পাকিস্তান তলাবিহীন ঝুড়ি, বাংলাদেশ এশিয়ার বাঘ: হর্ষ বর্ধন শ্রীংলা
১৯৭১ সালে গোটা বিশ্ব বলতো পাকিস্তান পাওয়ারহাউজ, বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি। অথচ আজ ৫০ বছর পর পাকিস্তান তলাবিহীন ঝুড়ি এবং বাংলাদেশ এশিয়ান টাইগার (এশিয়ান টাইগার)।
জি২০ সমন্বয়ক এবং ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রীংলা এ মন্তব্য করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত স্যামুয়েল রিচার্ডের লেখা ‘বাংলাদেশ: ফ্রম বাস্কেট কেস টু এশিয়ান টাইগার’ বইয়ের উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বইটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জিত উল্লেখযোগ্য সাফল্য ও উন্নয়ন অগ্রগতি তুলে ধরা হয়েছে।
উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্ট হিসেবে অংশ নিয়ে শ্রিংলা বলেন, ভারত সবসময় একটি শক্তিশালী, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ায়।
বাংলাদেশের উন্নতির চিত্র তুলে ধরে শ্রীংলা বলেন, পরিসংখ্যানই বাংলাদেশের গল্প বলছে। বাংলাদেশের মাথাপিছু মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি স্বাধীনতার সময় ছিল ১২৮ মার্কিন ডলার। দীর্ঘদিনের অস্থিরতা ও সামরিক শাসনের পর ২০০৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫০৩ মার্কিন ডলার। আর বর্তমানে এটি ২৪৫২ মার্কিন ডলার। চরম দারিদ্রতা দ্রুত হ্রাস পেয়েছে। ১৯৭১ সালের ৮ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনীতি এখন ৪১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চেয়ে বড়। দেশটির সামনে রয়েছে মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার মর্যাদা।
বাংলাদেশের এই উত্থানের পেছনের কারণ হিসেবে তিনি ২০০৬ সালের পর অস্থিরতার অবসান, ২০০৯ সাল থেকে শুরু হওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শক্তহাতে শাসন এবং এর ফলে অর্থনৈতিক বাড়বাড়ন্তকে চিহ্নিত করেছেন। এ সময় বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক সূচকগুলোও মজবুত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
শ্রীংলা মনে করেন, বাংলাদেশের এমন উত্থানে ভারতও লাভবান হয়েছে। তিনি বলেন, ঢাকা একটি শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্য অংশীদার। একটি শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ভারতের জন্যও সুবিধাজনক। দুই দেশ বিদ্যুৎ এবং অবকাঠামোর মতো খাতে এক সঙ্গে কাজ করছে। কলকাতা থেকে ঢাকা হয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের আগরতলা পর্যন্ত একটি সম্ভাব্য রেলসংযোগ দুই দেশের জন্যই মঙ্গলজনক। বাংলাদেশ ভুটানের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে পারে এবং একটি সঞ্চালন লাইন গোটা অঞ্চল লাভবান হবে। এছাড়া নতুন সড়ক এবং রেল সংযোগ দুই দেশের জন্য লাভজনক।
আলোচনায় যোগ দিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলির (আরআইএস) গবেষণা ও তথ্য ব্যবস্থার অধ্যাপক প্রবীর দে দুই দেশের যোগাযোগকে মজবুত সম্পর্কের অন্যতম প্রধান উপাদান হিসেবে অভিহিত করেন।
আরেক প্যানেলিস্ট ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট রোহতকের পরিচালক অধ্যাপক ধীরজ শর্মা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়ন সাফল্যের পেছনে প্রধান অনুঘটক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বকে উল্লেখ করেন।
সমাপনী বক্তব্যে নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ কখনও তলাবিহীন ঝুড়ি ছিল না। এটি সে সময় মার্কিন সরকারের একটি ভুল ধারণা। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের দারিদ্রের হার কমছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ শতভাগ স্বাক্ষরতা অর্জন করবে এবং একটি স্মার্ট সোসাইটে গড়ে উঠবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)