সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হলেন আলামিন
নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা সদরে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন সাতক্ষীরা আঃ করিম বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ আলামিন। ১৯ নভেম্বর ২০২৪ খ্রি. (মঙ্গলবার) উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে এক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তাকে সম্মাননা হিসেবে সনদপত্র এবং ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেন উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোয়াইব আহমাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আবুল হাশেম ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নারায়ন চন্দ্র মন্ডল সহ বিশিষ্টজনেরা।
শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হওয়ার মোঃ আলামিন নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন এভাবে- আজ উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার জন্য যে সম্মাননা পেয়েছি, তার জন্য কর্তৃপক্ষকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। এই পুরস্কার আমার একার নয়, বরং এটি আমার শিক্ষক জীবনের সকল সাফল্যের প্রতীক।
ইতোপূর্বেও আমি উন্নত ও সুশিক্ষার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রমে অবদান রাখায় একাধিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ।
আমার এই যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০২০ সালে করোনাকালীন সময়ে সাতক্ষীরা অনলাইন স্কুলের সাথে যুক্ত হয়ে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত আমি শিক্ষার বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করেছি। উপজেলা ও জেলা মাস্টার ট্রেনার হিসেবে আমি জীবন ও জীবিকা জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা নিয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। ACTIVE TEACHER হিসেবে আমি শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করেছি। আর স্মার্ট ধারাবাহিক মূল্যায়ন পদ্ধতি নৈপূণ্য অ্যাপস বাস্তবায়নকারী শিক্ষক হিসেবে বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলার মধ্যে ২৫ জন শিক্ষকের একজন হিসেবে নির্বাচিত হয়ে নতুন কারিকুলাম জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা সাতক্ষীরা জেলার নৈপূণ্যর জেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। বর্তমানে শিক্ষক বাতায়নে ICT4E অ্যাম্বাসেডর নির্বাচিত হয়ে সাতক্ষীরা জেলায় দায়িত্বরত আছি।
আজ আমি এখানে দাঁড়িয়ে বুঝতে পারছি যে, শিক্ষকতা শুধুমাত্র একটি পেশা নয়, এটি একটি দায়িত্ব। আমাদের দায়িত্ব হলো ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তোলা। আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করে তোলা। তাদেরকে সৃজনশীল করে তোলা। তাদেরকে দেশ ও জাতির সেবা করার জন্য প্রস্তুত করা।
আমি আজ আপনাদের সকলকে আহ্বান জানাই, আসুন আমরা সবাই মিলে শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করি। আসুন আমরা সবাই মিলে আমাদের দেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করি।
আজকের এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে আমি যেমনি আনন্দিত আবার তেমনি বিমর্ষিত তার কারণ? একজন বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে আমাদের অধিকারের জন্য কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই। আমরা সকলেই জানি, শিক্ষক সমাজ একটি দেশের ভবিষ্যৎ গড়ার কারিগর। আমরাই শিক্ষার্থীদের মনে জ্ঞানের আলো জ্বালাই, তাদেরকে সৎ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমরা বেসরকারি শিক্ষকরা সরকারি শিক্ষকদের তুলনায় অনেক কম সুযোগ-সুবিধা ভোগ করি।
আমরা দিনের পর দিন শিক্ষার্থীদের জন্য নিজেদের উৎসর্গ করে দিই। কিন্তু এর বিনিময়ে আমরা যা পাই তা কি যথেষ্ট? সরকারি শিক্ষকরা যে সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন, আমরা তা থেকে বঞ্চিত থাকি। বেতন, ভাতা, চিকিৎসা সুবিধা সবক্ষেত্রেই আমাদের সঙ্গে বৈষম্য রয়েছে।
এই বৈষম্যের কারণে অনেক মেধাবী শিক্ষক এই পেশা থেকে বিরত থাকছেন। আবার অনেকে কম বেতনে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে শিক্ষার মান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
আমি আজ আপনাদের সামনে দাবি জানাচ্ছি, আমাদের সকল শিক্ষককে সমান দৃষ্টিতে দেখা হোক। আমাদেরও সরকারি শিক্ষকদের মতো সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হোক। আমরা চাই, আমাদের মর্যাদা বৃদ্ধি পাক। আমরা চাই, আমরাও যাতে সমাজে মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারি।
আমি আশা করি, আমাদের এই দাবি সরকারের কাছে পৌঁছাবে এবং তারা আমাদের যুক্তিযুক্ত দাবির প্রতি স্পন্ধনশীল হবেন। এই বলে আমি আমার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করছি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)