প্রসূতির রক্তের গ্রুপের ভূল রিপোর্ট দিলো সাতক্ষীরা ডায়াগনষ্টিক কমপ্লেক্সে
সাতক্ষীরার ধানদিয়া এলাকার এক প্রসূতির দুই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ল্যাবে দুই ধরনের রক্তের রিপোর্ট। একটায় ‘এবি পজিটিভ’ আর অপরটিতে ‘বি পজেটিভ। কোন ডায়াগনস্টিকের রিপোর্টটি সঠিক আর কোনটিতে ভুল? বিষয়টি নিয়ে রোগীর স্বজনরা ছিলেন দুশ্চিন্তায়। পরে অবশ্য ঠিক ও ভ’লের সমাধান হয়। ওই প্রসূতির রক্তের গ্রুপ ছিল ‘এবি পজেটিভ’।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাতক্ষীরা তালা উপজেলার ধানদিয়া ইউনিয়নের গহেরডাঙ্গা গ্রামের প্রসূতি হাফিজা খাতুনকে (৩১) গত ৩ আগষ্ট চিকিৎসক রক্ত পরীক্ষার কথা বললে তিনি স্থানীয় এক ডাক্তারের পরামর্শে রক্ত পরীক্ষা করতে যান সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের গেট সংলগ্ন সাতক্ষীরা ডায়াগনষ্টিক কমপ্লেক্সে। সেখান থেকে দেওয়া রিপোর্টে জানানো হয় হাফিজা খাতুনের রক্তের গ্রুপ ‘বি পজিটিভ’।
এরপর হাফিজা খাতুন চলে যান বাড়িতে। গত ১০ সেপ্টেম্বর হাফিজা খাতুনের অবস্থা গুরুতর হলে তার স্বজনরা হাফিজা খাতুনকে ভর্তি করেন সাতক্ষীরা স্বপ্ন ক্লিনিকে। ডাক্তার তখন জানান হাফিজা খাতুনের সিজারিয়ান অপারেশন করাতে হবে। রক্ত ম্যানেজ করে রাখেন। তখন হাফিজার স্বজনরা সাতক্ষীরা ডায়াগনষ্টিক কমপ্লেক্সের রিপার্ট অনুযায়ী বি পজেটিভ রক্ত সংগ্রহ ম্যানেজ করেন। রক্ত ম্যানেজ হলে স্বপ্ন ক্লিনিকের ডাক্তাররা রক্তের ক্রস চেক করে ম্যানেজ করা রক্তের ও হাফিজার রক্তের মিল পাননি।
তখন তারা হাফিজা খাতুনের রক্ত পরীক্ষা কওে দেখেন রক্তের গ্রুপ এবি পজিটিভ। রোগীর স্বজনরা তখন বিভ্রান্তির মধ্যে পরে রক্ত নিয়ে যান সাতক্ষীরা ডিজিটাল ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে। সেখানেও হাফিজার রক্তের গ্রুপ ‘এবি পজেটিভ’ উল্লেখ করা হয়। পরে সপ্ন ক্লিনিকে তাকে ‘এবি পজিটিভ’ রক্ত দেয়া হয় এবং সিজারিয়ান অপরেশন করানো হয়।
হাফিজা খাতুনের ভগ্নিপতি হাসান মাহমুদ (বাচ্চু) বলেন, আমার রোগীর রক্ত পরীক্ষা সাতক্ষীরা ডায়াগনষ্টিক কমপ্লেক্স ‘বি পজেটিভ’ বলে রিপোর্ট দিয়েছে। অথচ তার রক্তের গ্রুপ হবে ‘এবি পজিটিভ’। সাতক্ষীরা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এই ভূল রিপোর্টেও কারণে আমার শালিকার মৃত্যুও হতে পারতো। বিষয়টি জানতে আমি ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গেলে মালিক আামর সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করেছেন। আমি এই ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের দাবী জানাচ্ছি।
রিপোর্টে স্বাক্ষরিত সাতক্ষীরা ডায়াগনষ্টিক কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেনোলজিস্ট (ল্যাব) রোকেয়া খানম বলেন, রক্তের ভূল রিপোর্ট দেওয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে আমিই ওই রিপোর্ট করেছিলাম কিনা সেটি বলেতে পারবোনা। গত মাসে আমি ছুটিতে ছিলাম এজন্য হয়তো মালিক বা তার ছেলে আমার স্বাক্ষর করে দিয়েছেন। সাতক্ষীরা ডায়াগনষ্টিক কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, রোগীর ওই রিপোর্ট ভুল দেওয়া হয়েছে। অনেক সময় ভুল হতে পারে। পরবর্তীতে এমন ভূল আর হবেনা।
সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. শেখ সুফিয়ান রোস্তম বলেন, অতিদ্রুত অনিবন্ধিত অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)