বিশ্বস্ত আর বিপদের বন্ধু হিসেবে সাংবাদিকরাই সেরা
যে কোনো সম্পর্কে আন্তরিক,বিশ্বস্ত এবং বিপদের বন্ধু হিসেবে সাংবাদিকরাই সেরা তাতে বিন্দুমাত্র দ্বীমত নেই। হয়ত অনেকের ধারণা,রক্ষকের কাছে সমস্ত জ্ঞান বিক্রিত৷তবে এটা সত্যি দেশে বাকস্বাধীনতা সোনার হরিণ।অন্য সব পেশায় পেশাজীবিদের বাক-স্বাধীনতা থাকলেও সাংবাদিকদের রয়েছে নানা বাধা নিষেধ এবং জীবনের ঝুঁকি। তবে সমাজে নম্র ভদ্র শান্ত স্বভাবে অন্য কারো মধ্যে কমতি থাকলেও এরা যে কাউকে সম্মান এবং ভালবাসা প্রদানে অনন্য ভূমিকা রাখেন। পারিবারিক থেকে সামাজিক ও দেশের অন্য যে কারো অপেক্ষা দ্বায়িত্বশীলতার দিক থেকে এরা অনড় এবং একজন বিচক্ষন মানুষ হিসেবে নিজেকে তৈরি করেন। একজন সংবাদ কর্মী সকল সম্পর্কে ভেদাভেদ ভুলে নিরাহংকারী ও আন্তরিকতায় সবচেয়ে এগিয়ে।
এছাড়া অন্য যে কারো দেয়া তথ্যসহ যেকোন বিষয় সম্মানের সহিত গোপন রাখতে সমাজবদ্ধ মানুষ হিসেবে অদ্বিতীয়। এরা বরাবরই মানবিক হয়ে থাকেন। অসহায় বিপদগ্রস্থ মানুষের যখন সকল দরজা বন্ধ হয়ে যায় নিঃস্বার্থে পাশে থাকতে সকল শ্রেণীর মানুষের জন্য সাংবাদিকদের দরজা সব সময় খোলা থাকে। যেটা বর্তমানে দিনের আলোর মতো পরিস্কার।সকল কিছু উপেক্ষা করে ছুটে যায় সাংবাদিকরা মানবতার টানে সমাজ ও মানুষের পাশে।
অবশ্য সল্প কিছু দুষ্টদের জন্য জ্ঞানপাপীরা সাংবাদিক জাতিকে বিভিন্ন নামে ডাকলেও, সচেতন ও সু শিক্ষিত মানুষগুলো তাদের ও তাদের কাজের পরিধি ও সম্মান যথেষ্ট বুঝতে সক্ষম হয়ে থাকেন।ভালো মন্দ মিলেই সমাজ যেহেতু খারাপ সবখানেই আছে আর এ পেশাতেও দুষ্ট লোক অবশ্যই আছে যেটার সংখ্যা খুবই কম।
অল্প সংখ্যক দুষ্টরা ব্যতীত বৃহৎ সংখ্যাটি সত্যিকার অর্থে মানবের অধিকার নিয়ে গান গাই। ওই বৃহৎ সংখ্যা কলম সৈনিকরাই সমাজে অস্ত্রধারীদের রক্ত চক্ষুকে ভয় পায় না বরং অস্ত্রবীহিন সাংবাদিকরাই ওই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে মাত্র পাঁচ টাকার কলম আর মেধা এবং অদম্য সাহসে দেশ ও মানবপ্রেম থেকে।
এছাড়া সমাজের সকল অসঙ্গতি আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকেন। সমাজ ও মানুষের সেবায় নিজেদের বিলিয়ে দেন একজন সংবাদ কর্মী খুব সহজে।সেবার দিক থেকে অন্যান্য পেশার চেয়ে বিরাট সুযোগ থাকে এই সাংবাদিকতায়। যেটা অন্য কোন পেশায় খুব একটা যুতসই হয়ে উঠেনা। আর হলেও নিঃস্বার্থে এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্যপেশাজীবিরা সেটা করে উঠতে পারেনা। সমাজের অন্য শ্রেণী পেশার মানুষের যখন কিছুই করার ক্ষমতা থাকে না, থাকে না কোনো পথ, বেলা শেষে কাঁদতে হয় অসহায় নির্যাতিত একজন মানুষকে তখনই তার জন্য আশার আলো নিয়ে আসে এই সাংবাদিকরাই।
সমাজের মফস্বল থেকে শুরু করে শহর নগরে সবচাইতে কম সম্মানী /বেতনে জীবন ধারণ করেন এরাই, মফস্বলের অনেকেই বিনা পারিশ্রমিকে এ পেশায় জড়িয়ে পড়েন নিঃস্বার্থে। সবচেয়ে বড় সত্যি সংবাদ মাধ্যম আর সাংবাদিকরা না থাকলে সমাজের হত্যা, ধর্ষণ, গুমসহ নানা অপরাধ কালো চাঁদরে ঢেকে যেতো, যেটা জাতির সামনে তুলে ধরেন এই পেশাজীবি মানুষ ও গনমাধ্যমগুলো। চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় সমাজ ও মানুষকে ভাল আর মন্দ।
অবশ্য বর্তমান সমাজে এদের গুরুত্ব ও মর্যাদা বোঝার যোগ্যতা সম্পন্ন মানুষ খুব একটা কমই মেলে। যদিও মেলে বেশিরভাগ সময় যখন কারো বিশেষ প্রয়োজন বলে মনে হয়। কারণ তারাই সমাজে একমাত্র ফ্রিতে চিকিৎসা অর্থাৎ নিঃস্বার্থে মানুষের অভিযোগ শোনে এবং বিপদের সঙ্গী হয়ে থাকেন। আর নিশ্চয়ই ফ্রিতে পাওয়ার কদর খুব একটা হয় না। আর অভিযোগ শুনা এসব মানুষগুলোর পরিবার পরিজন আছে, নানান ব্যথা থাকলেও অভিযোগ নেই তাঁদের একবিন্দু কারো কাছে। বহু কষ্ট বুকে নিয়ে নিরবে নিভৃতে কাটালেও কারো কাছে কোনো অভিযোগ তাদের থাকে না।
এছাড়া জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ ও সমাজের জন্য কিছু করতে পেরে আত্ম তৃপ্তির ঢেগুর তোলেন এই পেশার মহান ও উদর মনের মানুষগুলো। তাছাড়া রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ, জাতির বিবেক, একজন মানবাধিকার কর্মী ও অসহায় নির্যাতিত এবং বিচক্ষনতার সহিত অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী একমাত্র এই সাংবাদিকরাই।
কিন্তু দুঃখের বিষয়, সমাজের অনেকেই অকৃতজ্ঞের মত ভুলে যায় এরাও মানুষ। এ সমাজ ও জ্ঞানপাপী মানুষেরা ভুলে যায় সাংবাদিকরা কারো না কারো সন্তান, কারো না কারো ভাই, কারো না কারো স্বামী এবং সেও একজন ঘরে থাকা ফুটফুটে সন্তানের বাবা।
অনেক সময় রাষ্ট্রও ভুলে যাই তাদেরও জীবন মানের কথা, নিরাপত্তার কথা, যেদিকটা বিবেচনায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অতিব জরুরি নীতি নির্ধারকদের। আর এদিকে সমাজের অপরাধী ও দুর্নীতিবাজদের কথা না বললেই নয়, তাদের মিথ্যা হামলা মামলার বলি হওয়া সমাজে সাংবাদিকদের জীবনে নিত্য নৈমেত্তিক ব্যাপার।
সারাটি জীবন এই উদর ও মহান হৃদয়ের অধিকারী সাংবাদিকরা অবহেলা আর হুমকি, নির্যাতনের স্বীকার হয় সমাজের অসাধুদের কাছ থেকে। তাছাড়া মিথ্যা হামলা মামলায় বহু সাংবাদিক সর্বশান্ত এমনকি মৃত্যু ও নিখোঁজ পর্যন্ত হয়েছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ পায়। তবুও এরা সত্য প্রকাশে নির্ভয় জীবন পাড়ি দিয়ে সাংবাদিকতায় সম্মানকে অক্ষুন্য রাখেন।
সমাজ ও মানুষের জন্য কাজ করতে আজও তারা কেউ নিরাপদ নয় বরং জীবনের বহু সংকটের মুখে পড়তে হয় তাদের। তবুও পিছিয়ে না থেকে সমাজ ও মানুষের সেবা এবং দেশের উন্নয়ন সম্ভবনা তুলে ধরা নিয়ে এগিয়ে চলেছেন সমাজের এই অন্যতম হিরো সাংবাদিকরা।
এরাই মানবতার গান গাই। যারা সমাজে অন্যতম বিশ্বস্ত আর বিপদের বন্ধু এবং যেকোন শ্রেনী পেশার মানুষকে সম্মান ভালবাসা প্রদানে অন্যতম নিদর্শন হয়ে থাকেন। অবশ্য হাতের পাঁচটি আঙুল যেমন সমান নয় ঠিক তেমনি এরাও সবাই এক নয়, ভাল মন্দ সবার মধ্যেই আছে আর একঘেয়েমী প্রশংসার কারো কাম্য নয়। তবে আজও জানা যায় নি একজন সাংবাদিকের পিতা অথবা মাতার বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই নিতে হয়েছে।
সেক্ষেত্রে বলা যায় একজন সংবাদ কর্মী আর্থিক ভাবে দুর্বল হলেও মানবিক এবং যোগ্য সন্তান হিসেবে সেরা হয়ে থাকেন। অন্যদের থেকে ভাবনা চিন্তায় অন্যতম এবং এ নিয়ে বহু আলোচনা থাকলেও,সর্বশেষ বলা যায়, ভাল একজন শ্রোতা সে,সুখ দুঃখের অন্যতম সাথী হিসেবে অন্যদের থেকে সেরা। প্রেম ভালবাসা আর জীবন সঙ্গী হিসেবেও একজন সাংবাদিক স্বামী তার স্ত্রীর কাছে সেরা হয়ে থাকবেন।
সর্বোপরি একজন সাংবাদিক বিচক্ষনতার সহিত পরিবার থেকে শুরু করে এলাকা ও সমাজের ভাল উন্নত চিন্তাশীল অভিভাবক হিসেবে অন্যতম ভুমিকা পালন করে থাকেন।
লেখক:
প্রবাসী, গণমাধ্যম কর্মী, কলারোয়ার সন্তান
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)