একমাত্র কন্যার ভবিষ্যতের জন্য স্বামীর সঙ্গে সংসার করার দাবিতে সাতক্ষীরায় গৃহবধূর সংবাদ সম্মেলন
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় স্বামীর বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও প্রতারনার আশ্রয় গ্রহণ করে স্ত্রীর কাছ থেকে অর্থ সম্পদ হাতিয়ে নিয়ে স্ত্রীকে মারপিট করে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রোববার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে পৌর শহরের মধুমল্লার ডাংগী গ্রামের মৃত. ছাইফুল ইসলামের মেয়ে তৈয়েবা খাতুন এই অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিগত ২০১৩ সালের ১০ মার্চ ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক যশোর জেলার অভয়নগর থানার শ্রীধরপুর গ্রামের সাদেক লস্কারের ছেলে সাঈফুদ্দীনের সাথে ১০লক্ষ টাকা দেন মোহর ধার্যে তার বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিবাহের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে যৌতুকের দাবিতে স্বামী তাকে নির্যাতন করতে থাকে। তার বাড়ি করার দাবি মেটাতে বিভিন্ন সময়ে পিতার কাছ থেকে কয়েক ধাপে জন্য নগদ ৩০লক্ষ টাকা নিয়ে সাঈফুদ্দীনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সে সময় ওই জমি আমার নামে রেজিষ্ট্রি করে দেওয়ার কথা থাকলেও সে দেয়নি। এছাড়া ছাত্র জীবন থেকে কর্মজীবন শুরুর পূর্ব পর্যন্ত তার যাবতীয় খরচ আমার পিতাই বহন করেছে। ইতোমধ্যে সাঈফুদ্দিনের ঔরশের আমার গর্ভে একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। আমার পিতার আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকার সুযোগে সে বিভিন্ন সময়ে ল্যাপট, এসিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম গ্রহণ করে। স্বামীর সংসার চালানোর জন্য আমি ৫/৬টি করে গরুপালন করতাম। এছাড়া আমার ২০ ভরি ওজনের স্বর্ণের গহনা আমি স্বামীর হাতে তুলে দিয়েছিলাম। এরপরও যৌতুক লোভী সাঈফুদ্দিন যৌতুকের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। একপর্যায়ে গত চলতি বছরের ১৬মে যৌতুকের দাবিতে আমাকেসহ আমার কন্যাকে মারপিট করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। সেখান থেকে শিশু সন্তানকে নিয়ে আমি পিতার বাড়িতে অবস্থান করছিলাম। একপর্যায় গত ৯ আগস্ট রাতে স্বামী সাঈফুদ্দিন তার ভাই কুতুব উদ্দীন, মামা মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন মিমাংসার কথা বলে আমার পিতার বাড়িতে আসে। কিন্তু সেখানে কথা বার্তার একপর্যায়ে সে আমাকে বেধড়ক মারপিট করে। এঘটনায় ন্যায় বিচার চেয়ে আমি আদালতে একটি মামলা দায়ের করি।
তৈয়েবা খাতুন বলেন, মামলা করার পর সাঈফুদ্দিনের প্রতারনা ও জালিয়াতির বিষয়টি আমরা জানতে পারি। ২০২৩ সালের ১৩ অক্টোবর সে গোপনে আমাকে তালাক প্রদান করে। কিন্তু তালাকের বিষয়টি গোপন রেখে সে আমার সাথে স্বামী-স্ত্রী রূপে সংসার করে আসছিল। এসময় আমার গর্ভে একটি সন্তান আসলেও কৌশলে ডাক্তারের মাধ্যমে সেটি নষ্ট করে দেয়। আমার পিতার কাছ থেকে নেওয়া টাকা এবং সম্পদ ভোগ করার উদ্দেশ্যেই জালিয়াতি ও প্রতারনার আশ্রয় গ্রহণ করে স্বামী সাঈফুদ্দিন। এমনকি তালাকের কপি আমার পিতার বাড়ি বা বর্তমান ঠিকানায় না পাঠিয়ে তার নিজের ঠিকানায় রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে প্রেরণ করে। আমি মামলা করতে পারি এবং ওই জমিটি যাতে আমাকে রেজিষ্ট্রি করে না দিতে হয় সে উদ্দেশ্যেই প্রায় ১বছর আগে আমাকে তালাক দিয়েও গোপন রেখেছিল। এঘটনা জানার পর একমাত্র কন্যাকে নিয়ে চরম উদ্বিগ্নতার মধ্যে দিনাতিপাত করছি। স্বামীর বাড়িতেও থাকতে পারছি না আবার পিতার বাড়িতেও আশ্রয় নেই আমাদের। আমি এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছি। একমাত্র কন্যার ভবিষ্যতের জন্য যাতে সাঈফুদ্দিনের সঙ্গে পুনরায় সংসার করতে পারেন তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)