শেখ তাপসের সন্ধান দিলেন ডিবি হারুন!


আওয়ামী লীগ শাসিত সরকার পতনের আগেই অনেক মন্ত্রী-এমপি, বড় বড় রাজনীতিবিদরা গা ঢাকা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়ে জেল খাটছেন। বেশিরভাগই পালিয়ে বিদেশ চলে গেছেন। সম্প্রতি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের অবস্থান নিয়ে মানুষের মনে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগ পুনর্গঠিত হলে তিনি নেতৃত্ব দেবেন বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুঞ্জন চলছে। এর মধ্যেই শেখ তাপসকে নিয়ে নতুন তথ্য দিলেন সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ।
গত ৭ এপ্রিল কানাডার নাগরিক টিভির বার্তা প্রধান নাজমুস সাকিবের এক প্রতিবেদনে সম্প্রচার করা হয় সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের একটি কল রেকর্ড। সেখানে হারুনকে বলতে শোনা যায়, সিঙ্গাপুরে আছেন শেখ তাপস।
জানা গেছে, গত বছর ৩ আগস্ট ঢাকা ছাড়েন শেখ তাপস। সেদিন তাকে বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হলে তিনি তার পরিবারকে যুক্তরাজ্যে পাঠিয়ে দেন। এরপর রাতের ফ্লাইটে সিঙ্গাপুর চলে যান শেখ তাপস। এখনো তিনি ভিসা ছাড়াই সিঙ্গাপুরে থাকছেন।
শেখ তাপসের বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। হাজার হাজার কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগসহ নানা ঘটনায় বিতর্কিত তিনি। দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলাও চলছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হত্যাচেষ্টা মামলারও আসামি তাপস। সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ করেছেন পিলখানা হত্যাযজ্ঞে নিহত মেজর শাকিলের ছেলে রাকিন আহমেদ। তিনি দাবি করেছেন, ১৫ বছর আগে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে সাবেক শেখ ফজলে নূর তাপসসহ অনেকে সরাসরি যুক্ত ছিলেন।
এর আগে, ২০২৩ সালে একশ কোটি টাকার মানহানির ক্ষতিপূরণ চেয়ে ব্যাপক সমালোচিত হন ব্যারিস্টার তাপস। সে বছর ১৩ মে ডেইলি স্টারে প্রকাশিত এক রম্য রচনায় মানহানি করা হয়েছে দাবি করে একশ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক এই মেয়র। ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামসহ তিন জনের নামে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান তিনি। এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একশ কোটি টাকা দামের মেয়র বলে সম্বোধন করা হতো তাকে।
২০২৩ সালের শুরুর দিকে সড়কের গাছ কেটে নেতিবাচক আলোচনায় আসেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। রাজধানীর সাত মসজিদ সড়কে গভীর রাতে গাছ কেটে ফেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। গাছ কাটা বন্ধ করতে মেয়রের সঙ্গে দেখা করতে গেলে শেখ তাপসের নির্দেশের পরিবেশবিদ, বর্তমান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে নগর ভবনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তখন এ নিয়ে নানা মহলের সমালোচনা, বিক্ষোভ সমাবেশের পর গাছ কাটা বন্ধ রাখা হয়।
পরের বছর ২০২১ সালে জানুয়ারিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র থাকার যোগ্য নয় বলে দাবি করেন সংস্থাটির সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। তিনি বলেছেন, ‘তাপস দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শত শত কোটি টাকা তার নিজ মালিকানাধীন মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তরিত করেছেন। এই টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লাভ করেছেন।
এছাড়া একজন প্রধান বিচারপতিকে নামিয়ে দিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি’র মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
২০২৩ সালে মে মাসে তার এই বক্তব্য আদালত পর্যন্ত গড়ায়। তাপস বলেছিলেন, ‘মনটা চায় আবার ইস্তফা দিয়ে ফিরে আসি। যেখানে মুগুর দেওয়ার সেটাও জানি। একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম। মশিউজ্জামানকে (বারের গত নির্বাচনের সাব কমিটির প্রধান) আমরা মনে করতাম, ওরে বাবা, কী জানি ফেরেস্তা আসছে। সবচেয়ে বড় চোর হলো মশিউজ্জামান। যে সকল সুশীলরা আমাদেরকে বুদ্ধি দিতে যাবেন সেই সকল সুশীলদের আমরা বস্তায় ভরে বুড়িগঙ্গা নদীর কালো পানিতে ছেড়ে দেবো।’
তথ্যসূত্র: ইত্তেফাক

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
