বিডিআর বিদ্রোহ মামলার পরবর্তী শুনানি ১৯ জানুয়ারি
বিডিআর বিদ্রোহের বিস্ফোরক মামলার পরবর্তী জামিন শুনানি ১৯ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনার পর এ সিদ্ধান্ত জানান বিচারক।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এই অস্থায়ী আদালতে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা বিস্ফোরক দ্রব্য মামলার শুনানির দিন ধার্য ছিল। তবে আগুনে পুড়ে যাওয়ার কারণে এদিন মামলার শুনানি হয়নি।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি (পিপি) বোরহান বলেন, পুরান ঢাকার বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতের এজলাস কক্ষ এমনভাবে পুড়ে গেছে যে, সংস্কার না করলে এখানে বিচারকাজ পরিচালনা করা সম্ভব না।
এর আগে, বুধবার রাতে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতের এজলাসে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন দেওয়া হয়।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার বৃহস্পতিবার দুপুরে বলেন, বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ১০ মিনিটে আগুনের খবর পান তারা। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়।
বাধার মুখে তারা আগুন নেভাতে পারেননি। পরে সকাল সোয়া ১০টার দিকে তারা আবার যান সেখানে এবং দেখেন এজলাস পুড়ে গেছে। পরে তারা ফিরে আসেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে যোগাযোগ করা হলে পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট এবং এরপরে বিভিন্ন সময় বকশীবাজারের বিশেষ আদালতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। তবে বুধবার রাত কিংবা বৃহস্পতিবার সকালে আগুন লাগার কোনো তথ্য নেই তাদের কাছে।
এদিকে অস্থায়ী বিশেষ এই আদালত সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে সড়ক অবরোধ করেন আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। ১০ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে তারা সড়ক থেকে সরে যান।
এ সময় আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আদালত বসানোর প্রতিবাদ করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। তারা এ আদালত সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান।
চকবাজার থানার ওসি রেজাউল হোসেন বলেন, বিশেষ আদালতের ফটকে তালা লাগানো ছিল। বৃহস্পতিবার সকালে ফায়ার সার্ভিস এসে বিশেষ আদালতের কক্ষ থেকে অল্প কিছু ধোঁয়া বের হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের উপস্থিতিতে কিছুক্ষণ পর সেই ধোঁয়া আর দেখা যায়নি।
প্রসঙ্গত ১৫ বছর আগে ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদর দপ্তর ঢাকার পিলখানায় বিদ্রোহ সংঘঠিত হয়। বর্তমানে এই বাহিনীর নাম বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বিদ্রোহে বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। সব মিলিয়ে ৭৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। পিলখানায় বিডিআরের বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালনরত সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরাও সেদিন নৃশংসতার শিকার হন।
পিলখানায় সেই হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক মামলা হয়। এর মধ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় বিচারিক আদালত ও হাইকোর্ট ইতোমধ্যেই রায় দিয়েছেন।
অন্যদিকে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় বিচারিক আদালতে এখনো সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডে হওয়া মামলায় দণ্ডিত সাবেক বিডিআর সদস্যদের কারামুক্তি, মামলার পুনঃতদন্ত, ন্যায়বিচার নিশ্চিত, চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের পুনর্বহাল-পুনর্বাসনের দাবিতে বুধবার অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যসহ ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য-স্বজনরা এ কর্মসূচি পালন করেন। তারা শাহবাগ ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)