আশাশুনিতে বিজয়ী চেয়ারম্যান ও সমর্থকদের উপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় উভয়কেই গ্রেপ্তার, মুক্তির দাবিতে সমাবেশ
সাতক্ষীরার আশাশুনিতে পরাজিত চেয়ারম্যান কতৃক আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলিবর্ষণ ও হামলার ঘটনায় পুলিশ গুলিবিদ্ধ বিজয়ী চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম ও পরাজিত অহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে। একইসাথে ডালিমের আরেক আহত সমর্থককেও এবং হামলাকারী আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এনিয়ে মোট ছয়জন গ্রেপ্তার হয়েছে।
এদিকে হামলায় আহতদের গ্রেপ্তার এবং তাদের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা হওয়ায় এলাকায় হাজার হাজার নারী পুরুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছে। তারা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে।
শুক্রবার বিকালে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয় এবং আদালতের মাধ্যমে সাতক্ষীরা কারাগারে প্রেরণ করা হয়। সন্ধ্যায় পরাজিত ও হামলাকারী অহিদুল ও তারসমর্থকদের এছাড়া দিনের আলোতে বিজয়ী প্রার্থী ডালিম ও তার সমর্থককে কারাগারে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকালে চেয়ারম্যান ডালিম কর্মী সমর্থকদের নিয়ে তুয়ারডাঙ্গায় এক মেম্বার প্রার্থীর সাথে দেখা করতে যাওয়ার পথে পরাজিত প্রার্থী ওহিদুল ইসলামের বাড়ির ছাদের ওপর থেকে তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে বিক্ষুব্ধ জনতা ফুসে ওঠে। তখন ছাদের উপর থেকে মুর্হুমুর্হু গুলিবর্ষণ করে অহিদুল ইসলাম। এতে ১০ জন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ২০জন আহত হয়। গুরুতর আহতদের বিভিন্ন হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পুলিশ ওহিদুলের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ওহিদুলের লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র, বেশ কিছু ধারালো অস্ত্র, লাঠিসোটা ও ব্যবহৃত গুলির খোসা জব্দ করেছে।
এদিকে হামলাকারী অহিদুলের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করে খাজরা ইউনিয়নবাসীর আয়োজনে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা দীনেশ মন্ডল সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনায় দীর্ঘ মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, খাজরা ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি প্রদীপ চক্রবর্তী, যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম কাজল, আনারুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু সৈনিকলীগের সভাপতি আছাদুজ্জামান রিপন, আওয়ামীলীগ নেতা শ্যামাপদ ঘোষ, লিটন গাজী সহ এলাকার সহস্রাধিক নারী পুরুষ সমাবেশে অংশ নেন।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, নির্বাচনের সময় এলাকায় কারো কাছে অস্ত্র থাকার কথা নয় তাহলে কীভাবে সে অস্ত্র রাখলো? প্রশাসনের অবহেলায় এঘটনা ঘটেছে বলে জানান এলাকার মানুষ। তারা বলেন, যারা হামলা করলো-গুলি চালালো তাদের মামলা নিয়ে অন্যায়কারীদের আস্কারা দেয়া হয়েছে। অহিদুলের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হয় না বলেই দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের উপর একের পর এক অন্যায় অত্যাচার করে আসছে সে। অহিদুলের রয়েছে বড় বড় গডফাদার যাদের আশ্রয়ে সে এসব কাজ করে থাকে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মো: হুমায়ুন কবির জানান, তিনি ঘটনা অবগত হয়েছেন। অহিদুলের আগ্নেয়াস্ত্রটি অফিস কর্মদিবসে খেঁাজ নিলে বোঝা যাবে তা সঠিকভাবে নবায়নকৃত কি না।
এবিষয়ে আশাশুনি থানার ওসি গোলাম কবিরের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাংবাদিকদের ফোন রিসিভ করেননি। তবে সাতক্ষীরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজিব খানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তিনি ভিষন ব্যস্ত। তবে এঘটনায় দুই পক্ষ থেকে দুটি মামলা নেয়া হয়েছে। এর বেশী কিছু তিনি বলতে পারেন না।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)