বিশ্ব বাবা দিবস, যেভাবে প্রচলন ও উদযাপন শুরু
আজ বিশ্ব বাবা দিবস, জানার চেষ্টা করবো যেভাবে প্রচলন ও উদযাপন শুরু।
‘কাটে না সময় যখন আর কিছুতে/ বন্ধুর টেলিফোনে মন বসে না/ জানালার গ্রিলটাতে ঠেকাই মাথা/ মনে হয় বাবার মতো কেউ বলে না/ আয় খুকু আয়, আয় খুকু আয়…’।
হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও শ্রাবন্তী মজুমদারের গাওয়া এই গান সন্তানদের মনে বাবার অভাব মনে করিয়ে দেয়, যিনি আমাদের জীবনে বটবৃক্ষের বিশাল ছায়া হয়ে বিরাজ করেন।
জুন মাসের তৃতীয় রবিবার, বিশ্ব বাবা দিবস। বিশ্বের অনেক দেশে আজ পালন করা হচ্ছে দিবসটি।
এ দিনটিতে বাবাদের নানাভাবে শুভেচ্ছা জানানো বা স্মরণ করা হয়। ফেসবুকের অনেক ব্যবহারকারী তাদের বাবাকে নিয়ে মন্তব্য করছেন, ছবি শেয়ার করেছেন।
কিন্তু কীভাবে বাবা দিবসটির প্রচলন হলো?
মা দিবস কয়েকশো বছর ধরে পালন করা হচ্ছে, কিন্তু সেই তুলনায় বাবা দিবসটি অনেক নতুন। দিবসটি সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম চালু হয় এবং এর শুরু নিয়ে বেশ কয়েকটি গল্প আছে।
সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সম্ভবত গ্রহণযোগ্য গল্পটি হলো, ওয়াশিংটনের সোনোরা লুইস স্মার্ট নামের একজন নারী এই দিন উদযাপন শুরু করেন। ষষ্ঠ সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে তার মা মারা গেলে তার বাবা পরিবারটিকে বড় করে তোলেন। ১৯০৯ সালে সোনোরা গির্জার একটি বক্তব্যে মা দিবসের কথা জানতে পারেন। তখন তার মনে হলো, বাবার জন্যও এরকম একটি দিবস থাকা উচিত।
স্থানীয় বেশ কয়েকজন ধর্মযাজক তার এই আইডিয়াটি গ্রহণ করেন। ধারণা করা হয়, ১৯১০ সালের ১৯ জুন প্রথমবারের মতো বাবা দিবসটি পালন করা হয়, যদিও তা আনুষ্ঠানিক ছিল না।
১৯৬৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি. জনসন সিদ্ধান্ত নেন যে, প্রতি বছর জুনের তৃতীয় রবিবার বাবা দিবস হিসাবে পালন করা হবে। ছয় বছর পর প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন এটিকে আইনে পরিণত করেন।
বিশ্বজুড়ে কীভাবে দিবসটি পালন করা হয়?
থাইল্যান্ড
থাইল্যান্ডে বাবা দিবস পালন করা হয় সদ্য প্রয়াত রাজা ভূমিবল আদুলিয়াদেজের জন্মদিনে, ৫ ডিসেম্বর বাবা দিবস পালন করা হয়, যাকে দেশটির জনক বলে মনে করা হয়।
এদিন হলুদ রঙের কাপড় পরা সেখানকার প্রথা।
মেক্সিকো
মেক্সিকোয় বাবা দিবস বা ডিয়া ডেল পেড্রো উদযাপিত হয় জুন মাসের তৃতীয় রবিবার। এদিন মেক্সিকো সিটিতে তের মাইল লম্বা একটি দৌড় প্রতিযোগিতা হয়, যাকে বলা হয় ক্যানেরা ডিয়া ডেল পেড্রো। বাবাদের সঙ্গে সঙ্গে ওই দৌড়ে অংশ নেন সন্তানরাও।
জার্মানি
জার্মানিতে এই দিনে সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটানোর বদলে বাবারা বরং একেকটি গ্রুপ হয়ে হাইকিং করতে যান। কখনো কখনো মদ বা খাবার ভর্তি টেনে তোলার মতো খেলা করেন।
নেপাল
নেপালে সন্তানরা এই দিনে তাদের পিতামাতাকে মিষ্টি কিনে দেন। কখনো কখনো সন্তানরা তাদের বাবার কাছ থেকে আশীর্বাদ নেন।
যাদের বাবা মারা গেছেন, তারা সেই সমাধিস্থানে গিয়ে বাবাকে স্মরণ করেন।
ফ্রান্স
ফ্রান্সে বাবা দিবসটি ঐতিহ্যগতভাবে একটি ক্যাথলিক উৎসব। তবে উনিশ শতকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে এটির পুনঃপ্রচলন ঘটানো হয়। এখন এই দিনে সবরকম উপহার দেয়া হয়ে থাকে, যার মধ্যে রয়েছে গোলাপ ফুলও।
ফ্রান্সের প্রথা হলো এটা যে, বাবা জীবিত থাকলে তাকে লাল গোলাপ দেওয়া হবে। কিন্তু বাবা যদি মারা গিয়ে থাকেন, তাহলে তার সমাধিতে সাদা গোলাপ রেখে আসা।
তথ্যসূত্র সংগৃহীত।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)