প্রতি ১০ জনে মাত্র ১ জন পাবে করোনার টিকা!


প্রয়োজনের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি কোভিড নাইনটিন ভ্যাকসিন কিনতে যাচ্ছে উন্নত দেশগুলো। মজুদের বিষয়ে স্বার্থান্বেষী আচরণ করছে অনেক দেশ। ভ্যাকসিন পুরোপুরি সরবরাহ শুরুর আগেই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে নিম্ন ও মধ্যআয়ের দেশের মানুষের টিকা পাওয়ার বিষয়টি।
এখনো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পায়নি সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশে অনুমোদন পাওয়া ফাইজার বায়োএনটেক ও মডার্নার ভ্যাকসিন। পুরোপুরি প্রস্তুতের আগেই চলছে আগাম অর্ডার দেয়ার প্রতিযোগিতা।
কে কার আগে ভ্যাকসিন মজুদ করবে এই অসুস্থ প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে অনুন্নত, মধ্য ও নিম্ন আয়ের দেশগুলো। তাদের করোনার টিকা পাওয়ার বিষয়টি ক্রমশ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম এনবিসি-র প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।
প্রতিবেদন বলছে, প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত ভ্যাকসিনের অর্ডার দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রিটেন আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এদিকে, পিপলস ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের তথ্য বলছে, সারাবিশ্বে ধনী মানুষ মাত্র ১৪ শতাংশ, অথচ অর্ধেকের বেশি ভ্যাকসিন চলে যাবে তাদের নাগালে।
অনেক দেশ জনসাধারণকে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা করলেও উন্নত অনেক দেশই প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি ভ্যাকসিন কিনে মজুদ করার পরিকল্পনা করছে। অসম ও বৈষম্যমূলক পরিকল্পনায় সারাবিশ্বে ব্যাহত হতে পারে ভ্যাকসিনের সুষ্ঠু সরবরাহ এবং সুবিধাবঞ্চিতদের নাগালে টিকা পৌঁছে দেয়ার বিষয়টি।
জাতিসংঘের এইডস নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক উইনি বিয়ানিমা সমালোচনা করে বলেন, কোভিড নাইনটিন প্রতিরোধে মর্ডানার ভ্যাকসিনের পুরোটা ও ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন ৯৬ শতাংশ উন্নত দেশগুলোতে চলে যাবে। কারণ শুধু কানাডাই প্রয়োজনের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি ভ্যাকসিন মজুদের পরিকল্পনা করছে, যেটা দিয়ে দেশের মোট জনসংখ্যাকে ৫ বার ভ্যাকসিন দেয়া যাবে। অন্যদিকে, নিম্ন ও মধ্যআয়ের ৬৭ টি দেশে প্রতি ১০ জনের ১ জন ভ্যাকসিন পেতে পারে, তাও আগামী বছরের শেষ দিকে। এরমধ্যে আছে মিয়ানমার, কেনিয়া ও নাইজেরিয়া।
আফ্রিকার রোগ নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক জন নেগাসং বলেন, আফ্রিকা থেকে অনেক দূরে করোনার টিকা। কারণ এর আগেও প্রায় সব টিকা নিয়েই উন্নত দেশ বঞ্চিত করেছে আফ্রিকাকে। যেখানে করোনা মহামারি আকারে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে গেছে, এই মুহূর্তে পারস্পারিক সহযোগিতার পরিবর্তে টিকা নিয়ে স্বার্থান্বেষী আচরণ শুরু করেছে উন্নত দেশগুলো।
এর আগে সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের মহাপরিচালক টেড্রোস গ্যাব্রেয়াসুস বলেন, কোভিড নাইনটিন মহামারি দ্রুত প্রতিরোধ আর সারাবিশ্বের আর্থিক স্থিতিশীলতা নির্ভর করছে বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিনের সরবরাহের ওপর। ভ্যাকসিন সরবরাহকারীরা সুবিধাবঞ্চিত, অনুন্নত, ঝুঁকিপূর্ণ আর অধিক সংক্রমিত এলাকার মানুষকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। কিন্তু উন্নত অনেক দেশ ঠিক তার বিপরীত কাজ করছে, ভ্যাকসিনের অসম মজুদ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে, ঝুঁকিতে পড়ছে করোনা প্রতিরোধ করার পরিকল্পনা।
এদিকে, ভ্যাকসিন গবেষণা আর তৈরিতে কয়েক ধাপ এগিয়ে থাকা চীন ভ্যাকসিন তৈরি এবং সুষ্ঠু সরবরাহে কাজ করছে। ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, মিশরসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ভ্যাকসিন সুষ্ঠুভাবে সরবরাহের চেষ্ট চালাচ্ছে দেশটি।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
