আমির হামজা গ্রেফতার যে কারণে


আলোচিত ধর্মীয় বক্তা মুফতি আমির হামজাকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) একটি দল। সোমবার (২৪ মে) রাতে সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান মো. আসাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আমির হামজাকে সন্ত্রাসবিরোধী একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলেও তার বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে মদদ দেয়া এবং রাষ্ট্রবিরোধী উস্কানির অভিযোগও রয়েছে বলে জানিয়েছে সিটিটিসি। বিকেলে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নের ডাবিরাভিটা গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে হামজাকে গ্রেফতার করা হয়।
সিটিটিসি সূত্রে জানা গেছে, আমির হামজা ওয়াজ মাহফিলে ইসলামের নামে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়েছেন। ইউটিউবে প্রকাশিত তার বেশকিছু বক্তব্য শুনে কিশোর-তরুণরা জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি নাশকতার মামলায় হেফাজতের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অভিযান শুরু হলে আত্মগোপনে চলে যান আমির হামজা।
সিটিটিসি সূত্রে আরও জানা গেছে, তলোয়ার নিয়ে সংসদ ভবনে হামলা চালানোর চেষ্টায় গত ৫ মে সাকিব নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। সাকিবকে গ্রেফতারের পর শেরেবাংলা নগর থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করা হয়। ওই মামলায় সাকিব ছাড়াও আলী হাসান ও মাহমুদুল হাসান গুনবী নামে দু’জনকে আসামি করা হয়।
সাকিবের কাছ থেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সাকিব কথিত বক্তা আলী হাসান উসামা, মাহমুদুল হাসান গুনবী, আমির হামজা, হারুন ইজহার প্রমুখের উগ্রবাদী-জিহাদি হামলার বার্তাসংবলিত ভিডিও দেখেন এবং উগ্রবাদে আসক্ত হন।
গত ১৫ মে ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের তৎকালীন উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, তলোয়ার নিয়ে সংসদ ভবনে হামলাচেষ্টাকারী সাকিবকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান এক ইসলামী বক্তার নির্দেশে তিনি এই পরিকল্পনা করেছিলেন। কয়েকজনের ওয়াজ ও বক্তব্য শুনে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হন তিনি। আমরা সেসব বক্তাকে চিহ্নিত ও গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।
কুষ্টিয়ার আঞ্চলিক ভাষায় ওয়াজকারী আমির হামজার জন্ম ১৯৯১ সালে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া থেকে আল-কোরআনের ওপর অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন তিনি।
গত বছর দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর আমির হামজা ক্রমাগতভাবে মাস্ক না পরতে উৎসাহ দিয়ে আসছিলেন। বলেন, ‘করোনা এসেছে ইসলামে অবিশ্বাসীদের শায়েস্তা করতে’। তিনি এমনও বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়লে কারও করোনা হবে না।’
সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো ভিডিওতে আমির হামজা বলেন, ‘আমি কসম দিচ্ছি আপনার কাছে করোনা আসবে না। যদি আসে আমার কাছ থেকে বুঝে নিয়েন যান। যদি আসে তাহলে কোরআন শরিফ মিথ্যা হয়ে যাবে। আল্লাহ কি তার কোরআনকে মিথ্যা প্রমাণ করবেন’?
এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা হলে হামজা তার মতো করে ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘এই বক্তব্যের আগে পরে তিনি আরও অনেক কিছু বলেছেন। সেগুলো প্রচার না হওয়ায় তার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে।’

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
