সৌদি থেকে শ্রমিক ফেরার দায় রিক্রুটিং এজেন্সির: প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী
সৌদি আরব থেকে প্রতিদিন শূন্য হাতেই দেশে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন অসংখ্য কর্মী। এর দায় রিক্রুটিং এজেন্সির বলে মনে করেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ।
সৌদি থেকে প্রতিদিনই দেশে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন অসংখ্য শ্রমিক। সব জেনেই নানা প্রলোভনে চাকরি পরিবর্তন করায় কর্মীরা এ সুযোগ হারাচ্ছেন বলে দাবি রিক্রুটিং এজেন্সি নেতাদের। আর অভিবাসন বিশেষজ্ঞ ও রামরুর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, সাব এজেন্ট ও মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণেই চাকরি হারাচ্ছেন কর্মীরা।
এদিকে ভুক্তভোগী কর্মীদের অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী।
সচেতনতার অভাবে কর্মীদের অবৈধ হয়ে পড়া ঠেকানোর পাশাপাশি, ফিরে আসা কর্মীদের তথ্য সংরক্ষণে শিগগিরই কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ারও আশ্বাস দেন।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, শ্রমিকরা এক চাকরিতে গেল কিন্তু ওই কাজ তারা পেল না। আমার যেটা মনে হয়, এক্ষেত্রে এটা রিক্রুটিং এজেন্সির রেসপন্সেবলিটি। তদন্ত প্রসেস যদি করতে হয়, তা হলে আমাকে একটা ট্রাইব্যুনাল বসাতে হবে। ট্রাইব্যুনাল বসিয়ে বলব আপনারা দরখাস্ত দেন, কিন্তু এটার ফলাফল করতে হবে কিন্তু রিক্রুটিং এজেন্সি মধ্য দিয়েই।
অর্থনৈতিক সচ্ছলতা আর সবাইকে নিয়ে একটু ভালো থাকার আশায় সর্বস্ব বিক্রি করে সাব্বির ও আলীর মতো এমন হাজারো বাংলাদেশি পাড়ি জমান সৌদি আরবে। বেতন বোনাসসহ নানা সুবিধা নিয়ে গেলেও চাকরিস্থল পরিবর্তন করায় ধরপাকড়ের শিকার হয়ে খালি হাতে এক কাপড়ে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন তারা।
বাংলাদেশ হযরত শাহ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের তথ্য অনুসারে, প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ কর্মী ফিরছেন সৌদি থেকে। আর গতবছর সৌদি ফেরত এ সংখ্যা ছিল প্রায় ৭০ হাজার।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিসংখ্যানের মতে, দেশের সবচেয়ে বড় এ শ্রমবাজারটিতে এ পর্যন্ত গিয়েছেন ৫৪ লাখ ৩ হাজার বাংলাদেশি। তবে বর্তমানে অবস্থান করছেন প্রায় ৩০ লাখ বাংলাদেশি। কিন্তু নানা প্রতারণার শিকার হয়ে দেশে ফেরা এসব কর্মীর কোনো তথ্য নেই সরকার কিংবা সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর কাছে।
তবে এজেন্সি নেতার দাবি, সব জেনেশেুনেই দেশটিতে গিয়ে প্রলোভনে পড়ে চাকরি পরিবর্তন করায় কর্মীরা বিপদের মুখে পড়ছেন।
বায়রার মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, অনেকের আত্মীয়স্বজন সেখানে আছেন; তারা বুদ্ধি দেয় তুমি চলে আসো, এখানে আসলে বেশি টাকা বেতনের চাকরি পাবে। তাদের বোঝানো হচ্ছে সেখানে তুমি ৮০০ রিয়াল বেতন পাও এখানে আসলে ১৫০০ রিয়ালের চাকরি দিয়ে দেব। আমরা যাকে যে কাজে পাঠানো হয়েছে, তার যদি ব্যতয় ঘটে কিংবা সেই কারণে সে ফেরত আসে তার দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে।
আর অভিবাসন বিশেষজ্ঞ ও রামরুর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তাসনিম সিদ্দিকী জানান, সংশ্লিষ্ট দেশে এজেন্সিগুলোর সাব এজেন্ট এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের নানা তৎপরতার শিকার হয়েই চাকরি হারাচ্ছেন কর্মীরা।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিকরা বিদেশে যাওয়ার পরে তাদের কাজের সম্মতিপত্র বদল করে আরেকটি নতুন সম্মতিপত্রে সই করানো হয়। আর সেই অনুসারে বেতন দেয়া হয়। অনেক সময় সেই বেতনও দেয়া হয় না। ওই দেশে যারা সাব এজেন্টের মতো রয়েছেন তারা এ অন্যায় ভিসাগুলো পাঠাচ্ছেন। যেখানে এ অন্যায় কারণগুলো হচ্ছে তাদের দায়বদ্ধতার আওতায় আনা, শাস্তির আওতায় আনারও প্রয়োজন আছে।
সূত্র: সময় সংবাদ
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)