যুক্তরাষ্ট্রে কলারোয়ার যুবক হত্যা: আরেকজনকে খুঁজছে পুলিশ
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী শেখ আবির হোসেনকে (৩৮) গুলি করে হত্যার ঘটনায় কিয়ান্ডার রবিনসন নামে এক তরুণকে গ্রেফতারের পর আরেকজন সন্দেহভাজনকে খুঁজছে পুলিশ।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে বিউমন্ট পুলিশ।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) টেক্সাসের বিউমন্টে একটি দোকানে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী আবির হোসেন। গত বছরের জানুয়ারিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যান। লামার ইউনিভার্সিটিতে গবেষণা সহকারী ছিলেন তিনি।
নিহত আবির হোসেন (৩৮) সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড ঝাপাঘাট গ্রামের মৃত শেখ আজিজুল হাকিমের ছেলে।
জানা গেছে, আবির টেক্সাসের ক্রিস ফুড মার্টে নিহত হন। সেখানে তিনি স্টোর ক্লার্ক হিসেবে কাজ করতেন। দোকান থেকে সিগারেট নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় দুই সন্দেহভাজন তাকে গুলি করে।
স্থানীয় টিভি চ্যানেল কেএফডিএম জানায়, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আবিরকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়।
বিউমন্ট পুলিশ বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বিউমন্টের ক্রিস ফুড মার্টে শুক্রবার রাত ১০টা ৯ মিনিটে (স্থানীয় সময়) গুলিবিদ্ধ আবিরকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়, শুধুমাত্র সিগারেট চুরি করতে গিয়ে আবিরকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ফুটেজ দেখে সন্দেহভাজন দুজনকে খুঁজতে মাঠে নামে পুলিশ। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে গ্রেফতার করা হয় কিয়ান্ডার রবিনসনকে।
কালো রঙের জিনস ও হুডি পরা সন্দেহভাজন আরেকজনকে খুঁজছে পুলিশ। তাকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে, সাতক্ষীরার কলারোয়ার স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ৩ বোন ৫ ভাইয়ের মধ্যে মধ্যে নিহত আবির সবার ছোট। ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে আবির হোসেন স্কলারশিপ নিয়ে আমেরিকায় পাড়ি জমান। সেখানে তিনি টেক্সাস থাকতেন ও লামওয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা করতেন।
পাশাপাশি একটি শপিংমলে কাজ করতেন বলে জানিয়েছেন তার মা আনজুয়ারা বেগম।
আবিরের মেজো ভাই শেখ জাকির হোসেন জানান, ৩০ ডিসেম্বর তার সাথে আমার মোবাইল ফোনে কথা হয়েছিলো, সে ভালোই ছিলো। হঠাৎ কিছু সময় পর তার শালীকা আমাকে ফোন দিয়ে বলেন ভাইয়া, আবির ভাই আর নেই। একদল সন্ত্রাসী আবির ভাইয়ের শপিংমলে ডাকাতি করতে ঢোকে। আবির ভাই বাধা দিতে গেলে তারা আবির ভাইয়ের মাথায় ২টি ও বুকে ১টি গুলি করে। ঘটনাস্থলে আবির ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত আবিরের স্ত্রী সানজিদা আলম মজুমদার ২ বছরের কন্যা সন্তান নিয়ে নিউওয়ার্কে তার মা বাবার কাছে থাকে।
নিহতের ছোট বোন আবেদা খাতুন বলেন, আমরা ভাই খুব ভালো ছাত্র ছিলো। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলো। গত বছর ৩০ ডিসেম্বর স্কলারশিপ নিয়ে আমেরিকায় যান, আর গতকাল ছিলো সেই ৩০ ডিসেম্বর। ১ বছর পূর্ণ হলো, ঠিক সেই দিন আমেরিকার সময় আনুমানিক রাত ১০টায় আমার ভাইকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করেছে। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।
নিহতের বড় বোন মরিয়ম বেগম বলেন, আমার ভাইকে তো তারা মেরে ফেলেছে। সরকারের কাছে আমাদের চাওয়া ভাইয়ের লাশটা যেন তাড়াতাড়ি আমাদের কাছে দিয়ে দেয়।
এলাকাবাসী শেখ মনিরুল ইসলাম জানান, আবির ভাই খুবই ভালো মানুষ ছিলেন। এলাকার অসহায় মানুষের আপদে বিপদে তিনি সব সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন। ভাই যে মারা গেছে এটা আমরা মানতে পারছিনা। এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আমরা আবির ভাই হত্যার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)