আজ পত্রদূতের ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
আজ ২৩ জানুয়ারি দৈনিক পত্রদূতের ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সব প্রান্তে আমাদের সব পাঠক, বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীকে শুভেচ্ছা, ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। গত ২৬ বছরে অনেক দু:খ-বেদনা, হাসি-কান্না, মান-অভিমান, আনন্দ-সফলতার মধ্যে আপনারা আমাদের সঙ্গে ছিলেন এবং আজও আছেন। ভবিষ্যতেও আপনারা আমাদের সঙ্গে থাকবেন-এ প্রত্যাশা চিরন্তন।
বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীর মানুষ একটা কঠিন বিশেষ সময় অতিবাহিত করছে। ভীতিকর করোনা অতিমারি এখনো চলছে। আসন্ন শীতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা নিয়ে এখন আলোচনা চলছে। এই করোনাকালে আমরা যাঁদের হারিয়েছি, তাঁদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। তাঁদের জন্য শোক প্রকাশ করছি। বিশেষ করে করোনার বিরুদ্ধে সম্মুখসারির যোদ্ধা চিকিৎসক, নার্স, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তাসহ সবার প্রতি আমাদের বিনীত শ্রদ্ধা।
আজকের এইদিনে বিনম্র শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি দৈনিক পত্রদূতের প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক এমএলএ বীর মুক্তিযোদ্ধা স ম আলাউদ্দীনকে। যাত্রা শুরু’র অঙ্গীকার নিয়ে আধুনিক সাতক্ষীরা গড়ার স্বপ্ন নিয়ে ১৯৯৫ সালের এইদিনে পাঠকের হাতে পৌছে দিয়েছিলেন দৈনিক পত্রদূত। সেই যাত্রা আজও চলমান। চলবে আগামীর পথে পাঠকের অদম্য শক্তিতে।
পত্রদূত যে আজ জনগণের পত্রিকা হতে পেরেছে, এর পেছনে যাদের অবদান স্মরণীয় তারা হলেন-সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি মো. আনিসুর রহিম, উপদেষ্টা সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক লায়লা পারভীন সেঁজুতিসহ পত্রদূতের অগণিত পাঠক ও সংবাদকর্মী। আমরা গর্ব করে বলি, এটা হতে পেরেছি উপদেষ্টা সম্পাদক আবুল কালাম আজাদের জন্য। তিনি আমাদের সব চিন্তা ও কাজে সমর্থন দিয়েছেন। কিন্তু কখনোই সংবাদ প্রকাশে আপোষ করেননি। মানুষ পরাজিত হয় না। নারী ও শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠায়, কৃষি, শিক্ষা, সাহিত্য-সংস্কৃতির বিকাশে পত্রদূত বরাবরই অনন্য ভুমিকায় আছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটনের বিকাশে পত্রদূত বারবার দেখিয়েছে প্রত্যাশার আলো।
ধন্যবাদ জানাই পত্রদূতের কবি-সাহিত্যিকদের প্রতি। কবি-সাহিত্যিক ও লেখকরা সমৃদ্ধ করেছেন সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে। নিশ্চয়ই ২০২০-এর নভেম্বরের চেয়ে ২০২১-এর নভেম্বর অনেক বেশি আলোকিত হবে। মানুষ সুসময় আনবে, সুদিন আসবে। সততার সঙ্গে, নিষ্ঠার সঙ্গে এবং বিনয়ের সঙ্গে। আমরা বাংলাদেশের জয় দেখতে চাই
২৬ বছর ধরে আমাদের একটা কথা বারবার বলি, সেটা হলো, পাঠকই পত্রদূতের প্রাণ। তারা আমাদের সঙ্গে আছেন। পাঠকেরা, কতটা ভালো হলে এ রকম একটা স্বাধীন ও বস্তুনিষ্ঠ কাগজের পাশে পরম ভালোবাসা নিয়ে দাঁড়াতে পারেন তা ভাবলে আমাদের গর্ব অনুভব হয়।
আমরা গভীরভাবে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই। আর গণতন্ত্রে স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা খুব বেশি। আমরা সেই ভূমিকা পালন করার চেষ্টা করে চলেছি, ভবিষ্যতেও করে চলব।
আমাদের কাজ সমাজের অসংগতি তুলে ধরা, মানুষের চাওয়া-পাওয়া এবং দাবিদাওয়া বিশ্বস্ততার সঙ্গে তুলে ধরা। তার মাধ্যমে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র শক্তিশালী হয়।
তবে করোনাকালে সংবাদকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি দু:খজনকভাবে বেড়েছে। ভিন্নমত ও সমালোচনা গ্রহণে প্রশাসনের সহনশীলতার ঘাটতি ছিল। বিশেষ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ উদ্বেগজনক।
পত্রদূত আরেকটা দায়িত্বের প্রতি সচেতন থেকেছে। সেটা হলো, বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক কিশোর, তরুণ আর যুবকের সামনে ভালো আদর্শের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছে। পত্রদূত সুসংবাদ ও ইতিবাচক খবর দিয়ে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে। আশা-আনন্দের খবর দেয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস প্রচারে পত্রদূত বরাবরই ভূমিকা রেখেছে।
সারা বছর ধরে শিল্প-সাহিত্য, শিক্ষা, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, ক্রীড়া এবং বিজ্ঞানের সেরা খবরগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করা হয় পত্রদূতে। আমরা বাংলাদেশের অর্জনগুলোকে, বিজয়ের খবরগুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করি।
প্রিয় পাঠক, আপনাদের ধন্যবাদ। আপনারা আমাদের বিশ্বাসকে বাস্তবে প্রমাণ করেছেন। পত্রদূতের প্রতি আপনাদের আস্থা আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।
চলমান করোনার দু:সময়েও আমরা পত্রদূতের অনলাইন এবং ছাপা প্রকাশনা অব্যাহত রেখেছি। এজেন্ট-হকার ভাইয়েরা তা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন। এজন্য তাদেরকেও অভিনন্দন। পত্রদূতের শুভানুধ্যায়ী বিজ্ঞাপনদাতারাও আমাদের পাশে আছেন এবং আগামীতে থাকবেন। তাদের অবদান পত্রদূতকে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী করেছে। মানুষ ভালোর পাশে আছে। মানুষ বস্তুনিষ্ঠ খবর চায়। অনলাইনে কত কিছু পাওয়া যাচ্ছে, কত কত ফেক নিউজ, এখনই তো দরকার আসল খবরের, সে জন্য পাঠকেরা আস্থা রাখছেন পেশাদার সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের ওপর। এখনই সঠিক সাংবাদিকতা করার সময়। সময়টা যখন ধূসর, হতাশা যখন চেপে বসতে চায়, সত্য যেখানে মিথ্যার সঙ্গে মিলেমিশে থাকে, তখনই সঠিক তথ্য তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি। সে জন্য আমরা প্রতিনিয়ত আধুনিক জীবনঘনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে সচেষ্ট রয়েছি।
আমরা বিশ্বাস করি, মানুষ পরাজিত হয় না। নিশ্চয়ই ২০২০-এর চেয়ে ২০২১ অনেক বেশি ভালো হবে। মানুষ সুসময় আনবে, সুদিন আসবে। আলোকিত দিন আসবে, পত্রদূত সেই আলোকযাত্রায় আপনাদের পাশে থাকবে। সততার সঙ্গে, নিষ্ঠার সঙ্গে এবং বিনয়ের সঙ্গে। আমরা বিজয় দেখতে চাই। সবার ভালো হোক। সুস্থ থাকুন। নিরাপদে থাকুন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)