ডাচদের হারিয়ে সুপার এইটে এক পা দিয়ে রাখল বাংলাদেশ
জয়ের পথেই ছিল নেদারল্যান্ডস। ইনিংসের ১৫ তম ওভারে বোলিং এসে দায়িত্ব নিলেন লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন। ম্যাচের প্রয়োজনের সময় একজন লেগস্পিনারের কাছ থেকে যা আসা করে দল। রিশাদ করে দেখালেন সেটিই। আগ্রাসী হয়ে উঠা সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখটকে ফেরালেন ৩৩ রানে।
এরপর সদ্য উইকেটে নামা বাস ডে লিডকে দারুণ ঘূর্ণিতে বিট করলেন। উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া লিডকে বিদ্যুতের গতিতে বল ধরে স্টাম্প ভেঙে দিলেন লিটন। মুহূর্তেই ম্যাচের পরিস্থিতিটা হেলে গেল বাংলাদেশের পক্ষে। ডাচদের ১৬০ রানের টার্গেট দিয়ে বাংলাদেশ জয় পেল ২৫ রানের ব্যবধানে। আর তাতে সুপার এইটের পথেও একটা পা দিয়ে রাখল বাংলাদেশ। একইসঙ্গে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেল শ্রীলংকার।
অথচ, রিশাদ তোপের পরও ডাচ অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ড উইকেটে ছিল বলেই একটা শঙ্কা ছিল বাংলাদেশের। তবে সেই শঙ্কা বাড়তে দেননি মুস্তাফিজ। ১৭ তম ওভারে বোলিংয়ে এসেই ২৩ বলে ২৫ রান করা এডওয়ার্ডকে ফিরিয়ে জয়ের পথটা রচিত করেন তিনি।
ডাচদের লক্ষ্যটা হয়ে দাঁড়ায় ১৮ বলে ৪৩ রান। যা রীতিমতো পাহাড়। সেই পাহাড় টপকাতে গেলে লোয়ার অর্ডার ব্যাটাররা হোঁচট খাবেই। হয়েছেও তাই। রিশাদ এসে ফের আঘাত হেনেছেন ডাচ ব্যাটিং অর্ডারে। সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠে শেষ ১২ বলে ৩৬ রান করে ম্যাচ জেতাবে এমন ব্যাটার ডাচদের থাকলে তো। বাংলাদেশ ম্যাচটা জিতেছে সহজেই। ডাচদের ইনিংস থেমেছে ৮ উইকেটে ১৩৪ রানে।
তবে, এদিন বাংলাদেশের দেওয়া ১৬০ রানের লক্ষ্যে ডাচরা শুরুটা করেছিল দুর্দান্ত। দলীয় ২২ রানে তাসকিন আহমেদ দলকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দিলেও এরপর ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল ডাচরা। বিক্রমজিৎ সিং ও এঙ্গেলব্রেখট তো ম্যাচটাই কেড়ে নিতে চেয়েছিল বাংলাদেশের কাছ থেকে। দু’জনেই থিতু হওয়ার পর আগ্রাসী হয়ে উঠছিলেন।
তবে তাদের খুব বেশি বাড়তে দেয়নি বাংলাদেশ। মাঝে দলকে বহুল কাঙ্ক্ষিত ব্রেক থ্রুটা এনে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। দারুণ বোলিংয়ে বোকা বানিয়েছেন বিক্রমজিৎকে। মাহমুদউল্লাহর বলে স্টাম্প আউট হন ১৬ বলে ২২ রান করে। এরপর অবশ্য দলকে ফের লড়াইয়ে ফেরান এডওয়ার্ড ও এঙ্গেলব্রেখট। তবে তাদের বিশ দাঁত ভেঙে দিয়েছেন রিশাদ। বাংলাদেশের জয়টা রিশাদের ১৫ তম ওভারেই রচিত হয়ে যায়। এরপর ডাচরা কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে। নেট রান রেট বাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে।
এর আগে বৃষ্টিতে দেরিতে শুরুটা হওয়া ম্যাচে টসে জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ডাচরা। শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি বাংলাদেশের। অধিনায়ক নাজমুল শান্ত ওপেনিংয়ে নেমেও হতাশ করেন। ফিরে যান মাত্র ১ রান করে। এরপর ২৩ রানে লিটনকে হারায় বাংলাদেশ। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পারফরম্যান্সের কারণে সমালোচিত হওয়া সাকিব আল হাসান এদিন দায়িত্ব নিয়েছেন।
তানজিদ তামিমের সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে টেনে তুলেছেন। তানজিদ পথে ২৬ রান করে ৩৫ রানে ফিরলেও ইনিংস শেষ করে এসেছেন সাকিব। মাঝে তাকে সঙ্গ দিয়েছিল মাহমুউল্লাহ। ২১ বলে ২৫ রান করেন তিনি। শেষ দিকে জাকের আলি ৭ বলে ১৪ রান করেন। অন্যদিকে সাকিব ৪৬ বলে ৬৪ রানে অপরাজিত থেকে বাংলাদেশর সংগ্রহটাকে ৫ উইকেটে ১৫৯ এ নিয়ে যান। যা শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জয়ে ভূমিকা রেখেছে।
এ জয়ে ডি গ্রুপ থেকে ৩ ম্যাচ শেষে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ২ নম্বরে অবস্থান বাংলাদেশের। এ গ্রুপ থেকে সুপার এইট নিশ্চিত করে ফেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় দল হিসেবে সে পথেই আছে বাংলাদেশ।
তবে চূড়ান্তভাবে সুপার এইট নিশ্চিত করতে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচেও নেপালকে হারাতে হবে বাংলাদেশকে। যেই ম্যাচটি মাঠে গড়াবে আগামী ১৭ জুন ঈদের দিন। বাংলাদেশ দল নিশ্চয় ঈদের দিনে দারুণ জয় তুলে বাংলাদেশি সমর্থকদের খুশিটাকে বাড়িয়েই দিতে চাইবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)