পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়
ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলে পাকিস্তানকে এর আগে বাংলাদেশ হারিয়েছে ৮ ম্যাচ। বাকি ছিল শুধু টেস্ট। রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের প্রথম টেস্টে এবার সেই অপেক্ষা ফুরোনোর কাছাকাছি বাংলাদেশ। ঐতিহাসিক জয় পেতে বাংলাদেশের প্রয়োজন ৩০ রান। ৫ম দিনের শেষ সেশনে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে এসে এক প্রকার হেসে খেলে ১০ উইকেটে পাকিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশ ঐতিহাসিক জয় লাভ করে।
এর আগে প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের ৬ উইকেটে ৪৪৮ রানের জবাবে অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ভর করে বাংলাদেশ থেমেছিল ৫৬৫ রানে। এতে প্রথম ইনিংস থেকে ১১৭ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর বল হাতেও তোপ দেখিয়েছে টিম টাইগার্স।
রবিবার পঞ্চম দিনে খেলতে নামে বাংলাদেশ। সফরকারীদের আক্রমণাত্মক বোলিংয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা পাকিস্তান অলআউট হয়েছে ১৪৬ রানে।
বাংলাদেশের এই জয়টা এসেছে অনেকটা কাকতালীভাবেই। নয়তো চতুর্থ দিনের খেলা শেষেও এমন জয় কল্পনা করেননি ক্রিকেটপ্রেমীরা। চতুর্থ দিনশেষে বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তান ৯৪ রানে পিছিয়ে থাকলেও ব্যাটিং স্বর্গে হাতে তখনো ৯ উইকেট থাকায় ভাবা হচ্ছিল ড্রই এই টেস্টের পরিণতি। তবে শেষ পর্যন্ত পঞ্চম দিনে বল করতে নেমে পাশার দান পাল্টে দিয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা।
বোলিংয়ে দিনের শুরুটা হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানা করলেও পরের গল্পটা কেবলই স্পিনারদের। পাকিস্তান যেখানে পেসার দিয়ে সাজিয়েছে তাদের বোলিং আক্রমণ, সেখানে একাদশে দুই স্পিনার রাখাকে অনেকে বিলাসিতা মনে করেছিলেন। তবে শুরুতে ভুল মনে হলেও দিনশেষে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক স্পিনাররাই। অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে কাবু পাকিস্তানের সাত ব্যাটার। এক রিজওয়ান ছাড়া সুবিধা করতে পারেননি কোনো ব্যাটার।
চতুর্থ দিনে ২৩ রানে ব্যাট করতে নেমে ৬৪ রানে ৪ উইকেট হারালেও পাকিস্তানকে টানছিলেন রিজওয়ান। প্রথম ইনিংসে ১৭১ রান করে বাংলাদেশকে ভোগানো মোহাম্মদ রিজওয়ান এদিনও বেশ ভুগিয়েছেন বাংলাদেশি বোলারদের। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে একাই দলকে টেনেছেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। একটা সময় তো মনে হচ্ছিল শেষ পর্যন্ত না রিজওয়ান টেলেন্ডারদের নিয়ে বাংলাদেশের জয়টা রুখে না দেয়। তবে শেষ পর্যন্ত সেটি হতে দেননি সাকিব-মিরাজ জুটি।
ফিফটির পরপরই মিরাজকে সুইফ খেলতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে স্টাম্প ভাঙে রিজওয়ানের। ৫১ রানে ফেরেন রিজওয়ান। সেই সঙ্গে শেষ হয় পাকিস্তানের শেষ স্বীকৃত ব্যাটারের উইকেট। প্রতিরোধ গড়ার স্বপ্ন ভাঙে পাকিস্তানের। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটে ৪৪৮ রান করে ইনিংস ঘোষণা করা পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংস থামে মাত্র ১৪৬ রানে। বাংলাদেশের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ৩০ রানের, যা কোনো উইকেট না হারিয়েই টপকে যায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের জয়টা মূলত ভিত গড়ে দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেন তিনি। তাকে সঙ্গ দিয়েছেন লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজ। তার আগে প্রথম ইনিংসে ৯৩ রান করেছেন ওপেনার সাদমান, ৫০ করেছেন মুমিনুল। লিটন ৫৬ ও মিরাজ ৭৭। যার সুবাদে পাকিস্তানের ৪৪৮ রান টপকে ১১৭ রানের লিড পায় বাংলাদেশ।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)