ভালো চাকরির প্রলোভনে সুন্দরীদের মধ্যপ্রাচ্যে ড্যান্স ক্লাবে দেহব্যবসায় বাধ্য করাতো
ভালো চাকরির প্রলোভন দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরী তরুণীদের মধ্যপ্রাচ্যে পাচার করেছে ওরা। ভুক্তভোগী ওইসব তরুণী জীবন-পরিবার নিয়ে সুখ স্বপ্ন দেখলেও বিদেশে যাওয়ার পর দেখেছেন অন্য পৃথিবী।
দুবাই, কাতার, ওমানের বিভিন্ন ড্যান্স ক্লাব এবং মিনি পতিতালয়ে বিক্রি করে দেওয়া হতো ওদের। এক পর্যায়ে জীবন এবং জীবিকার প্রয়োজনে ওইসব কাজে বাধ্য হতেন তারা। দেহের জৌলুস ফুরিয়ে গেলেই কেবল মুক্তি মিলে তাদের। এমন ৮০ জন সুন্দরী তরুণীকে পাচারের পর সবশেষ তিনজনকে পাচারের সময়ই মুখোশ উন্মোচন হয় তাদের। রবিবার রাতে বিমানবন্দর এলাকা থেকে ওই সিন্ডিকেটের তিন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করে র্যাব-১ এর একটি দল। উদ্ধার করা হয় ভুক্তভোগী তিন নারীকে।
রাজধানীর উত্তরায় র্যাব-১ সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আবদুল্লাহ আল-মোমেন।
তিনি বলেন, রবিবার রাত ৮টায় বিমানবন্দর এলাকার মনোলোভা রেস্টুরেন্টের উল্টো পাশে অভিযান চালিয়ে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য আজিজুল হক, মোছলেম উদ্দিন ওরফে রফিক ও কাউছারকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩টি পাসপোর্ট, ৩টি মোবাইলফোন এবং নগদ ২৭ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া পাচারের শিকার হতে যাওয়া ৩ নারীকে উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-১ অধিনায়ক বলেন, দুবাইয়ে অবস্থান করা মহিউদ্দিন ও শিল্পী দুবাইয়ে নারী পাচারের হোতা। এ ছাড়াও দেশে আরও দুজন হোতা রয়েছেন, তারা হলেন- নূর নবী ওরফে রানা এবং মনজুর হোসেন। এরা পলাতক। আর আটক আজিজুল হক মানব পাচার চক্রের অন্যতম সমন্বয়ক। পলাতক তাহমিনা বেগম, আটক রফিক ও কাউছার কম বয়সী সুন্দরী মেয়েদের টার্গেট করতেন। অতঃপর বিভিন্ন কোম্পানি ও গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে বিদেশে নিয়ে যেতেন। তারা এ পর্যন্ত প্রায় ৮০ জন নারীকে এভাবে বিদেশে পাচার করেছে।
কথা হয় ভুক্তভোগী এক নারী রুমানার (২২) সঙ্গে (ছদ্মনাম)। তিনি বলেন, তিনি আগে রাজধানীর একটি বেসকারি কোম্পানিতে কাজ করতেন। দালাল চক্রের কাউসারের সঙ্গে তার পরিচয় হয় তাদেরই অফিসে। সেখানেই সে তাকে ওমানের একটি হাসপাতালে ৮০ হাজার টাকা বেতনে আকর্ষণীয় বেতনে চাকরির অফার দেয়। বছরে একবার এক মাসের ছুটির কথা বলে। যাওয়ার আগে এক মাসের বেতনের কথাও তাকে দেওয়ার কথা বলে কাউসার।
তবে কভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য গেলে এক নারী তাকে বলেন, বিদেশে গিয়ে অনেকেই প্রতারিত হয়েছে। তার মনে সন্দেহের উদ্রেক হয়। পরে তার এক আত্মীয়কে এ বিষয়টি অবহিত করেন। হয়তো আত্মীয়ই কোনোভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের তার বিষয়ে অবহিত করেছেন। প্লেনে উঠে গেলেই হয়তো তার জীবন অন্য রকম হয়ে যেতে পারত।
পরে র্যাব কর্মকর্তা মোমেন বলেন, আমাদের কাছে আরও কয়েকটি অভিযোগ এসেছিল এই চক্রের বিষয়ে। পরে আমরা মাঠে নামি। বেরিয়ে আসে তাদের সব অপকর্মের কাহিনি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)