ইরানের সঙ্গে ভারতের চুক্তি, নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের
ইরানের সঙ্গে সোমবার একটি ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ভারত। এই চুক্তির মাধ্যমে ইরানের চাবাহার বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব ১০ বছরের জন্য নিজের কাঁধে তুলে নিচ্ছে ভারত। এতেই নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ডেপুটি মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, কেউ যদি ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করার কথা ভাবে, তাহলে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে পারে।
জানা গেছে, সোমবার ইরানে গিয়ে চাবাহার বন্দর নিয়ে ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর করেন ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল। এরপরই বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলে ওয়াশিংটন।
বেদান্ত প্যাটেল বলেন, চাবাহার বন্দর নিয়ে ভারত ও ইরানের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে, সেই বিষয়ে আমরা অবগত। ভারতের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। তবে ইরানের সঙ্গে চাবাহার বন্দর নিয়ে তাদের সেই চুক্তি দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আওতায় পড়ে। ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারি আছে এবং তা জারি থাকবে।
এরপর তিনি বলেন, কেউ যদি ইরানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করার কথা ভাবেন, তাহলে তাদের ওপরেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে। সেই কথাটা যেন তারা মনে রাখেন।
এর আগে রাশিয়ার কাছে থেকে ভারত যখন এস৪০০ মিসাইল সিস্টেম কিনেছিল, তখনও দিল্লিকে নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে ভারত নিজের অবস্থানে অনড় ছিল।
প্রসঙ্গত, ভারতকে চতুর্দিক থেকে ‘ঘিরে ফেলে’ বাণিজ্যিক করিডোর তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিল চীন। শি জিনপিংয়ের সেই স্বপ্নের ‘বেল্ট রোড ইনিশিয়েটিভ’-এরই অংশ চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর। সেই করিডোরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হল বেলুচিস্তান প্রদেশে অবস্থিত গোয়াদার বন্দর। তবে এবার সেই গোয়াদার বন্দর যাতে ভারতের গলার কাঁটা না হয়, সেজন্য ইরানের সঙ্গে চাবাহার বন্দর নিয়ে ১০ বছরের চুক্তি করল ভারত।
ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল ইরানে যান চাবাহার বন্দর নিয়ে সেদেশের সরকারের সঙ্গে ১০ বছরের চুক্তি করার জন্য। এই বন্দরের মাধ্যমে আফগানিস্তানসহ মধ্য এশিয়া, এমনকি ইউরোপের সঙ্গেও সংযোগ স্থাপন করতে পারবে ভারত। ভারতের পরিকল্পনা, ইরানের চাবাহার বন্দরকে ইন্টারন্যাশনাল নর্থ-সাউথ ট্রান্সপোর্ট করিডোরের সঙ্গে যুক্ত করা। এই করিডোরের মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গেও যুক্ত হতে পারবে ভারত।
এর আগে ২০১৬ সালে যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইরানে গিয়েছিলেন, তখন চাবাহার বন্দর নিয়ে চুক্তি হয়েছিল দুই দেশের। এরপর ২০১৮ সালে ইরানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ভারতে আসেন। তখন চাবাহার বন্দরে ভারতের ভূমিকা বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয় দুই রাষ্ট্রপ্রধানের। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইরান যান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর। সেই সময়ও এই বিষয়ে আলোচনা হয়। আর সোমবার সর্বাননন্দ সোনওয়াল চাবাহার বন্দর নিয়ে চুক্তি সই করেন ইরানের মাটিতে দাঁড়িয়ে।
সূত্র: রয়টার্স, হিন্দুস্তান টাইমস, টাইমস অব ইন্ডিয়া
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)