সাতক্ষীরায় কন্যা সন্তানের পিতৃ পরিচয় ও স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে অসহায় আরিফা
কখনো সুদিন আসিনি আরিফা’র জীবনে। কন্যা সন্তানে পিতৃ পরিচয় ও স্ত্রীর মর্যাদা পেতে চার বছরের কন্যা ও স্বামীর ছবি হতে নিয়ে দারে দারে ঘুরছেন সাতক্ষীরার আরিফা খাতুন (২৩) নামের এক নারী। আরিফা খাতুনের বাড়ি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভোমরা লক্ষীদাঁড়ী গ্রামে। তার পিতার নাম মোঃ ফজলু দফাদার।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সকালে কন্যা সন্তানের পিতৃ পরিচয় ও স্ত্রীর মর্যাদা ফিরে পেতে নিরুপায় হয়ে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের দারস্থ হন আরিফা খাতুন। এসময় আরিফা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৮ সালে সদরের গাংনিয়া সুড়িঘাটা গ্রামের মোঃ জিয়ারুল ইসলাম এর ছেলে সাইফুদ্দিনের সাথে বিয়ে হয় তার। বিয়ের কিছুদিন যেতেই তিনি বুঝতে পারেন স্বামী সাইফুদ্দিন শারিরীক ভাবে অক্ষম। স্বামী শারীরিক অক্ষম হওয়ায় তিনি বাবার বাড়ি ভোমরা লক্ষীদাঁড়ীতে ফিরে যায়। কয়েক দিন পর শশুর মোঃ জিয়ারুল ইসলাম আরিফার বাবার বাড়িতে গিয়ে তার ছোট ছেলে মোঃ শরিফুল ইসলাম এর সাথে পুনরায় বিয়ে দিবে বলে বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন আরিফাকে।
সেই থেকে আরিফার সাথে দেবর শরিফুলের পরিবারের সবার সম্মতিতে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ-সম্পর্কের জেরে এক বছর পর শরিফুলের ঔরসে আরিফার কোলজুড়ে জন্ম নেয় কন্যা সন্তান। এখন সেই কন্যা সন্তানের বয়স চার বছর।
বড় ভাই সাইফুদ্দিন এর স্ত্রী হলেও শশুর শাশুড়ির চাপে দেবর শরিফুলের সাথে স্বামী স্ত্রী’র মত সংসার করতে থাকেন আরিফা খাতুন। এতো দিন সব কিছুই চলছিল ঠিকঠাক হঠাৎ দেবর শরিফুল অন্য মেয়েকে বিয়ে করতে চাইলে দেখা দেয় বিপত্তি। এসময় বিয়ের জন্য চাপ দিলে দেবর শরিফুলকে বাড়ি থেকে সরিয়ে দিয়ে আরিফাকে কন্যা সন্তানসহ বাড়ি থেকে বের করে দেয় শশুর জিয়ারুল ইসলাম। এমনি অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী আরিফা খাতুন।
পরে সাতক্ষীরা সদর থানায় অভিযোগ দেই আরিফা। এসময় এলাকার মেম্বার ও গণ্যমান্য লোকজন আমার শশুরকে চাপ দিলে শশুর আমাকে নিয়ে সাতক্ষীরা জর্জ আদালতে নিয়ে প্রথম স্বামী সাইফুদ্দিন এর সাথে ছাড়াছাড়ি করান। সেইদিনই আদালত চত্বরে নোটারী পাবলিক এর কার্যালয়ে ৭০ হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য্য করে তার ছোট ছেলে শরিফুলের সাথে বিয়ে দেন। এই বিয়ের পর মনে করেছিলাম হয়তো আমার ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে। সুখে শান্তিতে সংসার করতে পারবো।
কিন্তু বিয়ের পর আমাকে বাড়িতে একদিন রেখে পরদিন চার বছরের মেয়েসহ আমাকে আবারো বাড়ি থেকে বের করে দেয় শশুর জিয়ারুল ইসলাম। সেই থেকে আমি বাবার বাড়িতে অবস্থান করছি। এনিয়ে সাতক্ষীরা নারী শিশু আদালতে মামলা করেছি। মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছে।
অভিযোগ করে আরিফা খাতুন আরো বলেন, বাবার অভাবের সংসারে সপ্তম শ্রেণীতে পড়াকালীন সময়ে আমার বিয়ে হয়। সে সময় আমার বয়স ছিল ১৪-১৫ বছর, কিছুই বুঝতামনা। এখন গরীব বাবার বাড়িতে অসহায়াতার মাঝে দিন কাটাচ্ছি। এখন স্ত্রী’র মর্যাদা ও কন্যা সন্তানের পিতৃত্বে দাবিতে দারে দারে ঘুরছি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)