দিনাজপুরে ভোট গণনার পর সমর্থকদের উত্তেজনা, পুলিশের গুলিতে নিহত ১ ও আহত ৬
দিনাজপুরের বিরল উপজেলার আজিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের ভোট গণনার পর দুই ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের গুলিতে এক ব্যক্তি নিহত ও ৬ ব্যক্তি আহতের ঘটনা ঘটেছে।
দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ ও পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রবিবার রাত সাড়ে আটটায় উপজেলার চৌরঙ্গীবাজার এলাকায় সিঙ্গুল হামিদ-হামিদা উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এ সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
নিহত মোহাম্মদ আলী কাচুয়া (৬৫) উপজেলার সিঙ্গুল ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মাবুদ বক্সের ছেলে। তিনি নির্বাচনে বিজয়ী ইউপি সদস্য প্রার্থী (টিউবওয়েল) জোবায়দুর রহমানের চাচা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আজিমপুর ইউপি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গণনা শেষ হয়। এ সময় ইউপি সদস্য প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ও জোবায়দুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পুলিশ উত্তেজনা থামাতে চেষ্টা করে। পরবর্তীতে উত্তেজিত জনতা ভোটকেন্দ্রে ও পুলিশের ওপরে চড়াও হয়। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। পুলিশ এসময় কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পুলিশের ছোড়া গুলিতেই ৬ জন আহত হন। সেসময় গুলিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মোহাম্মদ আলী। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জিল্লুর রহমান জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তিনি মারা গেছেন। নিহত ব্যক্তির শরীরে পিঠের বাঁ পাশে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।
পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ জানান, ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছিল। তবে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা তাদের ফলাফলে সন্তুষ্ট হলেও দুই সদস্য প্রার্থী ফলাফল মেনে না নেওয়ায় সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে উত্তেজিত সমর্থকেরা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এসময় কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা ভোটকেন্দ্রে আশ্রয় নিলে সমর্থকেরা সেখানে চড়াও হয়ে হামলা চালায়। পুলিশ তখন আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়ে। এ সময় ওই বৃদ্ধের শরীরে গুলি লাগে। পরে হাসপাতালে নেওয়ার সময় তার মৃত্যু হয়। তবে এ ঘটনায় পুলিশের কয়েকজন সদস্যও আহত হয়েছেন।
জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জানে আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিরল উপজেলার ফরক্কাবাদ, বিরল ও আজিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন ছিল রবিবার। সকাল ৮টায় ব্যালটে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে কোনো প্রকার সহিংসতার ঘটনা ছাড়াই বিকেল ৪টায় শেষ হয়। চেয়ারম্যান পদে আজিমপুরে লিটন আলী, ফরক্কাবাদে হুসেন আলী ও বিরলে মারুফ হাসান নির্বাচিত হন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)