অনিয়মের অভিযোগে রাজগঞ্জের তফি ক্লিনিক ফের সিলগালা
মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জে তফি ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ফের সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। এই ক্লিনিকে রোগীর অস্ত্রোপচার, পরীক্ষা নিরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম পরিচালনা হলেও ছিলো না কোনো ডাক্তার-নার্স ও সরঞ্জাম। এছাড়াও রয়েছে নানা অনিয়ম।
অথচ সেখানে দিব্যি চিকিৎসাসেবার নামে মানুষকে বোকা বানিয়ে অর্থ লুটে নেয়া হচ্ছিলো। এসব অভিযোগে বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট-২০২২) দুপুরে যশোরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিক রাসেলের নেতৃত্বে এক অভিযান পরিচালনা হয়। এই অভিযানে রাজগঞ্জের নামমাত্র তফি ক্লিনিক সিলগালার পর তাদের এই চিকিৎসা প্রতারণা প্রকাশ্যে আসে।
অভিযানের সময় সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. রেহেনেওয়াজ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। এর আগেও নানা অনিয়মের কারণে একবার সিলগালা করা হয়েছিলো অবৈধ এই তফি ক্লিনিক। যশোর সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে- তফি ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার স্থাপনের পর স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমোদন ছাড়াই চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করে। ১০ শয্যার প্রতিটি হাসপাতাল অথবা ক্লিনিকে রোগী প্রতি ফ্লোর স্পেস থাকতে হবে ন্যূনতম ৮০ বর্গফুট। জরুরি বিভাগ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঝুঁকিমুক্ত অপারেশন থিয়েটার, চিকিৎসার জন্য যন্ত্রপাতি, ওষুধ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি থাকতে হবে। শর্তানুযায়ী ৩ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ডিপ্লোমাধারী ২ জন সেবিকা, ৩ জন সুইপার ও ৮শ’ বর্গফুট জায়গা থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু তফি ক্লিনিক মালিক পক্ষ স্বাস্থ্য নীতিমালা মানার প্রয়োজন মনে করেননি। তারা নিজেদের ইচ্ছামতো প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছিলেন।
প্রশাসনিক কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান জানান- বিভিন্ন অভিযোগে বিগত ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে তৎকালীন সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীনের নেতৃত্বে তফি ক্লিনিকে অভিযান পরিচালনা করা হয়। নানা অনিয়ম ও চিকিৎসা প্রতারণার সত্যতা পাওয়ার কারণে ওই সময় প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের নির্দেশ দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এর কিছু দিন পরেই সিভিল সার্জনের নির্দেশ না মেনে মালিক পক্ষ গোপনে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করেন।
বিষয়টি জানার পর গত বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট-২০২২) ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিকের নেতৃত্বে তফি ক্লিনিকে অভিযান চালানো হয়। সেখানে লাইসেন্স -চিকিৎসক- সেবিকা-প্যাথলজিস্ট ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিছুই নেই বলে সত্যতা মেলে। অথচ রোগীর অস্ত্রোপচার, চিকিৎসাসেবা প্রদান ও প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা নিরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম করা হচ্ছিলো। এসব নানা অনিয়ম ও প্রতারণার কারণে তফি ক্লিনিক ফের সিলগালা করা হয়। এদিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে- এর আগে ২০২২ সালের ২৯ মে মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসানের নেতৃত্বে তফি ক্লিনিকে অভিযান চালানো হয়। ওই সময় নানা অনিয়ম সংশোধনে আল্টিমেটাম দেয়া হলেও মানা হয়নি। মালিকপক্ষ প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ এই ক্লিনিক পরিচালনা করে আসছিলেন।
যশোরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা.নাজমুস সাদিক জানান- নানা অনিয়মের কারণে বিগত দিনে তফি ক্লিনিক সিলগালা করা হয়েছিলো। কিন্তু সিভিল সার্জন অফিসের নির্দেশনা না মেনে পুরোপুরি অবৈধভাবে সেখানে চিকিৎসা কার্যক্রম চলছিলো। যে কারণে ফের সিলগালা করা হয়েছে। এবার অনুমোদন না নিয়ে তফি ক্লিনিকে কার্যক্রম চালানো হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)