রাজধানীর বাজারগুলোতে তেলের সঙ্গে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম
রাজধানীর বাজারগুলোতে বোতল ও খোলা উভয় ধরনের সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে পাম সুপার তেলের দাম। বোতলের সয়াবিন তেলের দাম লিটারে বেড়েছে পাঁচ টাকা। আর খোলা সয়াবিন ও পাম সুপারের দাম কেজিতে চার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
এদিকে কিছুটা দাম কমার পর আবার বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে পাঁচ টাকা করে। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বোতলের সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়ে দিলেও বাজারে নতুন দামের তেল এখনও আসেনি। বাজারে এক লিটারের যে বোতল পাওয়া যাচ্ছে তার গায়ে ১৩৯ টাকা লেখা রয়েছে। তবে বেশিরভাগ খুচরা ব্যবসায়ী এই তেল বিক্রি করছেন ১৪৫ টাকা। অবশ্য কোনো কোনো ব্যবসায়ী ১৪০ টাকাও বিক্রি করছেন।
খিলগাঁওয়ে বোতলের এক লিটার সয়াবিন তেল ১৪৫ টাকায় বিক্রি করা ব্যবসায়ী ইয়াসিন বলেন, কোম্পানির লোক বলে গেছে তেলের দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যেই নতুন মূল্য নির্ধারণ করা বোতল বাজারে আসবে।
নতুন মূল্য বোতল আসার আগেই বাড়তি দাম নিচ্ছেন কেন? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ভাই পছন্দ হলে নেবেন। না হলে নেবেন না। তেলের বাজার বাড়তি। এক লিটারের বোতল নিতে হলে ১৪৫ টাকায় দিতে হবে।
রামপুরায় এক লিটারের বোতল ১৪০ টাকা বিক্রি করা শামছু বলেন, তেলের দাম বেড়েছে। তবে আমার কাছে আগের বোতল কিছু আছে, তা ১৪০ টাকায় বিক্রি করেছি। তবে খোলা সয়াবিন তেলের দাম কেজিতে চার টাকা বেড়ে গেছে।
খোলা সয়াবিনের দাম বাড়ার তথ্য মিলেছে অন্য বাজারগুলোতেও। দুদিন আগে ১৩০ থেকে ১৩২ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া খোলা সয়াবিন তেল এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৩৬ টাকা। এর সঙ্গে বেড়েছে পাম সুপারের দাম। ১২০ থেকে ১২২ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাম সুপারের দাম বেড়ে ১২৫ থেকে ১২৭ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
মালিবাগ হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. আফজাল বলেন, হঠাৎ করেই তেলের দাম বেড়ে গেছে। পাইকারি বাজারে সয়াবিন ও পাম সুপারের দাম বাড়ার আমরা বাড়তি দামে বিক্রি করছি। দুদিন আগে খোলো সয়াবিন ১৩০ টাকা কেজিও বিক্রি করেছি।
কিন্তু এখন ১৩৫ টাকার নিচে বিক্রি করার সুযোগ নেই। দুই-একদিনের মধ্যে বোতলের তেলের দামও বাড়বে। ইতোমধ্যে কোম্পানির লোক এসে দাম বাড়ার তথ্য দিয়ে গেছে।
এদিকে গত সপ্তাহে কিছুটা দাম কমার পর আবার বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে পেঁয়াজ আবার ৪০ টাকায় উঠেছে, যা গত সপ্তাহে ৩৫ টাকায় নেমেছিল।
পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী মিলন বলেন, লকডাউনের কারণে যারা গ্রামের বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন তাদের অনেকে আবার ঢাকায় ফিরেছেন। এ কারণে পেঁয়াজের চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। এর ফলে দাম বেড়েছে।
সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে নতুন আসা ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এর সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে কিছু সবজির দাম কমেছে।
রোজার শুরুতে ১২০ টাকায় উঠে যাওয়া বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এই সবজিটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে রোজার শুরুতে অস্বাভাবিক দাম বেড়ে যাওয়া শসার দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে। মানভেদে শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ টাকা এবং রোজার শুরুতে ছিল ৮০ টাকা।
দাম কমার তালিকায় রয়েছে- পটল, বরবটি, ঢেড়স, ঝিঙে। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। গত শুক্রবার ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম কমে ৪০ থেকে ৫০ টাকা হয়েছে। ঢেড়সের কেজিও বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
গত সপ্তাহের মতো ৬০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হওয়া ঝিঙের দাম কমে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে লাউয়ের পিস আগের সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা।
বেশিরভাগ সবজির দাম কমার মধ্যে সজনের ডাটার দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া সজনের ডাটার দাম বেড়ে ৯০ থেকে ১০০ টাকা হয়েছে। পাকা টমেটো আগের সপ্তাহের মতো ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে নতুন আসা কাঁকরোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। কাঁকরোলের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কচুর লতি। এক কেজি কচুর লতি কিনতে গুনতে হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী আলী হোসেন বলেন, আমাদের ধারণা ছিল সবজির দাম আরও বাড়বে। কিন্তু সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। সবজির দাম বাড়ার বদলে কমে গেছে। সামনে কিছু সবজির দাম আরও কমবে। তবে ঈদের পর সবজির দাম বাড়তে পারে।
রামপুরার ব্যবসায়ী তোহিদ বলেন, আড়তে প্রচুর সবজি আসছে। আড়তে যে হারে সবজি পাওয়া যাচ্ছে, তাতে সবজির দাম আরও কম হাওয়া উচিত। কিন্তু আড়তেই সবজির দাম বেশি। এ কারণে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
এদিকে গত সপ্তাহে দাম কমা ব্রয়লার ও পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গত শুক্রবারের মতো ব্রয়লার ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৭০ টাকা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)