নড়াইলে করোনার টিকার রেজিস্ট্রেশনের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ী পুরুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে টিকা প্রদানের রেজিস্ট্রেশন এবং টিকা কেন্দ্রে যাতায়াত খরচ বাবদ মাথাপিছু ১০০ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানাগেছে, জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত কালিয়া উপজেলার ৯ হাজার ৩ শত ৫২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে। এতে প্রথম পর্যায়ে ৬ জানুয়ারি ৬ষ্ঠ থেকে এসএসসি-২০২১ পরীক্ষার্থীদের নড়াইল নার্সিং ইনস্টিটিউট টিকা কেন্দ্রে উপজেলার চাঁচুড়ী পুরুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর টিকা নেওয়ার নির্ধারিত তারিখ ছিল। এজন্য ৫ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী সকল শিক্ষার্থীকে তাদের জন্মনিবন্ধনের দুই কপি ফটোকপিসহ ১০০ টাকা করে নিয়ে বিদ্যালয়ে হাজির হওয়ার জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ প্রদান করেন।
এরপর ওইসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাদ পড়াদের ১২ জানুয়ারি তারিখে টিকা প্রদান করা হয়। এজন্য ১১ জানুয়ারি তাদের নিকট থেকেও প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম জন্মনিবন্ধনের দুই কপি ফটোকপিসহ ১০০ টাকা করে রেজিস্ট্রেশন ও যাতায়াত খরচ বাবদ নেন। চাঁচুড়ী গ্রামের শিক্ষার্থী সাজিদ মোল্যা, রকিবুল ইসলাম রাতুল, খাদিজা, চাপুলিয়া গ্রামের শিক্ষার্থী লামিয়া, মিতুন জিরা,ববিতা সাদিকুর নাহার তমা ও মারিয়াসহ একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, ৫ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম বিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ১০০ টাকা নিয়ে বিদ্যালয়ে হাজির হতে বলেন। করোনা টিকার রেজিস্ট্রেশনের জন্য এবং টিকাকেন্দ্রে যেতে যাতায়াত খরচ বাবদ ওই টাকা লাগবে বলে জানানো হয়। প্রধান শিক্ষকের নির্দেশনা অনুযায়ী সব শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রেশনের জন্য নির্ধারিত তারিখে টাকাসহ লাইনে দাঁড়ানোর পর শিক্ষকরা টাকা নেয়।
ওই বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনেকের নিকট থেকে করোনার টিকার রেজিস্ট্রেশনের নামে ১০০ টাকা করে আদায় করেছেন। ঘটনা আঁচ করতে পেরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম ১০০ টাকা করে শিক্ষার্থীর জন্য যাতায়াত খরচ বলে চালিয়ে দেন। অথচ শিক্ষার্থীদেরকে জেল খানার কয়েদিদের মতো গাদাগাদি করে নিন্মমানের বাস ভাড়া করে টিকাকেন্দ্রে নিয়ে যান। এতে নামমাত্র টাকা ব্যয় করে বাকি টাকা তিনি আতœসাত করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে চাঁচুড়ী পুরুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম ১০০ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার যাতায়াতের জন্য খরচ করে যে টাকা অবশিষ্ট থাকবে সেটা দ্বিতীয় ডোজের সময় খরচ করা হবে। টাকা নেওয়ার নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে এড়িয়ে যেয়ে বলেন, আমি কোন অন্যায় করিনি বলেও দাবি করেন প্রধান শিক্ষক। কালিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শাহাজান মিয়া বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যাবস্থাপনা কমিটি শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। ‘টিকা রেজিস্ট্রেশন বা টিকা নেওয়ার জন্য যাতায়াত ভাড়া কিংবা ভিন্ন নামে টাকা আদায়ের নিয়ম নেই। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.আরিফুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ‘টিকা রেজিস্ট্রেশন বা টিকা নেওয়ার জন্য যাতায়াত ভাড়া কিংবা ভিন্ন নামে টাকা আদায়ের নিয়ম নাই। আপনারা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শাহাজান মিয়্ােক জানান। লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও জানান তিনি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)