দারুণ লড়েও সিঙ্গাপুরের কাছে হৃদয়ভাঙা হার হামজাদের


দর্শকদের তুমুল উন্মাদনার শেষ হলো হারের হতাশা দিয়ে। এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে হেরেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। ফলে যে উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা নিয়ে সমর্থকরা জাতীয় স্টেডিয়ামে এসেছিলেন, তা রূপ নিয়েছে বিষাদ মুহূর্তে। প্রথমার্ধে ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর বাংলাদেশ দ্বিতীয়ার্ধে আরেক গোল হজম করে। এরপর রাকিব একটি শোধ করলেও শেষ পর্যন্ত আর ম্যাচে ফেরা হয়নি।
জাতীয় স্টেডিয়ামে গ্যালারি ভরা দর্শকদের হতাশ করে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে হেরে গেল হামজা চৌধুরীর দল। তবে হারলেও সমর্থকদের মন জয় করে নিয়েছে শমিত-ফাহমিদুল-হামজারা। সিঙ্গাপুরের চেয়ে সুযোগও বেশি তৈরি করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু উত্তাল গ্যালারির হুঙ্কার সত্ত্বেও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত ১–২ গোলে হেরেছে হাভিয়ের কাবরেরার দল।
ম্যাচের ৫৯ মিনিটেই ২ গোল হজম করায় হতাশ হয়ে পড়েছিল স্টেডিয়াম। কিন্তু হামজারা তখনও হাল ছাড়েননি। ম্যাচের ৬৭ মিনিটে হামজার বাড়ানো বলে গোলকিপারকে বোকা বানিয়ে জালে বল জড়ান রাকিব। যদিও বলে খুব বেশি গতি ছিল না। তবে গোলরক্ষক সামনে এগিয়ে আসায় সিঙ্গাপুরের ডিফেন্ডাররাও আর বল ঠেকানোর সুযোগ পাননি। গোলের ব্যবধান কমায় আরও আগ্রাসী খেলতে থাকে বাংলাদেশ। বেশ কিছু সুযোগও তৈরি করে স্বাগতিকরা। কিন্তু ফিনিশিংয়ের অভাবে শেষ পর্যন্ত হেরে যায় স্বাগতিকরা।
প্রথমার্ধে ১-০ গোলে পিছিয়ে কিছুটা কৌশলগত পরিবর্তন আনেন বাংলাদেশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা। কিন্তু তা কাজে লাগেনি। উল্টা দ্বিতীয়ার্ধের ৫৯ মিনিটে গোল হজম করে বসে স্বাগতিকরা। সিঙ্গাপুরের দ্বিতীয় গোলটি করেন ইকসান ফান্দি। বক্সের বাইরে থেকে হামি শিয়াহিনের শট ঠেকালেও তা বিপদমুক্ত করতে পারেননি মিতুল। সুযোগ কাজে লাগিয়ে সিঙ্গাপুরকে এগিয়ে নেন ফান্দি।
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ঘরের মাঠে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে প্রথমার্ধেই গোল হজম করে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ম্যাচের ৪৫তম মিনিটে সিঙ্গাপুরকে এগিয়ে দেন সং উই ইয়ং। বাংলাদেশ শুরুটা আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতেই করেছিল, কিন্তু গোলের সুযোগ তৈরি করেও তা কাজে লাগাতে পারেনি স্বাগতিকরা।
ম্যাচের শুরু থেকে শরীরী ভাষা ছিল আগ্রাসী। প্রতিপক্ষকে মাঝমাঠেই আটকে রাখার চেষ্টা করে বাংলাদেশ। কিন্তু প্রথমার্ধের একেবারে শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে বসে লাল-সবুজরা। থ্রো-ইন থেকে গোলমুখে আসা বল পাঞ্চ করতে গিয়ে গোললাইনের বাইরে সরে গিয়েছিলেন গোলরক্ষক মিতুল মারমা। ফিরতি বলে সং উই ইয়ংয়ের প্লেসিং ঠেকাতে পারেননি হামজা চৌধুরী, যদিও শেষ মুহূর্তে তিনি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
বাংলাদেশের সবচেয়ে উজ্জ্বল পারফরমার ছিলেন অভিষিক্ত শমিত সোম। মধ্যমাঠ থেকে একের পর এক গোলের সুযোগ তৈরি করেন তিনি। প্রথমার্ধে পাঁচটি নিখুঁত বল বাড়িয়েছিলেন, যার প্রতিটি থেকেই গোল হতে পারতো। তবে রাকিব হোসেন ও ফাহামিদুল ইসলাম সেই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন।
প্রথম সুযোগ আসে সিঙ্গাপুরের পক্ষ থেকেই। ৯ মিনিটে হারিস স্টুয়ার্টের লম্বা থ্রো থেকে উইয়ং সং বল পায়ে পেলেও লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে বাইরে মেরে বসেন। ১৬ মিনিটে বাংলাদেশের সামনে আসে দারুণ এক সুযোগ। ডান দিক থেকে শাকিল আহাদ তপুর ক্রসে বল ছোট বক্সে পড়ে রাকিব হোসেনের সামনে। কিন্তু বল পায়ে লাগাতে না পারায় হতাশ করেন তিনি।
৩০ মিনিটে বাংলাদেশ নিশ্চিত গোল হজম থেকে রক্ষা পায় গোলরক্ষক মিতুল মারমার কল্যাণে। এককভাবে ডি-বক্সে ঢুকে পড়া ইকশান ফান্দির শট বাম হাতে ঠেকিয়ে দেন তরুণ এই গোলরক্ষক। সার্বিকভাবে প্রথমার্ধে দারুণ লড়ে বাংলাদেশ। কিন্তু গোলের সুযোগ তৈরি করেও তা কাজে লাগাতে না পারায় বিরতিতে যেতে হয় ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ দ্বিতীয়ার্ধে আরেক গোল হজম করে। এরপর রাকিব একটি শোধ করলেও শেষ পর্যন্ত আর ম্যাচে ফেরা হয়নি।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
