ভারতের বিরুদ্ধে অপারেশনের বিস্তারিত জানালো পাকিস্তান


ভারতের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানের বিস্তারিত জানিয়েছে পাকিস্তান। দেশটি জানিয়েছে, ভারতের বিরুদ্ধে ১৯ দিনব্যাপী হামলা চালানো হয়েছে। এসব হামলায় ক্ষয়ক্ষতি ও নিশানার বিষয়ও তুলে ধরেছে দেশটি।
সোমবার ( ১২ মে) জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে ২২ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত ১৯ দিনব্যাপী ভারতের সঙ্গে সামরিক সংঘাতের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে। এই সংঘাতকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘মারকা-ই-হক’ (সত্যের যুদ্ধ) নামকরণ করা হয়েছে, যা ভারতের আত্মঘোষিত সামরিক গর্বকে চূর্ণ করেছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান।
আইএসপিআর-এর বিবৃতি অনুসারে, ১০ মেপরিচালিত ‘বুনিয়ান-উম-মারসুস’ অভিযান ছিল ৬-৭ মে মধ্যরাতে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর আক্রমণের প্রতিক্রিয়া। ভারতের এই আক্রমণে নিরীহ পাকিস্তানি নাগরিক, নারী, শিশু এবং বয়স্কদের প্রাণহানি ঘটে। আইএসপিআর জানিয়েছে, পাকিস্তান ভারতের এই নৃশংস আগ্রাসন ও নাগরিক হত্যার বিচার ও প্রতিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী জনগণের প্রতি দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা হুমকির মুখে পড়লে প্রতিশোধমূলক প্রতিক্রিয়া ব্যাপক ও নির্ণায়ক হবে। সামরিক বাহিনী এই বিজয়ের জন্য আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে এবং শহীদদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছে।
আইএসপিআর জানিয়েছে, পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া ছিল তিন বাহিনীর (স্থল, নৌ ও বিমান) সমন্বিত অভিযানের একটি নিখুঁত প্রদর্শন। এতে ব্যবহৃত হয়েছে নেটওয়ার্ক-কেন্দ্রিক যুদ্ধ ক্ষমতা, বাস্তব সময়ের পরিস্থিতিগত সচেতনতা এবং মাল্টি-ডোমেইন অপারেশন। ফাতাহ সিরিজের এফ১ ও এফ২ মিসাইল, পাকিস্তান বিমানবাহিনীর নির্ভুল অস্ত্র, দীর্ঘ-পাল্লার লোটারিং মিউনিশন এবং নির্ভুল আর্টিলারি ব্যবহার করে ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীর (আইআইওজেকে) এবং ভারতের মূল ভূখণ্ডে ২৬টি সামরিক লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করা হয়।
ধ্বংসকৃত লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে রয়েছে সুরাটগড়, সিরসা, ভুজ, নালিয়া, আদমপুর, বাটিন্ডা, বারনালা, হালওয়ারা, আওয়ান্তিপুরা, শ্রীনগর, জম্মু, উধমপুর, মামুন, আম্বালা এবং পাঠানকোটের বিমান ঘাঁটি। এছাড়া ব্রাহ্মোস মিসাইল স্টোরেজ সুবিধা, এস-৪০০ মিসাইল ব্যাটারি এবং সামরিক লজিস্টিক সাইটগুলোও ধ্বংস করা হয়েছে।
অভিযানের সময় পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী কার্যকর সাইবার অপারেশন পরিচালনা করে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ও সেবাকে অকার্যকর করে। এছাড়া, পাকিস্তানি ড্রোনগুলো ভারতের প্রধান শহর ও স্পর্শকাতর সরকারি স্থাপনার উপর দিয়ে উড়ে তাদের দীর্ঘ-পাল্লার অস্ত্র ক্ষমতা প্রদর্শন করে।
আইএসপিআর জানিয়েছে, ভারতের তথ্য যুদ্ধ ও মিথ্যা প্রচারণার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের তরুণরা সাইবার ও তথ্য যোদ্ধা হিসেবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। পাকিস্তানের গণমাধ্যমও ভারতের যুদ্ধোন্মাদনার বিরুদ্ধে ‘বুনিয়ান-উম-মারসুস’-এর মতো দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামরিক বাহিনী পাকিস্তানের জনগণ, বিশেষ করে তরুণদের অটুট সমর্থন ও প্রার্থনাকে এই বিজয়ের সবচেয়ে শক্তিশালী শক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ সমর্থন এবং কূটনৈতিক মহলের সফল প্রতিনিধিত্বও এই সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
আইএসপিআর বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে, যারা স্বদেশি ও বিশেষায়িত প্রযুক্তি উন্নয়নের মাধ্যমে এই অভিযানকে সফল করেছে।
আইএসপিআর জানিয়েছে, এই সংঘাতের সময় খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তানে ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাসবাদ বৃদ্ধি পায়, যা ভারতের পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদকে উসকে দেওয়ার প্রমাণ বহন করে। তবে, পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী পশ্চিমাঞ্চলে কার্যকর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালিয়ে এই হুমকি মোকাবিলা করেছে।
শেষে, আইএসপিআর পবিত্র কুরআনের সূরা আনফালের একটি আয়াত উদ্ধৃত করে বলেছে, তারা পরিকল্পনা করে, আর আল্লাহও পরিকল্পনা করেন। আর আল্লাহ সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
