সাতক্ষীরায় জমি অধিগ্রহণ না করে খাল খননের অভিযোগ


জমি অধিগ্রহন না করে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি কেটে খাল খনন করার অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর বিরুদ্ধে।
এদিকে জমি অধিগ্রহণ পূর্বক ক্ষতিপুরণের টাকা না পাওয়া পর্যন্ত খাল খননসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জমির মালিকরা।
জমি অধিগ্রহণ না করে, ক্ষতিপূরণ না দিয়ে খাল খনন কার্যক্রম শুরু করায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী খনন কাজ বন্ধ করে দিলেও তা মানছেন না ঠিকাদার কতৃপক্ষ। উল্টো জমির মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা করাসহ বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ জমির মালিকদের।
সাতক্ষীরা সদরের বাঁশদহা ইউনিয়নের ভবানীপুর ব্রীজ এলাকার জমির মালিক মোশারফ হোসেন বলেন, ভবানীপুর মৌজার জে. এল নং-৫ এর আওতায় মজুমদার খালসহ দুই পাড়ে আমাদের ব্যক্তিগত রেকর্ডীয় মালিকানাধীন জমি রয়েছে। অথচ এই জমি অধিগ্রহণ না করে মজুমদার খাল খননের জন্য সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর হতে উল্লেখ্য, ডাবøু সাত-১-২৭ নং প্যাকেজের আওতায় ৫ কোটি ৮৭ লাখ ৪৪ হাজার ৪৩৯ টাকা ব্যয়ে সাতক্ষীরার মজুমদার খালের ১৬.৯৮০ কি.মি খননের জন্য টেন্ডার (টেন্ডার আইডি: ৯৭৯০৩২) আহবান করা হলে কাজ পান ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
কার্যাদেশ পাওয়ার পর ১৪ ফেব্রæয়ারি থেকে খাল খননের কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা জমির মালিক হলেও আমাদের এবিষয়ে কোন নোটিশ দেয়া হয়নি। সরকারি নিয়মনীতি না মেনে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দীন নিয়মনীতি না মেনে খাল খনন শুরু করেছে। জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন দিয়েও আমরা কোনো প্রতিকার পাচ্ছিনা।
মোশারফ হোসেন আরো বলেন, খালের দুই পাড় দিয়ে ধান, মাছের ঘের, গাছ পালা, পুকুর, এমনকি ঘরবাড়ি রয়েছে। এই কাজ অব্যাহত রাখলে আমরা জমির মালিকরা চরম ক্ষতির শিকার হবো। এমতবস্থায় জরুরী ভিত্তিতে জমির সীমানা নির্ধারণ করে জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে সরকারি নিয়ম নীতি অনুসরণ করে খাল খনন কাজ করার দাবী জানিয়ে তিনি বলেন, তাদেরকে এখন মামলা দেয়ার হুমকী-ধামকি দেয়া হচ্ছে।
থানাঘাটা এলাকার কাজী আবু তাহের বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবত পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত মজুমদার খাল ও খালের দুই ধারের জমির খাজনা পরিশোধ করছি। কিন্তু আমাদেরকে না জানিয়ে ঠিকাদার খাল খননের কাজ শুরু করেছেন।
আমরা জমির মালিকগণ ঠিকাদারের প্রতিনিধির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টেন্ডারের মাধ্যমে আমরা কাজ পেয়েছি। কার্যাদেশ অনুযায়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী-১ এর নির্দেশে আমরা কাজ করছি। জমি অধিগ্রহনের বিষয়ে আমরা জানিনা।
এ বিষয়ে ঠিকাদারের প্রতিনিধি মাজহারুল ইসলাম বলেন, খালের অনেক জায়গায় ব্যক্তিগত জমি থাকায় জমির মালিকগণ দাবী করেছে। এ বিষয়টি আমাদের কিছু করার নেই। কাজ বন্ধ হলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দীন বলেন, যে কোনো স্থানে খাল খনন করতে গেলে কিছু না কিছু সমস্যা হবেই। এসব দেখতে গেলে কোনো খাল কাটা সম্ভব হবেনা। আমরা জমির মালিকদের দাবী অনুযায়ী কোথাও চওড়া কোথাও চিকন করে খাল কেটে যাবো। যাতে তাদের ক্ষতি না হয়।
তিনি বলেন, খালের জমি অনেকে বন্দোবস্ত নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করছেন। এখন ম্যাপ অনুযায়ী খাল খনন করা হবে। এছাড়া আমাদের এখন কিছু করার নেই। খাল খনন হলে এলাকাবাসীর লাভ হবে, জলাবদ্ধতা কমে যাবে বলে মত তার।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
