শেখ হাসিনা-কামালের নির্দেশেই জুলাই-আগস্ট গণহ*ত্যা : সাবেক আইজিপি মামুন


শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নিদের্শেই জুলাই-আগস্ট গণহত্যা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের জবানবন্দিতে এ কথা বলেন তিনি।
জবানবন্দিতে তিনি বলেন, গত বছরের (২০২৪) ১৮ জুলাই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ফোনকলের মাধ্যমে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশে পুলিশ প্রাণঘাতী অস্ত্র (লেথাল উইপেন) ব্যবহার শুরু করে।
সাবেক আইজিপি জানান, সে সময় তিনি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে ছিলেন এবং তার সঙ্গে অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় কুমার জোয়ার্দার উপস্থিত ছিলেন। নির্দেশনার বিষয়টি জানানোর পর প্রলয় কুমার ডিএমপি কমিশনারসহ সারাদেশের পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে এ বার্তা পৌঁছে দেন। এরপর থেকেই আন্দোলন দমনে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার শুরু হয়।
জবানবন্দিতে মামুন আরও বলেন, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, ফজলে নূর তাপস, সালমান এফ রহমান, ওবায়দুল কাদের, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, মির্জা আযম, হাসানুল হক ইনু ও রাশেদ খান মেননসহ কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা প্রধানমন্ত্রীকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের জন্য প্ররোচিত করেছিলেন।
জবানবন্দির একপর্যায়ে তিনি আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবার এবং দেশবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান। এত বড় গণহত্যা তার দায়িত্ব পালনের সময় সংঘটিত হয়েছে, যার জন্য তিনি দোষ ও দায় স্বীকার করছেন। তিনি দেশবাসী, নিহত ও আহতদের পরিবার এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
এর আগে, সকালে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণের পর দুপুরের বিরতিতে আদালত কার্যক্রম স্থগিত হয় এবং বিকেলে তিনি পুনরায় জবানবন্দি দেন। তিনি তার নিজের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের ১১তম দিনে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
প্রসিকিউশন সূত্রে জানা যায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ ক্যামেরা ট্রায়ালে জবানবন্দি দেওয়া হয়েছে। মামলাটিতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। আজ মামলার ১১তম দিনে এক সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। এর আগে এ মামলায় মোট ৩৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
গত ১০ জুলাই চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ট্রাইব্যুনালে নিজের দায় স্বীকার করে এই মামলায় স্বপ্রণোদিতভাবে রাজসাক্ষী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন এবং একই সঙ্গে সব দায় স্বীকার করেন। এ মামলায় গত ৩ আগস্ট থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৫ সাক্ষী জবানবন্দি দিয়েছেন। সাক্ষীদের বক্তব্যে গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় দেশজুড়ে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের বীভৎস চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। শহীদ পরিবারের সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা এসব ঘটনার জন্য শেখ হাসিনা, কামালসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)

একই রকম সংবাদ সমূহ

ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত করছে ইসি
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্যানেল প্রস্তুত করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্যানেলবিস্তারিত পড়ুন

২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন সাবেক আইজিপি মামুন
২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগের রাতে ৫০ শতাংশ ভোট ব্যালট বাক্সে ভরারবিস্তারিত পড়ুন

বিচার বিভাগের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ফিরলো সুপ্রিম কোর্টে
এখন থেকে সারাদেশের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলার দায়িত্ব সুপ্রিম কোর্টের হাতে থাকবেবিস্তারিত পড়ুন