আজ থেকে খুলছে দোকান শপিং মল, যেতে লাগবে মুভমেন্ট পাস
মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়ায় টানা ১১ দিন বন্ধ থাকার পর আজ রোববার (২৫ এপ্রিল) থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান ও শপিংমল খুলছে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, আজ থেকে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোকান ও শপিংমল খোলা রাখা যাবে।
দোকান ও শপিংমল খুলতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছের মালিকরা। তবে প্রথমদিনে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে কিছুটা সংশয় থাকলেও সোমবার (২৬ এপ্রিল) থেকে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান ও শপিংমলে ক্রয়-বিক্রয় চলবে বলে আশা করছেন মালিক সমিতির নেতারা।
এদিকে চলমান বিধিনিষেধের মধ্যে বাইরে যেতে বিশেষ মুভমেন্ট পাস চালু করেছে পুলিশ। দোকান ও শপিংমলে যেতেও এই মুভমেন্ট পাস নিতে হবে।
গত শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, করোনাভাইরাসজনিত রোগের (কোভিড-১৯) বিস্তার রোধে শর্তসাপেক্ষে সার্বিক কার্যাবলি/চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আগের নির্দেশনার ধারাবাহিকতায় ব্যাপকসংখ্যক মানুষের জীবন-জীবিকার বিষয় বিবেচনা করে নতুন এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বাজার/সংস্থার ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান ও শপিংমল খুলতে আমরা শতভাগ প্রস্তুত। আমাদের গত বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেটাকে কাজে লাগানো হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রথম দিন হয়তো একটু সমস্যা হবে। কিছু কেনাকাটার প্রয়োজন আছে। তবে সোমবার থেকে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান ও শপিংমলে ক্রয়-বিক্রয় চলবে বলে আমরা আশা করছি।’
মালিক সমিতির এই নেতা আরও বলেন, ‘যেসব মার্কট বা শপিংমল স্বাস্থ্যবিধি মানবে না, সেগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।’
এর আগে কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে গত ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে আটদিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়। লকডাউনের মধ্যে দোকান-শপিংমল বন্ধ রাখাসহ ১৩টি নির্দেশনা দেয় সরকর। সেই মেয়াদ শেষ হয় গত বুধবার (২১ এপ্রিল) মধ্যরাতে। তবে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় লকডাউনের মেয়াদ আগামী ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
এরমধ্যে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে দোকান ও শপিংমল খুলে দেয়ার দাবি জানানো হয়। তারা এ বিষয়ে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে তাদের দাবি তুলে ধরেন। দোকান মালিক সমিতির দাবির প্রেক্ষিতেই আবার দোকান ও শপিংমল খুলে দিল সরকার।
গত ১৮ এপ্রিল বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির নেতারা নিউমার্কেটে দোকান মালিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রয়োজনীয় সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে মার্কেট, দোকান ও ক্ষুদ্রব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানান।
ওই সংবাদ সম্মেলন থেকে শ্রমিক-কর্মচারীদের দুই মাসের বেতন ও বোনাসের ৯৬ হাজার ৭০৮ কোটি টাকার অর্ধেক ৪৮ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকা ঈদের আগে ঋণ প্রণোদনা হিসেবে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দেয়ার দাবি তোলেন ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অচলাবস্থা দূর করার লক্ষ্যে আগামী তিনমাসের মধ্যে দেশকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনারও দাবি জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলালউদ্দিন বলেন, গত একবছর মহামারি করোনার কারণে ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ২০২০ সালের ১৮ মার্চ যখন বাংলাদেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে, তখন আমরা দোকান মালিকরা স্বেচ্ছায় ২৫ মার্চ থেকে সব কিছু বন্ধ করে দিয়েছিলাম। সরকার পরদিন ২৬ মার্চ থেকে সব কিছু বন্ধ ঘোষণা করে। তখন থেকে এ দেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জীবনে চরম ব্যবসায়িক মন্দা ও আর্থিক অনিশ্চয়তা নেমে আসে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকায় এর আগে গত ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা পর্যন্ত লকডাউন বা বিধিনিষেধ ছিল। তবে গণপরিবহন, মার্কেট খোলা রেখে এই লকডাউন ছিল অনেকটাই অকার্যকর।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)