রিয়াজের শ্বশুরের আত্মহত্যার ভিডিও ৬ ঘণ্টার মধ্যে সরানোর নির্দেশ
ফেসবুক লাইভে এসে চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর ব্যবসায়ী আবু মহসিন খাঁন নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন। তার এ আত্মহত্যার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। বিটিআরসি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে ধানমন্ডির ৭ নম্বর রোডের একটি বাড়ির লেভেল-৫ এর একটি ফ্ল্যাটে নিজে বন্দুক মাথায় ঠেকিয়ে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন আবু মহসিন খান। আত্মহত্যার আগে চিরকুটে সবকিছু লিখে গেছেন তিনি। ব্যক্তিগত নানা হতাশার কথা বলেন তিনি।
ধানমন্ডি ৭ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন আবু মহসিন খাঁন। রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি করে আত্মহননের পথ বেছে নেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।। ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া সংবাদামাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তার আত্মহত্যার ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে আত্মহত্যার আগে আবু মহসিন খাঁনের দেওয়া বক্তব্যে যাদের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে তাৎক্ষণিকভাবে তা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেছেন, আমি মহসিন। ঢাকায় থাকি। আমার বয়স ৫৮ বছর। কোনো এক সময়ে আমি ভালো ব্যবসায়ী ছিলাম। বর্তমানে আমি ক্যানসারের রোগী। তাই আমার ব্যবসা কিংবা কোনো কিছুই নেই। ভিডিও লাইভে আসার উদ্দেশ্য হলো—মানুষের বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং আমার যে এক্সপেরিয়েন্স, সেটা শেয়ার করলে হয় তো সবাই জানতে পারবে, সবাই সাবধানতা অবলম্বন করবে।
তিনি আরও বলেন, গত ৩০ তারিখ আমার খালা মারা যান। তার একটি ছেলে আমেরিকায় থাকেন, মা মারা গেল অথচ ছেলেটি আসল না। এটা আমাকে অনেক দুঃখ দিয়েছে। কষ্ট লেগেছে।
‘আজকে আমার আরেক খালা মারা গিয়েছেন। তারও একটি ছেলে আমেরিকায় ছিল। অবশ্য তার তিনটা ছেলে ইঞ্জিনিয়ার। তিনজনই বর্তমানে বাংলাদেশে আছেন। তারা হয়তো দাফন–কাফনের কাজ সম্পন্ন করছে। সেদিক দিয়ে বলব, এই খালা অনেকটা ভাগ্যবান।’
মহসিন খাঁন জানান, আমার একটা মাত্র ছেলে। সে অস্ট্রেলিয়াতে থাকে। আমার বাসায় আমি সম্পূর্ণ একা থাকি। আমার খালা মারা যাওয়ার পর থেকে আমার ভেতরে খুব ভয় করছে। আমি যদি আমার বাসায় মরে পড়েও থাকি, আমার মনে হয় না যে, এক সপ্তাহ কেউ জানতে পারবে, আমি মারা গেছি।
তিনি বলেন, ছেলেমেয়ে স্ত্রী যাদের জন্য যাই কিছু আমরা করি। আমরা সব কিছু করি সন্তান এবং ফ্যামিলির জন্য। আপনি যদি ১০০ টাকা ইনকাম করেন, আয় করেন, তার টোয়েন্টি পারসেন্ট টাকাও আপনি নিজের জন্য ব্যয় করেন না। যদি টোয়েন্টি পারসেন্ট টাকা আপনি নিজের জন্য ব্যয় করেন, তাহলে ৮০ পারসেন্ট টাকা আপনার ফ্যামিলির জন্য ব্যয় হয়।
‘গত করোনা শুরুর আগ থেকে আমি বাংলাদেশে আছি। একা থাকা যে কী কষ্ট, যারা একা থাকে, তারাই একমাত্র বলতে পারে বা বোঝেন।’
তিনি জানান, যাদের জন্য আমি বেশি করছি, প্রত্যেকটা লোকের কাছে আমি প্রতারিত হয়েছি। আমার এক বন্ধু ছিল, নাম কামরুজ্জামান বাবলু। যাকে আমি না খেয়ে তাকে খাইয়েছি। সে আমার ২৩ থেকে ২৫ লাখ টাকা মেরে দিয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)