় থাকে। ফলে চালকেরা ক্লান্ত হয়ে পড়েন এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও আইনের বাধ্যবাধকতা—কোনো কিছুই অবস্থার বদল করতে পারেনি। বিশেষ করে দূরের যাত্রায় দুজন চালক রাখার নিয়ম কেউ মানছে না। বিষয়টি নিশ্চিত করার দায়িত্ব পুলিশ ও বিআরটিএর। কিন্তু তাঁরা এই অপরাধে কাউকে মামলা-জরিমানা করেছে, এমন নজির পাওয়া যায় না।

সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, বর্তমানে দেশে যানবাহন আছে ৪৪ লাখ। আর চালক আছেন সাকল্যে ৩২ লাখ। ১৪ লাখ যানবাহন চলছে ভুয়া চালকে। অর্থাৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থা যানবাহনের নিবন্ধন দিয়ে গেছে অবাধে। কিন্তু এসব যান কে চালাবেন, সেটা নিশ্চিত করেনি। এ ছাড়া পরিবহনমালিকদের মধ্যেও অতি মুনাফালোভের কারণে বাড়তি চালক রাখতে চান না।

জানতে চাইলে পরিবহনমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, দক্ষ চালকের ব্যাপক অভাব। চাইলেও তাঁরা বাড়তি চালক পাচ্ছেন না। বড় কোম্পানিগুলো চালকদের এক দিন চালানোর পর আরেক দিন বিশ্রাম দেয়।

সড়ক দুর্ঘটনার পর মামলা হলে পুলিশ দুর্ঘটনার পেছনের দায়ী চিহ্নিত করার পাশাপাশি ৬০ ধরনের তথ্য সংরক্ষণ করে। এসব তথ্য পরে বিশ্লেষণ করে গবেষণা করে বাংলাদেশে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট (এআরআই)।
সংস্থাটির ১৯৯৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তথ্যের বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, ৯০ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনার পেছনে কোনো না কোনোভাবে চালক দায়ী। এ জন্যই চালককে নির্ভার, ক্লান্তিহীন রাখা এবং চালকের প্রশিক্ষণের বিষয়টিতে জোর দেন বিশেষজ্ঞরা।

মহাসড়কের পাশে বিশ্রামাগার নির্মাণের নির্দেশনা এই বিবেচনা থেকেই নেওয়া। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) গত বছরের আগস্টে ২২৬ কোটি টাকায় চারটি মহাসড়কে বিশ্রামাগার নির্মাণে একটি প্রকল্প নিয়েছে। প্রকল্পটি গত জুনেই কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু এখনো তা নির্মাণ হয়নি।
এই বিষয়ে সওজের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পরিকল্পনা) মনির হোসেন পাঠান প্রথম আলোকে বলেন, কিছু বিশ্রামাগার সওজের নিজের জায়গায় হবে। আর কিছু জমি অধিগ্রহণের আদেশ পাওয়া গেছে। এটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প। এখন দ্রুত কাজ এগিয়ে যাবে।

এ ছাড়া চালকদের জন্য নামকাওয়াস্তে বিআরটিএ কিছু সাইন-সিগন্যালের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। কিন্তু বনিয়াদি প্রশিক্ষণ হয় না। চালকের সিটবেল্ট বাঁধার বিষয়টিও সেভাবে কেউ দেখভাল করে না। মহাসড়ক বা সড়কে পর্যাপ্ত সাইন-সংকেতই নেই। সওজের এক হিসাবে এসেছে, ৬১ শতাংশ গুরুত্বপূর্ণ সড়কে কোনো সাইন-সংকেত নেই। সেগুলো বসাতে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। তবে অগ্রগতি খুবই সামান্য।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দফায় দফায় বৈঠক, নির্দেশনা
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তৎকালীন মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে যে ৩৩টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি নির্দেশনা শুরুতে কিছুদিন মানা হয়। এরপরই সব আগের জায়গায় চলে গেছে।

ঢাকা শহরে সব গণপরিবহন, বিশেষ করে বাস চলাচলের সময় গাড়ির মূল দরজা বন্ধ রাখা এবং বাস স্টপেজ ছাড়া যাত্রী ওঠা-নামা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তটি ঢাকা মহানগর পুলিশ ও বিআরটিএ বাস্তবায়ন করার কথা। ছাত্র আন্দোলনের পর কিছুদিন বাসের দরজা বন্ধ রাখা হয়েছিল। যাত্রীও তোলা হতো স্টপেজ মেনে। কিন্তু মাস তিনেক না যেতেই সব হারিয়ে গেছে। এখন এখন দরজা খুলে রেখে যেখানে–সেখানে যাত্রী তোলা হচ্ছে অবাধে।

এ ছাড়া গণপরিবহনে (বিশেষ করে বাস) দৃশ্যমান দুটি স্থানে চালক ও সহকারীর ছবিসহ নাম এবং চালকের লাইসেন্স নম্বর, মোবাইল নম্বর প্রদর্শনের ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হয়েছিল। এটা এক দিনের জন্যও কার্যকর করা যায়নি।

সব মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীকে (সর্বোচ্চ দুজন আরোহী) বাধ্যতামূলক হেলমেট পরতে হবে এবং সিগন্যালসহ ট্রাফিক আইন মানতে বাধ্য করার কথা বলা হয়েছিল।
এই একটি সিদ্ধান্ত অনেকাংশেই নিশ্চিত হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা মহানগর পুলিশ ও বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত এ ব্যাপারে বেশ কড়াকড়ি আরোপ করে। এ ছাড়া রাইড শেয়ারিং সেবায় চলাচলকারী মোটরসাইকেলগুলোর চালক ও যাত্রীদের হেলমেট পরার বিষয়টি চুক্তির অন্তর্ভুক্ত। এ জন্য ঢাকায় এখন হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল খুব কমই চলতে দেখা যায়।

এ ছাড়া নির্দেশনা ছিল, উড়ালসড়ক বা আন্ডারপাসে পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় লাইট, সিসি টিভি স্থাপন এবং আন্ডারপাসের বাইরে আয়নার ব্যবস্থা করা, যাতে নাগরিকেরা স্বচ্ছন্দে ও নিরাপদে স্থাপনাগুলো ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ হন।
শহরের সব সড়কে জেব্রা ক্রসিং ও রোড সাইন দৃশ্যমান করা, ফুটপাত হকারমুক্ত রাখা, অবৈধ পার্কিং ও স্থাপনা উচ্ছেদ করাসহ সব সড়কের নামফলক দৃশ্যমান স্থানে সংযোজন করার সিদ্ধান্তও হয়।

পরিবহন ব্যবস্থাপনার এসব নির্দেশনা ২০১৮ সালের ২০ আগস্টের মধ্যেই বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু এর কোনোটাই বাস্তবায়িত হয়নি।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে এআরআইয়ের সাবেক পরিচালক ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, যানবাহন নিবন্ধন ফি, ট্যাক্স ও ফিটনেস ফিসহ হাজার কোটি টাকা আয় করছে সরকার। এই টাকার একটা অংশ চালক তৈরি ও প্রশিক্ষণে ব্যয় করা যেত। কিন্তু এসব কাজে সরকারের দপ্তরগুলোর ইচ্ছাই দেখা যায় না।

তিনি বলেন, পরিবহন খাতে বিপুল চাঁদা তোলার অভিযোগ আছে। অথচ চালকের বিমাসুবিধা, খাদ্য নিরাপত্তা, বাসস্থানের নিশ্চয়তা নেই। এবারের মহামারিতে দেখা গেল চালকেরা অসহায়। সুতরাং, ঘোষণা দিলেই হবে না। সেই অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে তা বাস্তবায়ন না করলে লাভ নেই।
সুত্র প্রথম আলো

একই রকম সংবাদ সমূহ

আয়কর রিটার্ন নিয়ে কঠোর হচ্ছে এনবিআর

যারা আয়কর রিটার্ন জমা দেন না কিংবা নানাভাবে কর ফাঁকি দেন বাবিস্তারিত পড়ুন

জাতীয় গ্রিড থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করবে খুলনা পাওয়ার

দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত জ্বালানি-বিদ্যুৎ খাতের প্রতিষ্ঠান খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (কেপিসিএল) বড়বিস্তারিত পড়ুন

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে সাতক্ষীরায় র‍্যালি ও আলোচনা সভা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: ‘সাহসী নতুন বিশ্বে রিপোর্টিং-স্বাধীন গণমাধ্যমে এআই এর প্রভাব’ এই প্রতিপাদ্যেবিস্তারিত পড়ুন

  • আমরা নির্ভীক ও পক্ষপাতহীন সাংবাদিকতাকে সম্মান করি: তারেক রহমান
  • ‘গালি’ কেন দেন, ‘দেশ ছাড়তে বাধ্য’ কেন হয়েছিলেন- জানালেন পিনাকী ভট্টাচার্য
  • সীমান্তে আটকের ৮ ঘণ্টা পর মামা-ভাগনেকে ফেরত দিলো বিএসএফ
  • সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি এড়াতে বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া
  • যশোরের শার্শায় প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেখিয়ে অনৈতিক কাজ করতে গিয়ে গনধোলায়ের স্বীকার
  • কলারোয়ায় প্রীতি ফুটবল ম্যাচে চুয়াডাঙ্গাকে হারিয়েছে স্বাগতিকরা
  • দুই কৃষককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ; পাল্টা দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী
  • বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েনে বাণিজ্যে ধাক্কা
  • ৫ মে দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া
  • পারমিট ছাড়া হজ পালন না করার অনুরোধ ধর্ম মন্ত্রণালয়ের
  • অর্থনীতির জন্য আগামী ৭ মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: প্রেস সচিব
  • একের পর এক কালবৈশাখী আসছে চলতি মাসে