টিকা দেয়ার পরে স্কুল খুলে দেবো : প্রধানমন্ত্রী
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে সংসদে নিজের মতামত সরাসরি ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া শিখবে কিন্তু এটার জন্য জেনেশুনে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারি না। স্কুল বন্ধ এজন্য একটু ক্ষতি হচ্ছে। টিকা দেওয়ার পরে আমরা সব স্কুল খুলে দেব। এর আগে আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিলাম তখনই সারা বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারি এমনভাবে ছড়িয়ে পড়লো। আর তার ধাক্কা এসে পড়লো আমাদের মাঝে। এখন তো শিশুদেরও করোনা সংক্রমণ হচ্ছে। লেখাপড়া শিখবে কিন্তু এটার জন্য জেনেশুনে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেব কিনা তা মাননীয় সংসদ উপনেতা তা একটু বিবেচনা করবেন। বলার জন্য বলতে পারেন, কিন্তু এটাও একটু চিন্তা করবেন ছেলেমেয়েদের মৃত্যুর মুখে দেবেন কিনা?’
শনিবার (৩ জুলাই) চলতি একাদশ সংসদের ১৩তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শিক্ষাখাতের উন্নয়নে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সর্বস্তরে শিক্ষাবৃত্তি দিয়ে যাচ্ছি। বিনা পয়সায় বই দিচ্ছি। করোনাকালে স্কুল শুরু হবে এজন্য শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস, জুতো, ব্যাগ কেনা ও স্কুল ফিডিংয়ের জন্য বাজেটে টাকা রেখেছি। স্কুল বন্ধ আছে কিন্তু পড়াশুনা যাতে বন্ধ না হয় সেজন্য সংসদ টিভি চালু আছে। আমরা রেডিও উন্মুক্ত করে দিয়েছি। রেডিও’র মাধ্যমে পাঠ চলছে। যেভাবে সম্ভব পড়াশুনার কাজটি চালিয়ে রাখতে সক্ষম হচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশে আমরা দেখেছি সবই অনলাইন। একটু খুললো আবার মহামারি ছড়িয়ে পড়লো। সঙ্গে সঙ্গে সব বন্ধ। আবার ঘরে বসে কাটাচ্ছে। হ্যাঁ, তারা অপশনও দিচ্ছে। যারা ঘরে বসে পড়বে তারা পড়ছে। যারা যাচ্ছে স্কুলে যাচ্ছে। আবার যখন করোনা বেশি ছড়ায় সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করছে।’
‘সবাই তখন আমার কথা শুনলে আজ করোনা ছড়িয়ে পড়ত না’
স্বাস্থ্যবিধি পালনে মানুষের উদাসীনতা দেখে হতাশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘একটা সমস্যা হচ্ছে যে জনগণকে গত ঈদুল ফিতরে বারবার অনুরোধ করলাম যে আপনারা আপনাদের জায়গা ছেড়ে যাবেন না। কিন্তু অনেকেই তো সেই কথা শোনেনি। সকলেই ছুটে চলে গেছে। আর তার ফলাফলটা কী হল? যারা বাইরে ছিল, পুরো বর্ডার এলাকায়, বিভিন্ন জেলায় এই করোনাটা ছড়িয়ে পড়ল। সবাই তখন যদি আমার কথাটা শুনত, তাহলে আজকে এমনভাবে করোনাটা ছড়িয়ে পড়ত না।’
শনিবার সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মানুষের বাড়ি যেতে চাওয়ার প্রবণতাকে সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে সংক্রমণ এড়াতে মহামারীকালে সবাইকে এক্ষেত্রে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে জনসমাগম এড়িয়ে চলা, সাবান দিয়ে বারবার হাত ধোয়া, মাস্ক পরার উপর জোর দিয়ে আসছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহামারী প্রতিরোধে সরকার যেসব নির্দেশনাগুলো দিয়েছে, সেগুলো মেনে চললে মহামারী নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। আমরা এখন লকডাউন ঘোষণা করেছি। আমি দেশবাসীকে বলব, আপনারা অন্ততপক্ষে নির্দেশনাগুলো মেনে নিজেকে সুরক্ষিত রাখেন, অন্যকে সুরক্ষিত রাখেন। অন্তত এটা ছাড়াতে দিয়েন না। মাস্ক পরা, হাত পরিষ্কার করা আর যেন কোনোমতেই যেন সংক্রমিত না হয়, তার জন্য দূরত্ব বজায় রাখা। এটা করতে পারলেই কিন্তু আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব।’
সবাইকে কোভিড টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা সরকার নিয়েছে জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘টিকা নিয়ে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না। দেশের মানুষ যেন সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা সরকার করবে।’
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)