করোনা : কলারোয়ায় টিকা রেজিস্ট্রেশন কার্ড প্রিন্ট খরচ দেবে কে?
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় করোনা ভাইরাস প্রতিষেধক টিকার রেজিস্ট্রেশন কার্ড প্রিন্ট করার টাকা আদায় নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে। সেবা গ্রহিতারা বলছেন রেজিস্ট্রেশন কার্ড প্রিন্ট করে দেয়ার নামে ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে। আর রেজিস্ট্রেশন কার্ড বের করার কাজে থাকা ব্যক্তিরা বলছেন প্রিন্ট ও কাগজ খরচের জন্য সামান্য টাকা নেয়া হচ্ছে।’
জানা গেছে, ওয়ার্ড পর্যায়ে করোনা ভাইরাস প্রতিষেধক টিকা দেয়ার লক্ষ্যে গত সপ্তাহে এ সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জানানো হয় যে, সরকার প্রদত্ত অনলাইন রেজিস্ট্রেশন সম্পন্নের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকে ফ্রি রেজিস্ট্রশন করে দেয়া হবে। সেই অনুযায়ী তারিখ নির্ধারণ করে টিকা দেয়া হবে। গত ৭ আগস্ট প্রথম পর্যায়ে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ৩টি ওয়ার্ডে ৬’শ জন করে ২৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষদের সুষ্ঠুভাবে টিকা দেয়া সম্পন্ন হয়।
কিন্তু অভিযোগ উঠেছে- সেই রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন ও কার্ড প্রিন্ট করা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন ব্যক্তি মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করছেন।
উপজেলার সোনার বাংলা কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী আল আমিন জানান, ‘উত্তর ভাদিয়ালী গ্রামের চৌকিদার আল-আমিন গত রবিবার রেজিস্ট্রেশন শেষ তারিখ এবং তার পিতা-মাতার নাম রেজিস্ট্রেশন না হলে টিকা পাবে না বলে জানিয়ে চৌকিদার তার নিজের মোবাইল থেকে এসএমএস পাঠিয়ে স্থানীয় কম্পিউটারের দোকান থেকে ৬০ টাকা পরিশোধ করে টিকার কার্ড সংগ্রহ করতে বলেন। তারাও সেটা করেন।’
উপজেলার সোনবাড়িয়া এলাকার মনিরুল, আরিফ, মিজানুরসহ কয়েকজন জানান, ‘চৌকিদার আল-আমিন প্রথম দিন তার কাছে আইডি কার্ড জমা দিতে বলেন। কিন্তু পরদিন রবিবার চৌকিদার আল-আমিন ফুলতলা মোড়ের কম্পিউটারের দোকানে মাথা পিছু ৩০ টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন কার্ড নিতে বলেন।’
এ ব্যাপারে চৌকিদার আল আমিন জানান, ‘তার কাছে প্রিন্টার মেশিন নেই। দোকানদারকে রেজিস্ট্রেশন কার্ড প্রিন্ট করতে টাকা দিতে হচ্ছে বলে তাদের কাছ থেকেও টাকা নেয়া হয়েছে।’
এ ব্যাপারে সোনাবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান এসএম মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকে ফ্রি রেজিস্ট্রেশন করে দেয়া হচ্ছে। চৌকিদার টাকা নিয়ে অন্য দোকান থেকে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দিচ্ছে এমন বিষয়টি আমার জানা নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘ফ্রি রেজিস্ট্রেশন রেখে মানুষ অন্যত্র টাকা দেবে কেন? আর ২/১জন যদি আলাদাভাবে অন্যত্র থেকে রেজিস্ট্রশন করে নেন তবে সেটা তো তাদের ব্যাপার।’
এদিকে কেড়াগাছি ইউনিয়নের টিকাদানের ফ্রি রেজিস্ট্রেশন কাজ চলছে বোয়ালিয়া মুক্তিযোদ্ধা ডিগ্রি কলেজে। আর পাশে ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা আসাদ রেজিস্ট্রেশন কার্ড প্রিন্ট নিতে মাথাপিছু ১০ টাকা আদায় করছেন।
উদ্যোক্তা আসাদ জানান, ‘কাগজ ও প্রিন্ট খরচ বাবদ এ টাকা নিতে হচ্ছে।’
এছাড়া উপজেলার জয়নগর, সোনাবাড়িয়া, কুশোডাঙ্গা সহ উপজেলার অধিকাংশ তথ্যসেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তারা কয়েকজনের কাছ থেকে ১০ টাকা থেকে ২০ হারে রেজিস্ট্রেশন খরচ নিচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার জিয়াউর রহমান বলেন, ‘ওয়ার্ড পর্যায়ে করোনা ভাইরাস প্রতিষেধক টিকা দেয়ার লক্ষ্যে গত সপ্তাহে এ সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সভায় ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকে ফ্রি রেজিস্ট্রেশন করে দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেখানে টাকা নেয়ার কোন সুযোগ নেই। বাইরের দোকান থেকে যদি কেউ স্বউদ্যোগে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে নেন তবে সেটা তাদের ব্যাপার। সরকার সাধারণ জনগণকে করোনা ভাইরাস প্রতিষেধক টিকা ফ্রি দিচ্ছে, তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকে রেজিস্ট্রেশনও ফ্রি করা হচ্ছে।’
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)