শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরা, দেশ ও বিশ্বের সকল সংবাদ, সবার আগে

যুক্তরাষ্ট্রের যে কারণে বাংলাদেশের নির্বাচনে মাথা ঘামানো উচিত নয়

আরব বিশ্বসব সময়ই কোনোনা কোনোভাবে যুক্তরাষ্ট্রেরগণতন্ত্র ও মানবাধিকারেরআলোচনার বাইরেই থেকে যায়। একরিপোর্টে দেখা গেছে, বিশ্বজুড়ে ৮০টির মতো দেশেযুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। মজারব্যাপার, এসবের অর্ধেকের বেশিদেশে গণতান্ত্রিক শাসননেই।

নির্বাচনেরদিন যেহেতু ঘনিয়েআসছে, শেখ হাসিনারউচিত হবে অত্যন্তসতর্কতার সঙ্গে বিষয়টি মোকাবিলাকরা। তবেব্যাপকমাত্রায় হস্তক্ষেপের সম্মুখীন হয়েও শেখহাসিনা রাখঢাক করেননি।সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রপ্রসঙ্গে বলেছেন, ‘তারা গণতন্ত্রহরণের চেষ্টা করছে এবংএমন একটি সরকারআনতে চাইছে যাদেরগণতান্ত্রিক ভিত্তি নেই। এটি করাহলে তা অগণতান্ত্রিকহবে।’

সম্প্রতিযুক্তরাষ্ট্রসহ চারটি দেশের কূটনীতিকেরওপর থেকে ‘অতিরিক্তপুলিশ’ প্রটোকল প্রত্যাহারের ঘোষণাদিয়েছে বাংলাদেশ। অনেকেআমেরিকার সাম্প্রতিক ভিসানীতিকে এঘটনার প্রতিশোধ হিসেবেও দেখছেন। এছাড়া সম্প্রতি বাংলাদেশেরপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাযুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেনযে, দেশটি (আমেরিকা) হয়তো তাঁকে ক্ষমতায়দেখতে চায় না। এঅভিযোগ শুধু শেখ হাসিনারইনয়, বিশ্বজুড়েই বিভিন্নদেশের ক্ষমতার পালাবদলের ক্ষেত্রেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাক গলানোরইতিহাস আরও জটিল।

বিশ্বজুড়েমার্কিন স্বার্থবিরোধী হওয়ার কারণে অথবাগণতন্ত্রের প্রয়োজনের কথা বলেকিংবা কর্তৃত্ববাদী সরকার থাকলে সেসবদেশের ‘সরকার পতনে’ ঐতিহাসিকভাবেযুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টতার নজির রয়েছে।এ ক্ষেত্রে উল্লেখকরা যেতে পারেহাওয়াই, কিউবা ও ক্যারিবিয়ানদেশগুলোর কথা।এসব দেশের ক্ষেত্রেমার্কিন সংশ্লিষ্টতা বা কলকাঠিনাড়ার মাত্রা অনেকটাই সরাসরিছিল।

কিন্তুদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৭সালে মার্কিন কেন্দ্রীয়গোয়েন্দা সংস্থা ‘সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্সএজেন্সি (সিআইএ)’ প্রতিষ্ঠার পরথেকে আমেরিকা তাদেরএসব কর্ম বেশগোপনেই সারছে। পরেরদুই দশকের মধ্যে১৯৫৩ সালে ইরানে, ১৯৫৪ সালে গুয়েতেমালায়ও ১৯৬৩ সালেদক্ষিণ ভিয়েতনাম তার উদাহরণ।

২০০০সালে যুগোস্লাভিয়ার প্রেসিডেন্টস্লোবোদান মিলোসেভিচের পতন ও২০০৩ সালের ইরাকআক্রমণে সিআইএ’র ভূমিকাঅনেকটাই স্পষ্ট। অথচযুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তাউপদেষ্টা বিগনিউ ব্রেজেনস্কি সেসময় জর্জ ডব্লিউবুশকে বোঝাতে চেয়েছিলেন, সন্ত্রাসবাদেরবিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে হাতিয়ার হিসেবেব্যবহার বিপজ্জনক হতে পারে।

যাইহোক, আমেরিকার কোনোহস্তক্ষেপই হয়তো একক ফ্যাক্টরেরওপর ভিত্তি করেকরা হয়নি।যদিও দৃশ্যমান পদক্ষেপগুলোমানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে বাগণতন্ত্রীকরণের লড়াই হিসেবে আখ্যাদেওয়া হতে পারে, অনেক ক্ষেত্রেই এরঅন্তর্নিহিত কারণগুলো মূলত নিজেদেরস্বার্থে। অতীতেবিশ্বব্যাপী প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতাতাৎপর্যময় হয়ে উঠেছিল। যেমনস্নায়ুযুদ্ধের সময় মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েতইউনিয়ন আধিপত্য বিস্তারের প্রতিদ্বন্দ্বিতায়লিপ্ত হয়েছিল। তখনসোভিয়েত জোটপন্থি ভারতকে মোকাবিলাকরতে পাকিস্তানের মতোদেশগুলোকে সমর্থন দিয়েছিল আমেরিকা।

একইভাবেদক্ষিণ এশিয়ায় প্রবেশ করেছেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কারণ এখানে তারভূরাজনৈতিক স্বার্থ জড়িত।যেমন দক্ষিণ এশিয়ারকৌশলগত অবস্থান, এখানকার মূল্যবানসম্পদ, বাণিজ্যপথ, বাজার, নিরাপত্তাএবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা। আফগানিস্তানেরমতো দেশে সন্ত্রাসবিরোধীপ্রচেষ্টা, বাংলাদেশের মতো দেশেমানবিক উদ্বেগ এবং চীনেরমতো দেশের অর্থনৈতিকউদ্বেগ। এসবকারণেই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয়হস্তক্ষেপের সিদ্ধান্তের প্রতি ঝুঁকেছে মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র।

দক্ষিণএশিয়ায় ভারতের উত্তর-পশ্চিমসীমান্তবর্তী পাকিস্তান ও আফগানিস্তানকেএকটি অনিশ্চিত অবস্থানেরদিকে ঠেলে দেওয়াহয়েছে। বর্তমানেএ দুই দেশেবিশৃঙ্খলা এতটাই বড় আকারধারণ করেছে যে, সম্ভবত সেখানকার ভূরাজনৈতিক পতনইরাকের পরে সবচেয়েজটিল হিসেবে চিহ্নিতহবে।

আফগানিস্তানে ‘মার্কিনপন্থি গণতান্ত্রিক’ সরকার বসানোর কয়েকদশকের চেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিতহলে, সেখান থেকেবেরিয়ে যাওয়ার মার্কিন সিদ্ধান্তআফগানিস্তানের জনগণকে শুধু হতাশইকরেনি বরং এঅঞ্চলের সমগ্র নিরাপত্তাকেই হুমকিরমুখে ঠেলে দেয়। বিশ্বেরজন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রতার নৈতিক প্রতিশ্রুতিথেকে নিজেকে প্রত্যাহারকরে নিয়েছিল, কিন্তুসেখানে তাদের একটি বড়উদ্দেশ্য ছিল যাতারা ঠিকই সাধনকরেছিল।

প্রেসিডেন্টবাইডেন আমেরিকার জনগণকে বুঝিয়েছেন, ওসামা বিন লাদেনএবং অন্য মার্কিনবিরোধীসন্ত্রাসীদের নিশ্চিহ্ন করতে আফগানিস্তানেতাদের যে মিশন, তা সফল হয়েছে। অথচযুক্তরাষ্ট্রের কাছে এটি উদ্বেগেরবিষয় বলে মনেহয়নি যে, তারাআফগানিস্তান থেকে যখন বেরিয়েযাচ্ছে, তখন তালেবান২০০১ সালের চেয়েওঅনেক বেশি শক্তসামরিক অবস্থানে ছিল। তখন তারাদেশের প্রায় অর্ধেক এলাকানিয়ন্ত্রণ করছিল। আর ওইসব জায়গায় আমেরিকারসৈন্য ছিল সংখ্যায়খুবই নগণ্য।

প্রতিবেশীপাকিস্তানও বাদ পড়েনি। ইমরানখান যেমন একবারবলেছিলেন যে মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র কেবল পাকিস্তানকে তাদেরসমস্যা দূর করারজন্য দরকারি বলেমনে করে। তারা আফগানিস্তানে নিজসৈন্যদের রসদসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয়জিনিস সরবরাহে পাকিস্তান হয়েযাতায়াতের সুযোগ ব্যবহার করেছিল। বৈরিতারকারণে ইরান কিংবা রাশিয়াপন্থিউত্তরের দেশগুলো দিয়ে সেখানেপ্রবেশ করতে পারেনি তারা। কিন্তুপাকিস্তান প্রথম থেকেই একটিভিন্ন গল্পের শিকার হয়েছে।

ব্যাপকভাবেসাহায্যনির্ভর পাকিস্তানে ৩ হাজারকোটি ডলার ব্যয়করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আরএটি করেছে শুধুআফগানিস্তানে তাদের সমর্থন দেওয়ারজন্য। অভিযোগরয়েছে, পাকিস্তানে মোশাররফের স্বৈরশাসনেরসময় গণতান্ত্রিক উত্তরণসংক্রান্তকোনো ধরনের চুক্তিছাড়াই প্রায় ১ হাজারকোটি ডলার সাহায্যকরেছিল বুশ প্রশাসন। আরএ সহায়তার বেশিরভাগই গিয়েছিল সামরিকবাহিনীতে। আরএ ঘটনা তৎকালীনপশ্চিম পাকিস্তানের প্রতি মার্কিন সমর্থনেরঘটনাও স্মরণ করিয়ে দেয়। অথচতারা তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানে (বর্তমানে বাংলাদেশ) গণহত্যারজন্য দায়ী ছিল। ১৯৭১সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধেযুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিকস্বৈরাচারী শাসনকে সমর্থন করেছিল, যদিও তখন ঢাকারমার্কিন কনস্যুলেট জেনারেল দিয়েছিলেনভিন্ন পরামর্শ।

বাস্তবতাহলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রএবং অন্য পশ্চিমাশক্তিগুলো তাদের উচ্চাভিলাষী দৃষ্টিকোণথেকে এ অঞ্চলকেদেখে। তারানৈতিকতার দোহাই দিয়ে ঢোকেআর যাওয়ার সময়নিজস্বার্থে চম্পট দেয়। আফগানিস্তান এর উজ্জ্বলউদাহরণ।

সুতরাংএটা স্পষ্ট যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে তার আধিপত্যনিশ্চিত করতে চাইছে।বাইডেন প্রশাসন অনেকবার গণতন্ত্রেরমূল্যবোধের কথা বলেনিজেকে ‘মুক্তবিশ্বের’ নেতা বলে জাহিরকরেছে। কিন্তুগণতন্ত্র নিশ্চিত করার জন্যতাদের পর্যবেক্ষণ, চাপ এবংনিষেধাজ্ঞা সারা বিশ্বে সমানভাবেপ্রযোজ্য বলে মনেহয় না।

বিচারবহির্ভূতহত্যা ও গুমেরঅভিযোগে র‌্যাব কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞাদিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপরআবার ঢাকায় নিযুক্তমার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসসম্প্রতি নিখোঁজ বিএনপি নেতাসাজেদুল ইসলাম সুমনের বাড়িতেগিয়ে তার ভুক্তভোগীপরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখাকরেছেন। এসবেবোঝা যায়, বাংলাদেশেগভীরভাবে দৃষ্টি রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এক্ষেত্রে ভারতকে পরিস্থিতি গুরুত্বেরসঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। আফগানিস্তানও পাকিস্তানে মার্কিনহস্তক্ষেপের ফলে ভারতেরউত্তর-পশ্চিম সীমান্তবর্তী এলাকানাজুক পরিস্থিতির মুখে রয়েছে। একইভাবেউত্তর-পূর্ব সীমান্তের ওপারেতেমনটি হলে আরওজটিলতা দেখা দিতে পারে।
বিশ্ববাসীরজন্য এখন আরমোড়ল রাষ্ট্রের কোনোপ্রয়োজন নেই।কেননা বর্তমান বিশ্ব প্রতিনিয়তপরিবর্তনশীল। সুতরাংযুক্তরাষ্ট্রের উচিত স্থানীয় জনগণকেইতাদের নিজেদের ভালোমন্দ নির্ধারণেস্থানীয় জনগণের সক্ষমতার ওপরআস্থা রাখা।এতদসত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র যদি ‘মুক্তবিশ্বের’ নেতারভূমিকা পালনের জন্য জেদিহয়, তাহলে তাদেরপরামর্শ দেওয়া যায় যে, তারা ওই নেতাগিরিটাআফগানিস্তান দিয়েই শুরু করুক।

লেখক : ডিস্টিংগুইশড ফেলো, ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন
(৫জুন, ২০২৩ ইন্ডিয়াটুডেতে প্রকাশিত)

একই রকম সংবাদ সমূহ

‘লাইলাতুল কদরে প্রত্যেক বরকতপূর্ণ বিষয় অবতীর্ণ হয়’

‘লাইলাতুল কদরে প্রত্যেক বরকতপূর্ণ বিষয় অবতীর্ণ হয়’ আলহাজ্ব প্রফেসর মো. আবু নসরবিস্তারিত পড়ুন

পাপ মুক্তি ও রহমতের রজনী ‘পবিত্র শবে বরাত’

পাপ মুক্তি ও রহমতের রজনী ‘পবিত্র শবে বরাত’ আলহাজ্ব প্রফেসর মো. আবুবিস্তারিত পড়ুন

বাংলা ভাষার জন্য বাঙালিদের আত্মত্যাগ বিশ্বের দৃষ্টান্ত

বাংলা ভাষার জন্য বাঙালিদের আত্মত্যাগ বিশ্বের দৃষ্টান্ত প্রফেসর মো. আবু নসর ৫২’রবিস্তারিত পড়ুন

  • সাতক্ষীরার প্রথম মহকুমা প্রশাসক নওয়াব আব্দুল লতিফ
  • A visionary leader committed to serving the constituents of Satkhira-1
  • সবুজ হোসেন-এর কবিতা “কুয়াশা”
  • আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও আমাদের ভাবনা
  • বিশ্বের দৃষ্টি এখন বাংলাদেশের দিকে
  • বদলে যাওয়া বাংলাদেশের গল্প
  • আওয়ামী লীগের ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই : রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হারুন-অর-রশিদ
  • বর্তমান ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান
  • প্রধানমন্ত্রীর সফলতা ও জাতীয় উন্নয়ন
  • যশোর শিক্ষা বোর্ডের আইসিটি বিষয়ের প্রশ্নপত্রে পাঠ্যপুস্তক-বহির্ভূত প্রশ্ন!
  • ছিলো নদীবন্দর: কলারোয়ার চান্দুড়িয়ায় স্থলবন্দর চালুর দাবি
  • বহু ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর সাক্ষী আশুরা