নড়াইলে পৌরবাসীর বিশুদ্ধ পানির সংকট দীর্ঘদিন ধরে
নড়াইলে পৌরবাসীর বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েই গেছে শোধনাগারটি অকার্যকর দীর্ঘদিন ধরে। ৫ বছর ধরে অকেজো নড়াইলের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণের পর মাত্র তিন মাস নড়াইলের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টটি ঠিকঠাক ভাবেই চলছিল। তবে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা প্লান্টটি তৎকালীন মেয়র জেড়াতালি দিয়ে কিছুদিন চালালেও নানাবিধ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বর্তমান মেয়র পুণরায় আর চালু করতে সক্ষম হননি। এরপর যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে গত ৫ বছর ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে প্লান্টটি। এতে পৌরবাসীর বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েই গেছে।
এ নিয়ে গত পাঁচ বছরে একাধিকবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হলেও কোনো সুফল মেলেনি। পৌর কর্তৃপক্ষের বলছে, বার বার চেষ্টা করেও নানা যান্ত্রিক সমস্যার কারণে এটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নড়াইলবাসীর বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে শহরের গোহাটখোলায় এলাকায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০১৪ সালে ৩৫০ ঘনমিটার পানি শোধন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এর কাজ শুরু করে। ১০ কোটি টাকা দিয়ে নির্মিত এই মেগা প্রকল্পটি ২০১৯ সালে পরিচালনার জন্য পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করা হয়। প্রায় সাত বছর ধরে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবার পরে নড়াইলবাসী বিশুদ্ধ পানি পেতে শুরু করেছিল। কিন্তু মাত্র ৩ মাস যেতে না যেতেই নানা যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্লান্টটি বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমান মেয়র দায়িত্ব পেয়ে সেই সমস্ত সমস্যার সমাধান করে পুণরায় চালু করলেও একের পর এক যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। আবারও বন্ধ হয়ে যায় ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টটি।
পৌরবাসীদের সঙ্গে কথা হলে অনেকেই জানান, পৌর এলাকার দুই লক্ষাধিক জনগোষ্ঠীর বিশুদ্ধ পানির সমস্যা সমাধানে এই প্লান্টটি নির্মাণ করা হয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, এটির মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি পাবে পৌরবাসী। কিন্তু বাস্তবে এটি কোনো কাজে আসছে না। আমরা বিশুদ্ধ পানি পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। পুনরায় চালু করা গেলে বিশুদ্ধ পানির সংকট কমবে বলেও জানান তারা।
পৌরসভা এলাকার বাসিন্দা বলেন, নড়াইলে পানি শোধনাগারটি অকার্যকর হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। কার্যকারী ব্যবস্থা নিয়ে নড়াইলবাসীর পানির কষ্ট দূর করার আবেদন করছি।
আরেক বাসিন্দা বলেন, পৌরসভা থেকে বর্তমান যে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে, তা খাওয়ার উপযোগী নয়। এতে প্রচুর পরিমাণে ময়লা থাকে। প্রতিমাসে পৌরসভার ৩০০ টাকা পানির বিল দিয়েও আমার মাসে আরও ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার পানি কিনে খেতে হচ্ছে। বিকাশ নামের আরও একজন বলেন, আমাদের এখানে বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে। সাপ্লাই থেকে যে পানি আমরা পাই, তা পানযোগ্য নয়। ওই পানি পান করলে অসুস্থ হয়ে পড়তে হয়। আমি নিজে অসুস্থ হয়ে সপ্তাহ খানেক হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। পানিতে বিশ্রি গন্ধ। এছাড়া গোসলের সময় মাথায় ঢাললে চুল পড়ে যায়।
এ ব্যাপারে নড়াইল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী এমএম আবু সালেহ বলেন, পানি শোধনাগারটি তৈরি করে চালু অবস্থায় আমরা পৌরসভার নিকট হস্তান্তর করেছি তখন এটা চলছিল। চালু রাখার জন্য নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। তারা (পৌরসভা) নিয়মিত রিপেয়ার করছে না বলেই হয়ত এটা চলছে না।
এ ব্যাপারে নড়াইল পৌরসভার বর্তমান মেয়র আঞ্জুমান আরা বলেন, পানি শোধনাগারটি আমার আগের মেয়রের আমলে করা। তখন তিন মাস ভালো সার্ভিস দেওয়ার পর সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। আমি আসার পর চেষ্টা করি এটাকে চালু করার। কিন্তু চালু করার অল্প কয়েকদিন পর আবার বন্ধ হয়ে যায়। আমি যকটুকু বুঝেছি, ওটা রিপেয়ার করলেও আর চলবে না। আমি জনস্বাস্থ্যের প্রধানের কাছে বিনীত অনুরোধ রাখতে চাই, এটা যদি কিছু করা যায় তাহলে করুন, না হলে নতুন করে পানি শোধনাগার নির্মাণ করা হোক।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)