কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে : ছাত্রলীগ
কোটা আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াতের মদদ রয়েছে উল্লেখ করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। অনতিবিলম্বে ব্লকেড থেকে সরে এসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের পরামর্শ দেন তিনি। কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন ছাত্রলীগ সভাপতি।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে চলমান আন্দোলন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি।
এসময় সাদ্দাম হোসেন বলেন, প্রশাসনিক নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়টি বিচ্ছিন্ন কোনো আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সুরাহা সুচিন্তিত নয় বলে আমরা মনে করি। কনস্ট্রাকটিভ পলিসির অ্যাডভোকেসির মাধ্যমে এটি সমাধান করা সম্ভব।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের সরকারের পরিপত্র আদালতের রায়ে এখনও বহাল। আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধানের পথকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করা ঠিক হবে না। আন্দোলনকে টেনেহিঁচড়ে এভাবে দীর্ঘায়িত করা উচিত নয়।
এ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বানও জানান ছাত্রলীগ সভাপতি।
সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের আগে কথা বলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। তিনি বলেন, বুধবার আদালত একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। আপিল বিভাগে চার সপ্তাহের সময় নিয়েছেন। কারও কোনো কথা থাকলে তা আদালতে বিস্তারিত বলতে পারবে। এমন অবস্থায় আদালতের এই আদেশ নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা আদালত অবমাননার শামিল হবে বলেই মনে করি।
এসময় তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যারা আন্দোলন করছেন তারা ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরবেন এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় এমন কোনো কর্মসূচি দেবেন না।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, আমরা আশা করি বাস্তবতার নিরিখে আদালত পর্যবেক্ষণ দেবেন এবং নির্বাহী বিভাগ ব্যবস্থা নেবে, সেজন্য ধৈর্য্য ধরতে হবে। মেধা এবং কোটা বিপরীত শব্দ নয়। যারা চাকরি পাচ্ছে তারা মেধাবী যারা চাকরি পাচ্ছে না তারাও মেধাবী। প্রিলি, লিখিত এবং ভাইবা পরীক্ষার পরে কিন্তু কোটা প্রয়োগ করা হয়। সুতরাং যারা কোটা পর্যন্ত যেতে পারেন তারা সকলেই মেধাবী।
তারা বলেন, আমরা অবশ্যই মেধাভিত্তিক কর্মসংস্থান চাই এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি চাই। আমরা শঙ্কার সঙ্গে লক্ষ্য করছি এই আন্দোলনকে প্রলম্বিত করে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে।
ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, যে বিএনপি-জামায়াত তরুণ প্রজন্মের শত্রু তারা এই আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছে। অথচ তারাই পিএসসিকে হাওয়া ভবনে নিয়ে ভাইয়া ক্যাডার চালু করেছিল। যারা রাজনৈতিক দূরভিসন্ধি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করবে তাদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ অবস্থান নেবে। যারা এখন আন্দোলন করছে তারা চাকরিজীবী নয় তারা আন্দোলনজীবী, আন্দোলন করে জীবিকা নির্বাহ করে।
শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে তাদের ধৈর্য্য ধরে ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানিয়ে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, যারা এই আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা প্রস্তুত আছি।
এসময় সড়ক অবরোধের মতো কর্মসূচি থেকে বিরত থাকতে আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানায় ছাত্রলীগ।
আদালতের চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত অপেক্ষা না করে, আদালতে বিচারিক প্রক্রিয়ায় পক্ষভুক্ত হয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে না ধরে বর্তমানে তথাকথিত আন্দোলনের নামে প্রকৃতপক্ষে সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রা ব্যাহত করার প্রচেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)