ঐতিহ্য সমৃদ্ধ কলারোয়া
ঐতিহ্য সমৃদ্ধ কলারোয়া
প্রফেসর মো. আবু নসর
বহু প্রাচীন ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের এক গৌরবগাঁথা ইতিহাস সমৃদ্ধ পূরাকীর্তি, সভ্যতা, প্রত্নতত্ব আর সংস্কৃতির নিদর্শন সহ দর্শনীয় স্থান, পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র এবং অন্যান্য ঐতিহ্যে ভরপুর স্বপ্নের ইন্দ্রপুরী একটি অতি জনপ্রিয় জনপদ কলারোয়া।
পূরকীর্তি ও অন্যান্য ঐতিহ্যের মধ্যে সোনাবাড়ীয়া মঠ, চেঁড়াঘাটের কাইউম বিশ্বাসের প্রাচীন মসজিদ, সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে শুভাঙ্করকাটি কোঠাবাড়ী থান, চান্দুড়িয়া মোহম্মদ শাহ দরগা, গয়ড়া পীরোত্তর দরগা, কলারোয়া পশুহাট সংলগ্ন বর্তমান তহশিল অফিসের উত্তর পার্শ্বে সাবেক হোসেনপুর (পরবর্তীতে কলারোয়া) পরগনার ইংরেজদের নীলকুঠির ধ্বংসাবশেষ, কলারোয়া থানা ভবনের পূর্ব পার্শ্বে ১৮৫২ সালে স্থাপিত সাতক্ষীরা মহকুমা প্রশাসকের তৎকালীন সদর দফতরের ও বাসভবনের ধ্বংসাবশেষ, কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, কলারোয়া মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ “স্বাধীনতা”, কলারোয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার কমপ্লেক্স, জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে স্থাপিত প্রাচীন কলারোয়া থানা, দৃষ্টিনন্দন উপজেলা পরিষদ ভবন ও উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স, কলারোয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (হাসপাতাল), কলারোয়া ডায়াবেটিস হাসপাতাল, শতবর্ষী ধানদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮১) বিলুপ্তপ্রাপ্ত জি.টি স্কুল, প্রাচীন কলারোয়া জিকেএমকে সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, কলারোয়া গার্লস পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলারোয়া আলিয়া মাদ্রাসা, কাকডাঙ্গা সিনিয়র মাদ্রাসা, উচ্চ শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে ঐতিহ্যবাহী কলারোয়া সরকারি কলেজ, স্বনামখ্যাত শেখ আমানুল্লাহ কলেজ, বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ, হোমিও চিকিৎসা বিজ্ঞানে কলারোয়া হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ, শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, পাঠাগার ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে নিবেদিত কলারোয়া পাবলিক ইনিষ্টিটিউট, গয়ড়া বাজার, কলারোয়া ফুটবল মাঠের দক্ষিণ পার্শস্থ, সোনাবাড়িয়া, ভাদিয়ালি, উত্তর মুরারীকাটি, বামনখালী ও বালিয়াডাঙ্গা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিদ্যমান গণকবর, উপমহাদেশের পীরে কামেল আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব কর্মবীর মাওলানা ময়েজউদ্দিন হামিদীর স্মৃতি-বিজড়িত হামিদপুর সিনিয়র মাদ্রাসা, জামে মসজিদ, লিল্লাহ বোডিং, টেলিগ্রাম অফিস, সাবপোস্ট অফিস, বাসভবন, সান বাঁধানো বিশাল দুটি দৃষ্টিনন্দন পুকুর, উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদ, কলারোয়া কেন্দ্রীয় প্রাচীন জামে মসজিদ, কলারোয়া থানা জামে মসজিদ, সৌন্দর্য্য মন্ডিত বাসস্টান্ড জামে মসজিদ, কাছারি জামে মসজিদ, কোল্ডস্টোরেজ জামে মসজিদ, কেঁড়াগাছি নামাচার্য্য শ্রী শ্রী ব্র্রহ্ম যবন হরিদাস ঠাকুরের জন্ম ভিটা বাস্তভিটা ও আশ্রম, হিজলদী তাজেম ফকিরের থান, রামচন্দ্রপুর পদ্ম পার্ক, বোয়ালিয়া মমতাজ নগর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ও শিশু পার্ক উলেখযোগ্য।
এছাড়া কলারোয়া উপজেলার অন্যান্য পূরার্কীতি ও ঐতিহ্যের মধ্যে কেঁড়াগাছি সোনাই নদীর তীরে অত্যাচারী নীল কুঠিয়ালদের ধ্বংসপ্রাপ্ত কুঠিবাড়ী, চন্দনপুর জমিদার বাড়ীর ছাদের পানি নিস্কাশনের জন্য বাঘের মুখাকৃতি বিশিষ্ট ১২০ কুঠুরী সম্বলিত ধ্বংসাবশেষসহ বিশাল জমিদার বাড়ী ও সিংহদরজা, জমিদার রানী রাশমনির স্মৃতি বিজড়িত সোনাবাড়ীয়া কাছারী বাড়ী ও প্লাটফরম বিশিষ্ট বৃহৎ সানপুকুর, সোনাবাড়ীয়া ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী পুকুর, গয়ড়া বাজার দোলমন্দির, মুরারীকাটি মানিক পীরের দরগা ও গাজীর হাটখোলার দরগা, চান্দুড়িয়া গোয়ালপাড়া মন্দির, ক্ষেত্রপাড়া প্রাচীন বটতলার থান, ক্ষেত্রপাড়া স্বর্গীয় মদন মোহন ঠাকুরের বৃহৎ মন্দির, উত্তর মুরারীকাটি পাল পাড়া, তুলসীডাঙ্গা, গোপীনাথপুর, কয়লা ঘোষপাড়া, ঝিকরা হরিতলা, খাসপুর পূজা মন্ডপ, তুলসীডাঙ্গা কালিবাড়ী, কেঁড়াগাছি প্রাচীন রথখোলার মাঠ, টোলবাড়ী ও হীরানটির জাঙ্গাল, দরবাশা ধ্বংসাবশেষ নীলকুঠি, বিলুপ্তপ্রাপ্ত দরবাশা মনসাদহের মন্দির, বোয়ালিয়া শাঁই ফকিরের থান, কেঁড়াগাছি রামসীতার মন্দির ও বড় শিবের মন্দির, কেরালকাতার মনসা দহ, ১২৬ একর জলাকার বিশিষ্ট দলুইপুরের বিশাল বাওড়, চান্দা গ্রামের যদুবাবুর বৃহৎ র্দীঘি, সোনাবাড়ীয়া ‘সানসেটল’, মদনপুর জজবাড়ী ও জজপুকুর, চন্দনপুর সুবৃহৎ আম্রকানন ও ঝাউবাগান (বিলুপ্ত), চন্দনপুর আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. আই এস রায়ের (ইন্দ্রশেখর রায়) বাস ভবন (বিলুপ্তপ্রাপ্ত), দাঁড়কি নীলকুঠি ও জমিদার কাছারীবাড়ী (বিলুপ্তপ্রাপ্ত), যুগীখালি জাহাজমারী পার্ক ও বিনেদন কেন্দ্র, উপজেলার সর্ববৃহৎ ও প্রাচীন চন্দনপুর ফুটবল মাঠ ও কলারোয়া উচ্চ বিদ্যালয় ফুটবল মাঠ, কলারোয়া পশুহাট, কলারোয়া বাজার, প্রাচীন রেজিট্রেশন অফিস, সিঙ্গা তারাপদ মজুমদারের জলাশয় ও কুয়া (বিলুপ্ত), হাটুনী পাইলট বাড়ী (বিলুপ্ত), কেরালকাতা ঠাকুরবাড়ী, পানিকাউরিয়া মহকুমা প্রশাসক আব্বাস আলি ঘরামী ও মহসিন ঘরানীর বাসভবন (বিলুপ্ত), দেয়াড়া খন্দকার তলা ও সোনাতলা বাওড়, ধ্বংসপ্রাপ্ত জানখাঁ নীলকুঠি (বিলুপ্ত), খোর্দ্দ নীলকুঠি ভবন (বিলুপ্ত), বামনখালি সনাতন ঘোষের বৃহৎপুকুর, তরুলিয়া নীলকুঠি (বিলুপ্ত), সম্রাট জাহাঙ্গীরের দেওয়ানদের খননকৃত প্রাচীন লষ্কর খাল, সীমান্তের প্রান্ত সীমায় প্রবাহমান ইছামতি ও সোনাই নদী, উপজেলার অভ্যন্তরে বেত্রবতী নদী ও পূর্ব প্রান্তে কপোতক্ষ নদ প্রভূতি উলেখযোগ্য।
লেখকঃ
প্রফেসর মো. আবু নসর
সাবেক অধ্যক্ষ,
কলারোয়া সরকারি কলেজ
কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
মোবাঃ ০১৭১৭-০৮৪৭৯৩
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)