কাশ্মীর সীমান্তে টানা অষ্টম রাত ভারত–পাকিস্তান গো*লাগু*লি


কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর টানা অষ্টম রাতেও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে ভারত ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মধ্যে। বৃহস্পতিবার (১ মে) রাতেও এ ধরনের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। গত ২২ এপ্রিল জম্মু–কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকেই প্রায় প্রতিদিন রাতেই সীমান্তে চলছে গোলাগুলি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরের কুপওয়ারা, বারামুল্লা, পুঞ্চ, নওশেরা এবং আখনুর সেক্টরের বিপরীত পাশে পাকিস্তানের দিক থেকে ছোট অস্ত্রের গুলি চালানো হয়। এর জবাবে ভারতীয় সেনাবাহিনীও প্রতিক্রিয়া দেখায়। সীমান্তজুড়ে ৭৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ এলওসির নানা পয়েন্টে এই সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানায় ভারতীয় বাহিনী।
গত ২৪ এপ্রিল রাত থেকে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বিনা উসকানিতে গুলি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এই সময়টিতে ভারত সরকার সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা দেয়। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এলওসিতে গুলিবর্ষণ শুরু হয়।
ভারতীয় সেনা সূত্র বলছে, গত মঙ্গলবার পাকিস্তান সেনারা আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে জম্মুর পারগওয়াল সেক্টরে ঢুকে গুলি করে। একই দিন ভারত ও পাকিস্তানের ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনস (ডিজিএমও) পর্যায়ে হটলাইনে আলোচনা হয়। ভারতীয় পক্ষ পাকিস্তানকে বিনা উসকানিতে হামলা না চালাতে সতর্ক করে বলে পিটিআইকে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
পেহেলগামের হামলার পর ভারত একাধিক কঠোর পদক্ষেপ নেয় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে রয়েছে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত, পাঞ্জাবের আত্তারিতে একমাত্র চালু থাকা স্থল সীমান্ত বন্ধ এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস করা। ভারতের এই পদক্ষেপের পাল্টা জবাবে পাকিস্তান ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশপথ বন্ধ করে দেয় এবং তৃতীয় দেশের মাধ্যমে যেকোনো বাণিজ্যিক কার্যক্রমও স্থগিত করে।
এদিকে পাকিস্তান ভারতের পানির প্রবাহ বন্ধ করার সিদ্ধান্তকে ‘যুদ্ধ ঘোষণার শামিল’ বলে মন্তব্য করেছে। তারা জানিয়েছে, সিন্ধু পানি চুক্তি বাতিল করার অধিকার ভারতের নেই।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মোট ৩ হাজার ৩২৩ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে, যা তিনটি ভাগে বিভক্ত: আন্তর্জাতিক সীমান্ত (আইবি) প্রায় ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার, নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) ৭৪০ কিলোমিটার এবং প্রকৃত স্থল অবস্থানরেখা (এজিপিএল) ১১০ কিলোমিটার।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে দু’দেশের ডিজিএমওরা ২০০৩ সালের যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলার সিদ্ধান্ত নিলেও সাম্প্রতিক উত্তেজনা সেই চুক্তিকে কার্যত অকেজো করে দিয়েছে। বিশেষ করে পাকিস্তান যদি সিমলা চুক্তি স্থগিত করে, তবে অস্ত্র সংবরণ বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে পুরো সীমান্ত অঞ্চল।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
