পদ্মা রেল সংযোগে ঢাকা-খুলনা : জনবল সংকটে বাঁধা ট্রেন যাত্রা, ডিসেম্বরে চালু
পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে সোমবার (২ ডিসেম্বর) ঢাকা থেকে খুলনা পর্যন্ত পুরো পথে ট্রেন চলাচলের কথা থাকলেও শুরু করতে পারেনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। উদ্বোধনের নতুন তারিখ নির্ধারণ না হলেও ডিসেম্বরের মধ্যে ট্রেন চালাতে চায় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সবগুলো স্টেশন চালু করতে যে পরিমাণ জনবল দরকার সেটা দিতে পারছে না রেলওয়ে। ফলে শুরুতেই অন্তত চারটি স্টেশন চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
জানা গেঝে, জনবল প্রয়োজন হওয়ায় অস্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের প্রক্রিয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে অস্থায়ী জনবল নিয়োগ দেবে রেলওয়ে। আর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের দায়িত্ব নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এদিকে রেলওয়ের অভ্যন্তরীণ জটিলতার কারণে নতুন ট্রেনের জন্য টাইমটেবিল (সময়সূচি) চূড়ান্ত করা যাচ্ছে না। মাইলেজ ইস্যুতে রেলওয়ের রানিং স্টাফদের আন্দোলনও নতুন ট্রেন চালু করার পথে আরেকটি বাধা।
রানিং স্টাফরা বলছেন, আইন অনুযায়ী-হেডকোয়ার্টারে তাদের ৮ ঘণ্টার ডিউটি শেষে ১২ ঘণ্টা বিশ্রাম করার কথা। কিন্তু রেলওয়ের কর্মী সংকট থাকায় তারা ৫-৬ ঘণ্টা বিশ্রাম করার পর আবার কাজে নেমে যান। রেলের কর্মীরা রেলের স্বার্থে কাজ করতে চান। কিন্তু রেলওয়ে তাদের স্বার্থের বিষয়ে আন্তরিক না থাকার কারণে অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে নেমেছেন তারা।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এই প্রকল্পের আওতায় ১৪টি নতুন স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। বিদ্যমান ছয়টি স্টেশনের উন্নয়ন ও অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু নতুন স্টেশন চালানোর জন্য এখনো লোকবল নিয়োগ হয়নি। ফলে স্টেশনসহ ট্রেন পরিচালনার কাজের জন্য আপাতত আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ১০০ জনবল নেয়া হবে। লোকবল না থাকায় সব স্টেশন চালু করতে পারবে না রেল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বাণিজ্যিক ট্রেন চালুর পর ভাঙ্গা জংশন স্টেশন আংশিক চালু হবে। অর্থাৎ ট্রেন দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠা এবং নামানোর কাজটি করা হবে। এর বাইরে শ্রীনগর, নগরকান্দা, মহেশপুর ও জামদিয়া স্টেশনগুলো প্রাথমিকভাবে চালু নাও হতে পারে। তবে বাণিজ্যিক ট্রেন চালুর আগে অস্থায়ী ভিত্তিতে ১০০ লোক নিয়োগ দিতে না পারলে আরও অনেক স্টেশন বন্ধ থাকবে।
জানা যায়, ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত রেললাইন উদ্বোধনের পর এই রুট দিয়ে খুলনা পর্যন্ত নতুন দুটি ট্রেন যুক্ত হবে। সুন্দরবন প্রভাতী ও সুন্দরবন গোধূলি। এছাড়া পদ্মা রেল সেতু দিয়ে নতুন আট জোড়া ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। রুটগুলো হচ্ছে ঢাকা-যশোর-খুলনা, ঢাকা-যশোর-বেনাপোল, ঢাকা-ভাঙ্গা-গোপালগঞ্জ এবং ঢাকা-ফরিদপুর-দর্শনা। বর্তমানে পদ্মা সেতু দিয়ে তিনটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করছে। এর মধ্যে আছে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস, বেনাপোলগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ও রাজশাহীগামী মধুমতী এক্সপ্রেস। খুলনাগামী নকশিকাঁথা এক্সপ্রেসও চলছে।
বাংলাদশে রেলওয়ের নবনিযুক্ত মহাপরিচালক আফজাল হোসেন জানান, জনবল সংকটের কারণে পদ্মাসেতু দিয়ে নতুন রুটে এখনই ট্রেন যাত্রা শুরু করা সম্ভব হয়নি। টাইমটেবিল চূড়ান্ত করে পরবর্তীতে জানানো হবে বলে তিনি জানান।
দ্রুতই ট্রেন চলাচল শুরু হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)